দুখী দেশের তালিকায় ১২২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সপ্তম

সুখী দেশের তালিকা
রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় রান্নার কাজে সহযোগিতা করতেন ফুলমতি (৭৫)। মহামারিতে হারিয়েছেন সেই কাজ। এখন তাকে সংসার চালাতে হয় অন্যের সহযোগিতা নিয়ে। ছবি: শেখ এনামুল হক

বিশ্বে সবচেয়ে দুখী দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম বলে নতুন একটি বৈশ্বিক জরিপে বলা হয়েছে।

'২০২২ গ্লোবাল ইমোশনস রিপোর্ট' শীর্ষক প্রতিবেদনে ১২২টি দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের স্কোর ৪৫। আফগানিস্তান ৫৯ স্কোর নিয়ে দুখী দেশের তালিকার শীর্ষে রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচকে স্কোর উচ্চতর হলে বোঝায়, দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ এ ধরনের আবেগ অনুভব করছে।

চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ মার্চের মধ্যে বাংলাদেশে পরিচালিত জরিপে মোট এক হাজার মানুষ অংশ নেন।

বিশ্বের ১২২টি দেশের এক লাখ ২৭ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে মানুষ বেশি মানসিক চাপে ছিল।

শারীরিক জটিলতা, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, মানসিক চাপ ও ক্রোধ অনুভব করেছেন কি না, এ সংশ্লিষ্ট প্রশ্নও জরিপে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

গ্যালাপের বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনা অংশীদার জন ক্লিফটন বলেন, বর্তমান বিশ্ব যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি ও মহামারিতে ভুগছে।

এর মধ্যে যে কোনো একটির প্রভাব আরও প্রকটভাবে বিশ্বে পড়বে। তবে, এই সমস্যাগুলো আলোচনায় আসার বেশ আগে থেকেই বিশ্বব্যাপী অসন্তোষের বিষয়টি শুরু হয়েছিল। এক দশক ধরে এই অসন্তুষ্টি বাড়ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা অনেক বেশি উদ্বেগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, যা ২০২০ সালের তুলনায় দুই শতাংশ বেশি।

এতে আরও বলা হয়, নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই বুঝতে হবে কেন অনেক মানুষ অভূতপূর্বভাবে নেতিবাচক আবেগ অনুভব করছে এবং তাদেরকে অত্যন্ত ইতিবাচক জীবনের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।

এই অসন্তুষ্টির কারণ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক অসন্তুষ্টির উত্থানের পেছনে পাঁচটি উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো—দারিদ্র্য, একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে নেতিবাচক পারিপার্শ্বিকতা, ক্ষুধা, একাকীত্ব ও কাজের সুযোগের অভাব।

এতে আরও বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জন শারীরিক জটিলতা (৩১ শতাংশ), চার জনের মধ্যে একজনেরও বেশি মানসিক অবসাদ (২৮ শতাংশ) ও রাগ (২৩ শতাংশ) অনুভব করে।

নেতিবাচক সূচকে আফগানিস্তানের স্কোর ৩২। যার মানে বোঝায় বিশ্বের মধ্যে সেখানকার জনগণ সবচেয়ে বেশি মানসিক অবসাদে ভোগেন। ১৬ বছর আগে গ্যালাপ যখন এই জরিপ শুরু করে, তখন থেকেই আফগানিস্তানের স্কোর সর্বনিম্ন। ইতিবাচক সূচকে পানামার স্কোর ৮৫। যার মানে বোঝায়  বিশ্বের মধ্যে সেদেশের জনগণ সবচেয়ে কম মানসিক অবসাদে ভোগেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরখানের আগেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের মধ্যে দুঃখ, উদ্বিগ্নতা ও মানসিক চাপ আরও কম ছিল।

ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো বিশ্বে সবচেয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সূচকে উদ্বেগ দুই পয়েন্ট এবং চাপ ও বিষণ্ণতা এক পয়েন্ট বেড়েছে।

ইতিবাচক আবেগ সূচকে ৮৫ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে পানামা। ৮০ স্কোর নিয়ে তালিকায় পানামার পরেই রয়েছে প্যারাগুয়ে, এল সালভাদর, হন্ডুরাস ও নিকারাগুয়া। লাতিন আমেরিকার বাইরে বেশ কয়েকটি দেশ ২০২১ সালে সবচেয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। সেগুলো হলো—আইসল্যান্ড, ফিলিপাইন, সেনেগাল, ডেনমার্ক ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

Comments

The Daily Star  | English

Rising tea prices bring new life to northern growers

Better rates, higher yields, and improved quality are revitalising tea cultivation

12h ago