কেজিতে ৬ টাকা বাড়ল ইউরিয়া সারের দাম

আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়িয়েছে। পুনর্নির্ধারিত এ মূল্য আজ থেকে কার্যকর হবে।

আজ সোমাবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. কামরুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইউরিয়া সারের ব্যবহার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে এবং চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে ডিলার পর্যায়ে ইউরিয়া সারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতিকেজি ১৪ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে প্রতিকেজি ২০ টাকা এবং কৃষক পর্যায়ে প্রতিকেজি ১৬ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিকেজি ইউরিয়ার সারের বর্তমান দাম ৮১ টাকা। এর ফলে ৬ টাকা দাম বৃদ্ধির পরও সরকারকে প্রতিকেজিতে ৫৯ টাকা ভর্তুকি প্রদান করতে হবে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রতিকেজি ইউরিয়া সারের ভর্তুকি ছিল মাত্র ১৫ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সারের মূল্য ৪ দফা কমিয়ে অত্যন্ত স্বল্প দামে পর্যাপ্ত সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। ডিএপি সারে শতকরা ১৮ ভাগ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান আছে। সেজন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার ডিএপি সারের মূল্য প্রতিকেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েক বছরে ডিএপি সারের ব্যবহার দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে  ডিএপি ব্যবহার হতো ৮ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ১৬ লাখ টন।

ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়ার ফলে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমার কথা। কিন্তু বাস্তবে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমেনি, বরং বেড়েছে। ২০১৯ সালে  ইউরিয়া ব্যবহার হতো ২৫ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন।

অন্যদিকে, গত এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় ৩-৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দেশে সারে প্রদত্ত সরকারের ভর্তুকিও বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে যেখানে ভর্তুকিতে লেগেছিল ০৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা; সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে লেগেছে ২৮ হাজার কোটি টাকা।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। আমন মৌসুমে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা ৬ লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন, বিপরীতে বর্তমানে মজুত রয়েছে ৭ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন, যা প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় ১ লাখ টন বেশি। অন্যান্য সার যেমন টিএসপির আমন মৌসুমে চাহিদা ১ লাখ ১৯ হাজার টন, বিপরীতে মজুত ৩ লাখ ৯ হাজার টন, ডিএপির চাহিদা ২ লাখ ২৫ হাজার টন, বিপরীতে মজুত ৬ লাখ ৩৪ হাজার  টন এবং এমওপির চাহিদা ১ লাখ ৩৭ হাজার টন, বিপরীতে মজুত রয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টন।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

2h ago