সময় কমবে না, আরও ১৮ সেকেন্ড বেশি লাগবে ই-গেট ইমিগ্রেশনে

ই-গেট। ফাইল ছবি

ঘোষণা ছিল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেটের মাধ্যমে ১৮ সেকেন্ডে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে। বাস্তবে ই-গেট শুধু স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাসপোর্ট ও যাত্রীকে শনাক্ত করতে পারছে। তারপর আগের মতোই ইমিগ্রেশন ডেস্কে যাত্রীর ভিসা ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। অর্থাৎ আগে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় যে সময় লাগত, এখন তার চেয়ে ১৮ সেকেন্ড বেশি লাগবে।

শাহজালালের ইমিগ্রেশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

গত বছরের জুনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ই-গেট উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের প্রায় এক বছর পর গত মঙ্গলবার সেগুলো চালু হয়।

সূত্র জানায়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেট স্থাপনের মাধ্যমে ই-পাসপোর্টধারীদের দ্রুত ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ই-গেটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাত্রীর ভিসা পরীক্ষা করা যায় না।

এতে ই-গেটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাসপোর্ট ও যাত্রীকে শনাক্ত করা হলেও, ভিসা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে ম্যানুয়ালি অর্থাৎ আগের মতোই।

আজ বৃহস্পতিবার পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ইমিগ্রেশন) জি এম আজিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভিসা পরীক্ষার সক্ষমতা ই-গেটের নেই। ই-গেট শুধু পাসপোর্ট ও পাসপোর্টধারী যাত্রী একই ব্যক্তি কি না, তা শনাক্ত করবে।'

ই-গেটে ভিসা পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, 'ভিসা জাল হতে পারে বা ফ্রডুলেন্ট থাকতে পারে। তা পরীক্ষার সক্ষমতা নেই ই-গেটের। এছাড়াও যাত্রী কোথায় যাবে, কোন উড়োজাহাজে ভ্রমণ করবে, ই-গেটে সেই তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই।'

কিন্তু ইমিগ্রেশন পুলিশ বলছে, শুধু ই-গেট পার হলেই যাত্রীর ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে না। ই-গেট পার হওয়ার পর যাত্রীকে আগের মতোই ইমিগ্রেশন ডেস্কে ভিসা ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করা হবে।

ই-গেটের কাজ সম্পর্কে ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, 'ই-গেট প্রথমে যাত্রীর পাসপোর্ট পরীক্ষা করে। পাসপোর্ট ঠিক থাকলে প্রথম ব্যারিয়ার খুলে যাবে। এগিয়ে পরের গেটে গেলে সেখানে ক্যামেরায় পাসপোর্টধারীর মুখ ও চোখ স্ক্যান করা হবে।'

'পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে ও যাত্রীর চেহারা মিলে গেলে পরের ব্যারিয়ার খুলে যাবে। ছবি না মিললে বা পাসপোর্ট ভুয়া হলে কিংবা বিদেশ ভ্রমণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ব্যারিয়ার খুলবে না,' বলেন তিনি।

তিনি বলেন, 'পাসপোর্ট ও যাত্রী শনাক্তের বিষয়টি আগে ইমিগ্রেশন পুলিশ ম্যানুয়ালি করত। কিন্তু পুরো ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হলে যাত্রীর ভিসাসহ অন্য তথ্যও যাচাই করতে হয়। সেগুলো যাচাই করতে যাত্রীকে ইমিগ্রেশন ডেস্কে যেতে হবে। সেখানে ভিসা পরীক্ষা করা হবে।'

অতিরিক্ত ডিআইজি আজিজুর রহমান বলেন, 'ইমিগ্রেশন পুলিশের যন্ত্র দিয়ে ম্যানুয়ালি পাসপোর্ট যাচাই করা যায়। তবে পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে যাত্রীর চেহারা মেলাতে সমস্যা হতো। তবে যাত্রীর বড় কোনো শারীরিক পরিবর্তন না হলে শনাক্ত করা কঠিন কিছু নয়। তবে ই-গেটের ক্ষেত্রে এসব নিয়ে আর অনিশ্চয়তা থাকবে না।'

'কেউ যেন ভুয়া ভিসা, ডকুমেন্ট দিয়ে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য সর্তক থাকতে হয়। যেসব দেশে যেতে ভিসা লাগে না, কিংবা ভিসা পাওয়া সহজ সেসব দেশের ক্ষেত্রে আমরা সবকিছু ওপেন রাখতে পারবো না। তাহলে মানবপাচার বেড়ে যাবে। এজন্য ইমিগ্রেশনে প্রবেশের আগেই গন্তব্য দেখে ঠিক করব, কোন যাত্রীরা ই-গেট ব্যবহার করে যাবেন,' যোগ করেন তিনি।

গত মঙ্গলবার ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীরা ১৮ সেকেন্ডে ই-গেটের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন শেষ করেন বলে শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানিয়েছিলেন।

সেদিন শাহজালালের ডিপারচার এলাকায় ১২টি ও অ্যারাইভাল এলাকায় ৩টি ই-গেট চালু করা হয়।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগ (ডিআইপি) সূত্র জানিয়েছে, ই-পাসপোর্ট ও অটোমেটেড বর্ডার কন্ট্রোল (এবিসি) ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে মোট ৫০টি ইলেকট্রনিক গেট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

Comments

The Daily Star  | English

Elections entirely Bangladesh's internal matter: Shafiqul

'Wounds caused by crimes against humanity perpetrated by AL still fresh,' says CA's press secretary

1h ago