গান্ধীজীর জীবন ও বাণী আজও প্রাসঙ্গিক

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, হিংসা থেকে দূরে থাকাই ছিল মহাত্মা গান্ধীর মূলমন্ত্র।
তিনি বলেন, 'মহাত্মা গান্ধী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন অহিংস রাজনীতির মাধ্যমে শান্তি ছড়িয়ে দিতে কাজ করেছেন। হিংসা, লোভ লালসার ঊর্ধ্বে থেকে মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু আজীবন কাজ করে গেছেন। তাদের এই অহিংস নীতি আদর্শ ও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি ফিরে আসবে।'
আজ শনিবার নোয়াখালীতে গান্ধী আশ্রম ও ভারতীয় হাই কমিশনের যৌথ উদ্যোগে গান্ধী মেমোরিয়াল হাইস্কুল ক্যাম্পাসে আয়োজিত 'অহিংসা, সত্যাগ্রহ এবং মহাত্মা গান্ধীকে স্মরণ' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, 'মহাত্মা গান্ধী এবং বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শ ছিল এক। দু'জনের জীবন ও উদ্দেশ্য ছিল এক। বঙ্গবন্ধু মহাত্মা গান্ধীকে অনুসরণ করে অহিংসার মধ্যে দিয়ে অসহযোগ আন্দোলন মোকাবিলা করেছিলেন। ভারতের জাতীয় নেতা মহাত্মা গান্ধী জাতি, বর্ণ, ধর্ম ভেদ করতে আজীবন কাজ করেছিলেন। আমরা যদি মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ অনুসরণ করি তাহলে আমাদের সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।'
অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, 'গান্ধীজীর জীবন এবং তার বাণী আজও প্রাসঙ্গিক।'
হাইকমিশনার ২০১৯ সালে মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত জাতিসংঘের একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য স্মরণ করে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন যে- গান্ধীজীর সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং অহিংসার আদর্শ তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে অবদান রেখেছিল।'
মুজিববর্ষ উদযাপনকালে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনীর জন্য হাইকমিশনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ঢাকায় চলমান বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী দেখার জন্য দর্শকদের আমন্ত্রণ জানান তিনি। প্রদর্শনীটি ১১ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত ঢাকায় উন্মুক্ত থাকবে এবং পরে চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা এবং রাজশাহীতে প্রদর্শিত হবে।
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, 'প্রদর্শনীটি আমাদের দুই দেশের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও উত্তরাধিকারের মতো একটি অনন্য বিষয়কে উপস্থাপন করছে।'
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, অ্যারোমা দত্ত, জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন আবাসিক সমন্বয়কারী টুয়োমো পুটিআইনেন এবং আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী।
গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়। ২০০৭ সাল থেকে দিনটিকে আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস হিসেবেও পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চণ্ডালিকা অবলম্বনে একটি বিশেষ নৃত্যনাট্য উপস্থাপন করে ঢাকার স্পন্দন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
Comments