দরজা-জানালা নেই, পরিত্যক্ত ভবনে ভোট কেন্দ্র

ছবি: মাসুক হৃদয়/স্টার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার একটি ইউনিয়নে ধ্বসে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা দরজা-জানালাহীন পরিত্যক্ত ও ময়লা-আবর্জনায় ভরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে।

উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত প্রায় ৫০ বছরের পুরনো ইউনিয়ন পরিষদ গণ-মিলনায়তন ভবনটিতে ভোটকেন্দ্র হওয়ায় দিনভর আতঙ্কিত ছিলেন ভোটার ও ভোটগ্রহণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

জানা যায়, চাপরতলা ইউনিয়নের তারাউল্লা ও বড়ইবাড়ী- এই দুটি গ্রাম নিয়ে গঠিত ৬ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মোট ভোটার ৯৬৯ জন। এর মধ্যে ৫০৬ জন পুরুষ এবং ৪৬৩ জন নারী ভোটার।

ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার কানু ধন শীল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '৯৬৯ জন ভোটারের জন্য মোট ৪টি বুথ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রটি অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কিন্তু আমাদের কিছু করার ছিল না। কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এরকম নোংরা ভবনে নির্বাচনের কাজ শেষ করতে হয়েছে।'

ছবি: মাসুক হৃদয়/স্টার

এদিকে পরিত্যক্ত ভবনে ভোট দিতে এসে অবাক হয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা। দরজা-জানালা ছাড়া, ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর এবং ছাদের পলেস্তারা খসে পড়া পরিত্যক্ত ভবনে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করায় বিরক্তি জানান তারা।

কেন্দ্রটিতে ভোট দিতে আসা স্থানীয় বড়ইউরি গ্রামের বাসিন্দা সুরঞ্জন দেবনাথ বলেন, 'একটা ভবনের কোনো দরজা-জানালা নেই, ছাদসহ বেশিরভাগ অংশই ভেঙে গেছে, মলমূত্রের দুর্গন্ধে টেকা দায়। এমন স্থানকে ভোট কেন্দ্র করায় ভোটাররা খুব বিরক্ত হয়েছেন।'

ভোট কেন্দ্রটিতে পোলিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা সাইফুল হাসান বলেন, 'এরকম একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ঠিক করার আগে উপজেলা প্রশাসনের অন্তত একবার ভেবে দেখা উচিত ছিল। কিন্তু তারা বিষয়টিকে একেবারেই গুরুত্ব দেননি। হাজারেরও বেশি মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা সংশ্লিষ্টদের মোটেও ‌ঠিক হয়নি।'

ছবি: মাসুক হৃদয়/স্টার

ওই ভোটকেন্দ্রের নারী বুথে দায়িত্বপলনকারী পোলিং এজেন্ট কোহিনুর আক্তার বলেন, 'এরকম একটা স্থানে ভোটকেন্দ্র হয়েছে, যেটা না দেখলে কারো বিশ্বাস হবে না। ভোটগ্রহণ কক্ষের পাশের কক্ষই মলমূত্রে ভরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাকে রুমাল চেপেও দায়িত্ব পালন করতে কষ্ট হয়েছে।'

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার গুনিয়াউক ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আলাদা করে ৮টি গ্রাম নিয়ে চাপরতলা নামে নতুন একটি ইউনিয়ন করার পর ১৯৭২ সালে তারাউল্লা নামের স্থানে ইউপি ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ২০০৯ সালের পর থেকে এটিতে অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন তৎকালীন ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন ভুঁইয়া পারভেজ। স্থানীয় চাপরতলা বাজারে চেয়ারম্যানের ব্যক্তি মালিকানাধীন মার্কেটে কক্ষ ভাড়া নিয়ে অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান তারা।

Comments

The Daily Star  | English
US tariff cut helps Bangladesh garment industry

Will Bangladesh benefit from higher US tariffs on China, India?

The Trump administration’s imposition of higher reciprocal tariffs on India and China, two of Bangladesh’s main competitors in the global readymade garments sector, is definitely a boon for Bangladesh, according to local exporters.

11h ago