শরীয়তপুর

কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল নিয়ে খেলতে গিয়ে ৪ শিশু আহত

আহত ৪ শিশুকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছবি: স্টার

সবজি ক্ষেত্রে ফেলে রাখা ককটেলকে টেনিস বল ভেবে কুড়িয়ে নিয়ে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণে ৪ শিশু আহত হয়েছে। আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় জপসা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। 

আহত ৪ শিশুকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনি শংকর কর দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহত ৪ শিশু মাইজপাড়া গ্রামের আফজাল হাওলাদারের ছেলে দিদার হাওলাদার (৭), হানিফ হাওলাদারের ছেলে রনি হাওলাদার (৫), রতন ব্যাপারির ছেলে সায়েম (৫) ও হোসেন ঢালীর ছেলে জাবেদ (৫) বলে জানান ওসি। 

তিনি বলেন, 'আগামী ৫ জানুয়ারি নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়ন পরিষদের পঞ্চম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলছে। যেহেতু সামনে নির্বাচন, তাই আমরা ধারণা করছি কোনো একজন প্রার্থীর সমর্থকরা জপসা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজপাড়া গ্রামের মণ্ডল বাড়ির সবজি বাগানে পরিত্যক্ত ককটেল ফেলে রেখেছিল। রোববার দুপুরে শিশুরা সেখানে খেলতে গেলে ককটেলকে টেনিস বল মনে করে কুড়িয়ে নেয়। এক পর্যায়ে তারা সেটি টানাটানি করতে গেলে তাদের হাত থেকে পড়ে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ৪ শিশু আহত হয়। স্বজনরা আহত শিশুদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।' 

তিনি আরও বলেন, '৪ শিশু আহত হওয়ার ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া কোথাও ককটেল রয়েছে কি না, আমারা তা খুঁজে দেখছি। এজন্য ওই এলাকায় পুলিশের দুটি দল কাজ করছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'আহত শিশু দিদারের মা তারা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার পোলা দিদারসহ ১৫-২০ জন বাচ্চা পোলাপান আমাগো বাড়ির পাশের বাগানে খেলতাছিল। এক সময় আমার জায়ের পোলা জাবেদ (৫) লাল কস্টিপ পেচাইন্না ককটেল বোমাটি খুইজ্জা পায়। টেনিস বল মনে কইরা জাবেদ হেইডা হাতে তুইলা নেই। তারপর মাইজ্জা দেওরের এর মাইয়া সানজিদা (৫) বোমাটা জাবেদের কাছেরতোন কাইড়া লইয়া দৌড় দেয়। তখন আমার পোলা দিদার সানজিদার কাছের তোন বোমা লইয়া দৌড় দিলে হাতেরতোন পইড়া গেলে বোমা ফুইট্টা যায়। পড়ে আইয়া দেহি আমার পোলার মাটিতে শুইয়া চিল্লাইতাছে। পরে আমার পোলাসহ ৪ জনরে হাসপাতালে লইয়া আহি। ডাক্তারে অপারেশন কইরা আমার পোলার পায়েরতোন কাচের টুকরা, পাথরের টুকরা, পেরেক বাইর করছে। এহন ব্যান্ডেজ কইরা দিছে। ডাক্তার কইছে ৩ দিন পর ব্যান্ডেজ খুইল্লা দেখব কি অবস্থা।' 

জপসা ইউপি নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বয়াতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মাদবর প্রতিদ্বিন্দ্বিতা করছেন। দুজনই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। নৌকা প্রতীক উন্মুক্ত থাকায় তারা স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনকে ঘিরে এই ২ প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেই উত্তেজনা রয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মাদবর মুঠোফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোন লোক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে বাগানে ককটেল রেখেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আহবান এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করার। আর কেউ যাতে এ ঘটনার সুযোগ না নিতে পারেন তাও যেন মোকাবিলা করা হয়।'

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী শওকত হোসেন বয়াতি মুঠোফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কটেল বিস্ফোরণে শিশু আহত হওয়ার ঘটনাটি দুঃখজনক। কারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা আমি জানি না। আমি চাই প্রশাসন খুঁজে বার করুক কারা এই ককটেল বোমা রেখেছিল।'

 

Comments

The Daily Star  | English

July uprising: The wounds that are yet to heal, one year on

This week marks one year since 15-year-old Md Shahin Alam’s life was forever changed -- not by illness or accident, but by a bullet that tore through his left leg during a rally on August 5, 2024.

15h ago