‘ঈদের আগে দোকানে যা তুলেছি সব পুড়িয়ে ছাই করে দিল’

ছবি: স্টার

দোকানের ভেতর আগুনে পুড়ে যাওয়া কাপড়ের ছাইয়ের পাশে বাকরুদ্ধ দাঁড়িয়ে ছিলেন। দুচোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। কী হয়ে গেল বুঝে উঠতে পারছেন না। 'সামনে ঈদ, তার আগে দোকানে ২০ লাখ টাকার নতুন কাপড় তুলেছি বিক্রির জন্য। এখন সব পুড়িয়ে ছাই করে দিল', অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন, রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার নূরজাহান মার্কেটের দোকান মালিক সেন্টু মিয়া।
 
তিনি শুধু তার দোকানের ক্ষতির কথা জানালেন। আরও ৩টি দোকানে একই রকম ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আজ দুপুর ১টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত দোকানগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিলে ৪টি দোকান পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। আরও কয়েকটি দোকানেও কিছুটা আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা কলেজ এবং নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের সময় এ ঘটনা ঘট।

 দোকানি মালিকদের অভিযোগ, ঢাকা কলেজের উত্তেজিত শিক্ষার্থীরাই তাদের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা পালন করলে এ পরিস্থিতি এড়াতে পারতো বলে মন্তব্য করেছেন এ ঘটনার অনেক প্রত্যক্ষদর্শী।

দোকানে প্রথমে আগুন দিয়ে এরপর ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে বলেও জানান দোকান মালিকরা। 

ছবি: স্টার

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাশে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগে থেকেই নিউ মার্কেট এলাকায় ছিল। তারা দ্রুত এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। আগুন যদি ব্যাপক আকারে ছড়াতো তাহলে পুরো মার্কেট পুড়ে যেত। আগুন যখন ধোঁয়ার আকারে শুরু হয়, তখন নূরজাহান মার্কেটের দোকানদার মোহাম্মদ আলী কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাছে ছুটে যান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের পায়ে পড়ে বলেন, 'স্যার আমাদের সব শেষে হয়ে গেল। আমাদের রক্ষা করেন।'

মোহাম্মদ আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২ বছর করোনার জন্য ব্যবসায় সুবিধা করতে পারিনি। এবার ঈদ উপলক্ষে অনেক টাকার জিনিস দোকানে তুলেছি। আশা করেছি গত ২ বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেব। কিন্তু সব আশা বিফলে গেল। ঢাকা কলেজের ছাত্ররা আমাদের পেটে লাথি মারল। ওরা ছাত্র না, ওরা সন্ত্রাসী।' 

আরেক দোকানদার মিজানুর রহমানও প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছে এ ঘটনায়। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সব সময় অনৈতিক আবদার করে আমাদের বিরক্ত করে। এখন আমাদের দোকান পুড়িয়ে দিলো। যে ক্ষতি হয়ে গেলো তা পুষিয়ে নেব কেমনে বুঝে আসছে না।'

তিনি সরকারের কাছে অনুরোধ করেন, 'আমরা গরিব মানুষ। যে ক্ষতি হলো, সরকার যদি আমাদের দিকে না তাকায়, সাহায্যের হাত না বাড়াই, তাহলে আমরা খুব ক্ষতিগ্রস্থ হব।' 

 

Comments

The Daily Star  | English

Exports stuck in EU, US orbit

For years, policymakers and businesses have talked about diversifying the country’s export basket and destinations. Yet little has changed. Despite generous government incentives, shipments rely heavily on a few products and markets.

1h ago