চট্টগ্রাম বইমেলা: প্রাণের টানে ছুটছে পাঠক

পাঠকদের পদচারণায় জমে উঠেছে চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে মেলায় বিপুল সংখ্যক পাঠকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে এসেছেন পরিবার নিয়ে, অনেকেই আবার এসেছেন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে।
পরিবারের বড়দের সঙ্গে শিশুরাও এসেছে মেলায়। ছবি: অরুণ বিকাশ দে/স্টার

পাঠকদের পদচারণায় জমে উঠেছে চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে মেলায় বিপুল সংখ্যক পাঠকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে এসেছেন পরিবার নিয়ে, অনেকেই আবার এসেছেন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে।

মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট দলে গোল হয়ে বইপ্রেমীদের সংক্ষিপ্ত আড্ডার আয়োজনও চোখে পড়েছে। সব মিলিয়ে এক জমজমাট মেলার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিল শুক্রবারের চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গণ। এখানেই আয়োজন হচ্ছে বাঙালির প্রাণের অমর একুশে বইমেলা।

এইবারের বইমেলা শুরু হয়েছে ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এবং চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মোট ৯৫ জন প্রকাশক এই মেলায় অংশ নিচ্ছেন। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলছে। ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে প্রাণের এই মেলা।

তরুণদের আগমনে মেলা ছিল মুখরিত। ছবি: অরুণ বিকাশ দে/স্টার

মেলা প্রাঙ্গণের প্রবেশ মুখে স্বেচ্ছাসেবকদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তারা দর্শনার্থীদের হাত পরিষ্কার করতে সহযোগিতা করছেন, প্রত্যেককে মুখে মাস্ক পরতে অনুরোধ করছেন।

মেলার ভেতরে ঢুকতেই বিভিন্ন স্টলের সামনে বইপ্রেমীদের জটলা দেখা গেছে। কেউ বইয়ের পাতা উল্টে দেখছেন, কেউ পছন্দের বইটি আছে কি না খোঁজ নিচ্ছেন।

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হিমেল দত্ত এসেছিল তার বাবার সঙ্গে। একটি স্টলে দাঁড়িয়ে কমিকসের বই দেখছিল হিমেল। মেলায় এসে কেমন লাগছে জানতে চাইলে বলল, 'খুব ভালো লাগছে। মেলায় এত এত সব কমিকসের বই দেখে খুব আনন্দ হচ্ছে।'

হিমেলের বাবা হিমাংশু দত্ত একজন স্কুল শিক্ষক। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোভিডের কারণে এতদিন বাচ্চারা ঘরে বন্দি ছিল। এখন পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় ছেলেকে নিয়ে বইমেলায় এসেছি। এখানে এসে বাবা-ছেলে দুজনই বেশ আনন্দ পাচ্ছি। আমিও বই দেখছি, ছেলেও দেখছে। ছেলের জন্য ২টি কমিকসের বই কিনলাম। আমি কিনলাম একটা প্রবন্ধের বই ও একটা উপন্যাস।'

মেলায় বেচাকেনায় সন্তুষ্ট প্রকাশকরা। ছবি: অরুণ বিকাশ দে/স্টার

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সেঁজুতি চৌধুরী এসেছেন তার বন্ধুদের নিয়ে। তারা সবাই বাতিঘর প্রকাশনীর স্টলে বই দেখছিলেন। সেঁজুতি জানালেন, তিনি বিশ্বজিৎ চৌধুরীর গল্পগ্রন্থ 'পাথরের মূর্তির মতো' বইটি কিনতে এসেছেন।

তিনি বলেন, 'লেখক বিশ্বজিৎ চৌধুরীর কয়েকটি উপন্যাস আমি পড়েছি। খুব ভালো লেগেছে। এই গল্পগ্রন্থটি আগে পড়া হয়নি। তাই মেলায় এসেছি কিনতে।'

বাতিঘর প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী বাবলু চৌধুরী জানান, তাদের স্টলে রাজনীতি, উপন্যাস ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত বইয়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া শিশু-কিশোর সাহিত্যেরও বেশ চাহিদা আছে।

মেলায় প্রতিদিনের বিক্রিও সন্তোষজনক বলে জানান তিনি।

আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত মেলা চলবে। ছবি: অরুণ বিকাশ দে/স্টার

'ছুটির দিনে পাঠক উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি। তাই বিক্রিও বেশি হয়,' বলছিলেন বাবলু।

প্রথমা প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী শাওন রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্টলে উপন্যাস ও শিশুতোষ সাহিত্যের চাহিদা বেশি। বিক্রি মোটামুটি সন্তোষজনক। যদিও আমাদের প্রত্যাশা আরও বেশি ছিল, তবে এ পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে, তাতেও আমরা সন্তুষ্ট।'

অ্যাডরন পাবলিকেশন্সের সাইয়েদ মাহমুদুল হাসান বলেন, 'মেলায় পাঠক উপস্থিতি ভালো। এ পর্যন্ত আমাদের স্টলে যা বিক্রি হয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট।'

যোগাযোগ করা হলে বই মেলার আহবায়ক নিসার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মেলার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুরো মেলা প্রাঙ্গণ সিসিটিভির আওতায় আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Mob beating at DU: Six students confess involvement

Six students of Dhaka University, who were arrested in connection with killing of 35-year-old Tofazzal Hossain inside their hall on Wednesday, confessed to their involvement in the crime before a magistrate

9h ago