জামায়াত-শিবিরের ঝটিকা মিছিল-সমাবেশ, নতুন ছকে পুলিশ

চট্টগ্রাম নগরীতে জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঝটিকা মিছিল ও সমাবেশের ঘটনায় তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কর্মীদের বর্তমান অবস্থান ও তাদের বর্তমান কর্মকাণ্ড নিয়ে তালিকা হচ্ছে নগরীর বিভিন্ন থানায়।
যারা বিভিন্ন নাশকতার মামলা থেকে জামিনে এসেছেন তাদের বিষয়েও খোঁজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র। একইসঙ্গে অনলাইনে বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপকেন্দ্রিক জামায়াত শিবিরের নেতাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ও দেশব্যাপী চলমান ইস্যুকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে গোপনে সংগঠিত হচ্ছে জামায়াত-শিবিরের নেতা কর্মীরা যার প্রমাণ ফেব্রুয়ারিতে শিবিরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নগরীর বন্দর থানা এলাকায় ঝটিকা মিছিল। বন্দর থানাধীন নিমতলার তালতলা এলাকায় ঝটিকা মিছিল করতে পারলেও পুলিশের ধাওয়ায় একই দিন পণ্ড হয়ে যায় চান্দগাঁও থানায় শিবিরের মিছিল চেষ্টা।
সবশেষ নগরীর নতুন চাক্তাই এলাকায় গত ১৪ মার্চ প্রায় ২০০ লোক নিয়ে মিছিল ও সমাবেশ করে মহানগর জামায়াত যেখানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও নগর সেক্রেটারি নুরুল আমীন।
তবে দিনের বেলায় জামায়াতের এত লোক নিয়ে এই ঝটিকা মিছিল ও সমাবেশ করলেও নগর পুলিশ জামায়াতের বিষয়ে খোলাখুলিভাবে কোনো কথা বলছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র মতে জামায়াত-শিবিরের এই ঝটিকা মিছিলের ফলে চাপে পড়েছে থানা পুলিশ।
উল্লেখ্য ১০ মার্চ নগর গোয়েন্দা পুলিশ এবং থানা পুলিশের অভিযানে নগরীর বিভিন্ন জায়গা থেকে জামায়াত শিবিরের ২৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, 'কোথাও জামায়াতের কয়েকদিন আগে (১৪ মার্চ) সমাবেশ হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। আপনি বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।'
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল হককে দুইদিন ধরে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক থানার ওসির সাথে কথা বলে জানা গেছে, জামায়াত শিবিরের ঝটিকা মিছিল যেই এলাকায় হয় সেই এলাকার ওসিরা সেটিকে 'ডিসক্রেডিট' হিসেবে দেখছেন। সব থানার ওসিকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের কর্মকাণ্ড নজরদারিতে রাখতে সাদা পোশাকের পুলিশ বাড়ানো ও থানা অনুযায়ী বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সিএমপির সদর দপ্তর থেকে। এছাড়া নগর বিশেষ শাখায় আলাদা করে একটি কমিটি করে তার মাধ্যমে কার্যক্রমগুলো মনিটরিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে জামায়াতের কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য বলা হয়েছে যাতে করে তাদের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অতীতে জামায়াত শিবিরের জন্য যে এলাকা 'দূর্গ' হিসাবে খ্যাত ছিল সেই এলাকাগুলোতেও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মো. মোখলেসুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা আমাদের আইন শৃঙ্খলা যাতে স্বাভাবিক থাকে সেই সম্পর্কে সবাইকে সজাগ থাকতে বলেছি। যেখানে এই ধরনের ঘটনা (ঝটিকা মিছিল) হচ্ছে সেখানেই আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'
Comments