‘আমরা কি তাহলে চলে যাব?’

ছবি: সংগৃহীত

'অসংখ্য মানুষ গ্রামের চারপাশ দিয়ে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। তাদের হাতে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র ছিল। কাউকে চিনতে পারিনি। আমার বাড়ির সব জিনিস লুট হয়ে গেছে। দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন কীভাবে থাকব? আমরা কি তাহলে চলে যাব?'

লুট হওয়া বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আজ সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে কথাগুলো বলেন রংপুরের পীরগঞ্জের জেলে পল্লীর মাছ ব্যবসায়ী জগদীশ চন্দ্র দাস।

তিনি বলেন, 'গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকেই এলাকায় হামলার আশঙ্কায় ছিলাম। পরে রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার দিকে হামলা শুরু হয়। একদিন আগে নতুন একটা ফ্রিজ কিনেছিলাম। আর সব জিনিসের সঙ্গে সেটিও পুড়ে গেছে।'

একই অবস্থার কথা জানান ওই গ্রামের ননী গোপালও। তার বাড়ির সব লুট হয়ে গেছে। বাড়িটিও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছুই বাঁচাতে পারেননি তিনি।

ফাইল ফটো সংগৃহীত

জেলে পল্লীর আরেক বাসিন্দা পূর্ণিমা দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বাড়ি লুট করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোকানেও আগুন দিয়েছে তারা। পরিস্থিতি খারাপ দেখে পাশের ধান খেতে লুকিয়ে ছিলাম ভয়ে। ঘণ্টা খানেক ছিলাম সেখানে। পরে পরিস্থিতি ঠিক হলে ফিরে আসি।'

সুদর্শন দাস বলেন, 'আমাদের গালাগালি করা হচ্ছিল। তারা বলছিল, আমাদের এ দেশে থাকতে দেওয়া হবে না।'

হামলাকারীদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে ছিল বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা সুবর্ণ দাস।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে স্থানীয় যুবক পরিতোষ চন্দ্র দাসের (১৮) একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে। ওই পোস্টের সূত্র ধরেই জেলে পল্লীতে হামলা চালানো হয়।

ভয়ে পরিতোষদের পরিবারের সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের বাড়ি লুট করা হয়েছে। পাশের ধানের গোলায় আগুন দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাত থেকে এলাকার সবাই না খেয়ে ছিলেন। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। লাইন পুড়ে যাওয়ায় এলাকায় বিদ্যুৎ নেই।

গতকাল রাত ১০টার দিকে পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, বটতলা ও হাতীবান্ধা গ্রামে বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

একটি সরকারি সংস্থার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় মোট ৬৬টি পরিবার আক্রান্ত হয়েছে। ৭টি টিনের বাড়ি, ৯টি ইটের তৈরি বাড়ি, ৪টি মাটির ঘর, ২টি দোকানসহ প্রায় ২৫টি বাড়ি ও দোকান আগুনে পুড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

5h ago