ঈদে বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ভোগান্তির আশঙ্কা

বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ সহজ ও দ্রুততর হয়েছে, বেড়েছে যাত্রী চলাচল, পণ্য পরিবহন। তবে বেশ কিছুদিন ধরে মহাসড়কে যানজটের কারণে স্বস্তির যাত্রা অস্বস্তিতে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় আসন্ন ঈদযাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবহন চালক-যাত্রীসহ সবাই।
সড়কের ২৫ কিলোমিটারে যানজট এখন প্রতিদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ সহজ ও দ্রুততর হয়েছে, বেড়েছে যাত্রী চলাচল, পণ্য পরিবহন। তবে বেশ কিছুদিন ধরে মহাসড়কে যানজটের কারণে স্বস্তির যাত্রা অস্বস্তিতে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় আসন্ন ঈদযাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবহন চালক-যাত্রীসহ সবাই।

বাসচালক মো. মাসুদ রানা প্রতিদিন ঢাকা-শৈলকূপা রুটে যাতায়াত করেন। তবে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম মহাসড়কে পৌঁছানোর পর শুরু হয় তার দুশ্চিন্তা। যমুনা সেতু থেকে মহাসড়কের এ অংশে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রাস্তায় চলছে সংস্কার কাজ। নলকা এলাকায় চলছে সেতু নির্মাণের কাজ। মহাসড়কে উন্নয়ন কাজের জন্য প্রতিদিন ধীর গতিতে গাড়ি চালিয়ে ২৫ কিলোমিটার যেতে তার সময় লাগছে প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা।

মাসুদ রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যদি যানজট না তাকে তাহলে দেড় দুই ঘণ্টার মধ্যে পশ্চিম মহাসড়ক পার করে গন্তব্যের পথে আগাতে পারি। আর যদি যানজট লেগে যায় তাহলে ২৫ কিলোমিটার পথ পার হতে দিতে ৪-৫ ঘণ্টা লাগে। কখনো তার বেশি সময় লেগে যায়।'

মহাসড়ক প্রশস্ত করার কাজ চলছে। ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

মাসুদ রানা বলেন, 'ঈদের সময় যাত্রী পরিবহন ও যানবাহনের চাপ অনেক বেশি থাকে। সে সময় গাড়ির সংখ্যাও অনেক বেশি থাকে।'

এ অবস্থায় এবার ঈদে এ রুটের যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।   

পাবনার প্রাইভেটকার চালক আরিফুজ্জামান রাসেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত শবে বরাতের ছুটিতে পাবনায় বাড়িতে যেতে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর ২৫ কিলোমিটার মহাসড়ক পার হতে প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। সড়কে সংস্কার কাজ চলায় এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।'

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঈদের ছুটির আগেই মহাসড়কের কাজ শেষ করার দাবি জানান তিনি। 

সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়ক গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়ক প্রশস্ত করার কাজ চলছে। একইসঙ্গে সড়কের নলকা এলাকায় পুরোনো অকেজো সেতু পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। 

উন্নয়ন কাজের জন্য সড়কের ২৫ কিলোমিটারে যানজট এখন প্রতিদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

জানতে চাইলে মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্প সাসেক-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে।' 

তবে সংস্কার কাজের জন্য কোনো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি। 

বাপ্পি বলেন, 'নলকা এলাকায় ব্রিজ নির্মাণের কাজের জন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ব্রিজের ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি ঈদের আগেই নলকা ব্রিজের রাস্তা চালু করা হবে।'

এদিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে স্বাভাবিক সময়ে এখন প্রতিদিন বঙ্গবন্ধু সেতুর ২৫ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে কমপক্ষে দের থেকে ২ ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। আর যানজট থাকলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কেই দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। 

পরিবহন চালক ও যাত্রীরা জানান, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন যেভাবে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, তাতে আসন্ন ঈদযাত্রা দুর্বিসহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা আছে।

তবে যানজটের জন্য শুধু সড়ক সংস্কার কাজকে দায়ী করতে রাজি নয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

তাদের মতে, পরিবহন চালকদের অসচেতনতা ও ট্রাফিক আইন অমান্য করার কারণে মহাসড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেশিরভাগ সময় একটি গাড়ি আরেকটি গাড়িকে ওভারটেক করতে যায়। এতে মহাসড়কে যানজট বেঁধে যায়। এছাড়া যদি মহাসড়কের কোথাও কোনো গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে, তখন মুহূর্তেই দুই দিকে শতশত গাড়ির জটলা বেঁধে যায়।' 

যানজট নিরসনে পুলিশ সার্বক্ষণিক মহাসড়কে কাজ করে চলেছে বলে জানান তিনি। 

তিনি আরো জানান, ঈদের আগেই বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পরিকল্পনা আছে।

'তবে শুধু অতিরিক্ত পুলিশ দিয়েই হবে না, পরিবহন চালকদের সচেতন হতে হবে। তা না হলে সংকট মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়বে,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Trend of Interest Rate Spread

Interest rate spread rises to highest level since 2003

The spread between interest rates on deposits and loans rose to 6.03 percent, the highest in two decades, indicating that banks are making money at the expense of depositors and borrowers.

15h ago