গ্যাস সংকট, প্রথম রোজায় ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী

বাড়িতে ইফতার তৈরির জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিলেও গ্যাস না থাকায় রান্না করতে পারেননি বনশ্রীর বাসিন্দা ফরিদা করিম। ছবি: স্টার

রমজানের প্রথম দিনই গ্যাস নেই। ফলে ইফতার তৈরিসহ রান্নার কাজে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা।

রাজধানীর জিগাতলা, শ্যামলী, কল্যাণপুর, আগারগাঁও, শ্যাওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর, কাফরুল, আদাবর, বনশ্রী, রামপুরা, বসুন্ধরা আবাসিক, আজিমপুর, লালবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, গ্রিন রোড, মতিঝিল, সেগুনবাগিচা, নারিন্দা, ওয়ারিসহ পুরাণ ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকা এবং মিরপুর ১, ২, ১০ নম্বর এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ রোববার সকাল থেকেই তারা গ্যাস সংকটে পড়েছেন।

গ্যাস না থাকায় বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে ইফতার করেছেন এইসব এলাকার অধিকাংশ মানুষ।

মোহাম্মদপুর কাদেরাবাদ হাউজিংয়ের বাসিন্দা আবু তালহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ বিকালে অফিস থেকে বাসায় ফিরেই দেখি গ্যাস নেই। জানতে পারি সকাল থেকেই গ্যাস ছিল না। কোনো উপায় না পেয়ে বাইরে থেকে খাবার কিনে আনতে হয়েছে। এখন কলেরার প্রকোপ বেড়েছে, এ অবস্থায় বাইরে থেকে খাবার কিনে খাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।'

বনশ্রীর বাসিন্দা ফরিদা করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল সন্ধ্যা থেকেই গ্যাস ছিল না। সেহরির আগে কিছু সময়ের জন্য গ্যাস আসে। গ্যাসের চাপ কম থাকলেও রান্নার কাজ শেষ করতে পেরেছিলাম। কিন্তু আজকে সকাল থেকেই গ্যাস নেই। আমরা সবসময় বাসাতেই ইফতার তৈরি করি। আজকেও সব প্রস্তুত করেছিলাম। কিন্তু পরে বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে ইফতার কিনে আনতে হলো।'

ফরিদা করিমের ছেলে রাব্বি বলেন, 'ইফতার কিনতে গিয়ে দেখি, দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ইফতার কিনতে হয়েছে।'

ইফতারের দোকানে উপচে পড়া ভিড়। ছবি- স্টার

গ্যাস না থাকার বিষয়ে কোনো অগ্রিম নোটিশও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা। রমজানের প্রথম দিনেই গ্যাস বন্ধ করে লাইনের কাজ করার সমালোচনাও করেছেন অনেকে।

রামপুরা এলাকার বাসিন্দা নাজিফা সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অন্য সময় গ্যাস না থাকলে আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এবার সেটা করা হয়নি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, আমাদের ভবনের কেউই গ্যাস না থাকার বিষয়টি জানতেন না। ঢাকায় আমাদের অন্যান্য স্বজনদের বাড়িতেও গ্যাস নেই। সবাই ভোগান্তিতে পড়েছেন। রমজানের শুরুতেই গ্যাস বন্ধ করে লাইনের কাজ করা হচ্ছে। এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য না।'

জিগাতলার বাসিন্দা অনিন্দ্য নাহার হাবীব বলেন, 'আমি সকালে উঠে দেখি গ্যাস নেই। খোঁজ নিয়ে জানলাম, গ্যাস কখন আসবে কেউই বলতে পারছেন না। রান্না করতে না পেরে দুপুরে বাইরে থেকে খাবার এনে বাচ্চাকে খাওয়াতে হলো।'

জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের জরুরি মেরামতের জন্য গ্যাস সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। আমরা অনেকখানি সমাধান করে ফেলেছি। আশা করছি আগামীকালের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আমরা পেট্রোবাংলা থেকে বিবিয়ানায় উচ্চপদস্থ একটি টিমও পাঠিয়েছি পরিস্থিতি বোঝার জন্য।'

আজ রোববার দুপুরে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপের সৃষ্টি হতে পারে। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

বিকেলে পাঠানো আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়  জানায়, বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণ কাজের জন্য গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন বিঘ্ন ঘটছে। এর ফলে কোনো কোনো এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

US seeks written tariff reduction proposals from Bangladesh

“We look forward to receiving a written offer from your government so that we can commence formal negotiations,” the USTR letter said

1h ago