কষ্টে দিন কাটছে রাজবাড়ীর কামারদের
কোরবানির ঈদকে ঘিরে রাজবাড়ীর কামারপট্টিতে কর্মব্যস্ততা থাকলেও নেই কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক ক্রেতা। এই ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। আর এর জন্য প্রয়োজনীয় দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ নানা যন্ত্রের চাহিদাও বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
সেই চাহিদার জোগান দিতেই কামারপট্টিগুলো সাধারণত মুখর থাকে টুং টাং শব্দে। তাদের এই এক মৌসুমের আয়ই সারা বছরের ভরসা। কিন্তু, করোনা মহামারির কারণে মানুষ আর্থিক অনটনে থাকায় দোকানে নেই ক্রেতাদের ভিড়।
সারি সারি ছুরি, চাকু, দা-বটি, চাপাতি বিছিয়ে রাখলেও ক্রেতার আনাগোনা না থাকায় এখন শঙ্কার ভাঁজ পড়েছে সারা বছর আগুনের উত্তাপ গায়ে জড়িয়ে লোহা পিটিয়ে যন্ত্রে পরিণত করা কারিগরদের কপালে।
কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বললে তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, বছরের ১১ মাসে যা আয় হয়, তার চেয়ে বেশি আয় হয় কোরবানি ঈদের এক মাস। ফলে এই এক মাসের আয়-উপার্জনের ওপরই তাদের অনেক আশা ভরসা থাকে।
রাজবাড়ী সদরে বিশ থেকে পঁচিশ ঘর কামারদের বসবাস। তাদের সবাই প্রায় অসচ্ছল। পৌরসভা থেকে জন্যে জায়গা বরাদ্দ থাকলেও তা বেদখল হয়ে গেছে। অস্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করা হলেও তারা পাননি কোনো সুযোগ-সুবিধা। অনেকেই পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন।
রাজবাড়ী শহরের কামারপট্টি ঘুরে জানা গেছে এমন তথ্য। সেখানে ছিল সুনসান নীরবতা। দেখা যায়নি আগের মতো ব্যস্ততা। অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা।
সুবল কর্মকার ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনার কারণে অবস্থা করুণ হয়ে গেছে। লকডাউন থাকায় বাজারে লোকজন তেমন নেই। বেচাকেনা নেই বললেই চলে।’
কৃষ্ণ কর্মকার ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কাজ নেই। অন্য বছরগুলোতে আমরা দিন-রাত কাজ করতাম। আর এখন বসেই আছি। বাজারে লোকজন নেই। সংসার চালাচ্ছি খুব কষ্টে। পুরনো ছুরি, বটি, দা শান দিয়ে বসে আছি। ক্রেতা নেই।’
অপর এক কর্মকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দোকানের কর্মচারীর বেতন কেমন করে দেব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে দিন যাচ্ছে। আমাদের তো কেউ কোনো সাহায্যও করে না।’
Comments