দৌলতদিয়ায় ১০ কিলোমিটার যানজট

ঈদের ছুটি শেষ করে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত নৌযান না থাকায় দৌলতদিয়া ঘাটে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে ২টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানবাহনের সারি দেখা যায়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ফেরিঘাট সূত্র জানায়, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে বর্তমানে মোট ২১টি ফেরি চলাচল করছে। এর মধ্যে ১১টি বড়, ৭টি ইউটিলিটি, ২টি ড্রাম ও একটি ছোট ফেরি রয়েছে। দৌলতদিয়া প্রান্তে মোট ৪টি ঘাট দিয়ে যানবাহন পার করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ ভোর থেকেই যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।

দুপুর ২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মকবুলের দোকান পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অন্তত ৫ হাজার যানবাহন নদী পারের অপেক্ষায় আটকে আছে। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেশি। চালকরা জানান, ফেরি পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা।
লঞ্চ ঘাটেও একই রকম ভিড় দেখা যায়। প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে লঞ্চে উঠতে হচ্ছে। বাসের সারি পার হয়ে লঞ্চ পর্যন্ত যেতে ব্যাগ নিয়ে অনেকে হিমশিম খাচ্ছেন। যাদের সঙ্গে শিশু সন্তান রয়েছে, তাদের ভোগান্তি আরও বেশি।

আকলিকা খাতুন নামে এক পোশাক শ্রমিক বলেন, আমি কুষ্টিয়া থেকে লোকাল বাসে ঘাটে এসেছি। কিন্তু ঘাট থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে আমাদের নামিয়ে দিয়েছে। ২ সন্তান নিয়ে রোদের মধ্যে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে।
দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে থাকা বাসযাত্রী শরীফুল ইসলাম বলেন, বাসে ৬ ঘণ্টা হলো বসে আছি। তীব্র গরমে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
বেনাপোল থেকে আসা সাউদিয়া বাসের যাত্রী তাহের হোসেন বলেন, 'গত রাতে ৪টার দিকে এসে ঘাটে দাঁড়িয়েছি। এখনো ফেরিতে উঠতে পারিনি। ফেরি পর্যাপ্ত চলছে বলে মনে হয় না। এই দীর্ঘ সময় যানজটে দুর্ভোগ হচ্ছে।'
সুবর্ণ পরিবহন বাসের সুপারভাইজার আরেফিন বলেন, 'সকাল ৬টার দিকে ঘাটে এসেছি, এখন ২ কিলোমিটার দূরে আছি। প্রচণ্ড গরমে যাত্রীরা কষ্ট পাচ্ছেন।'
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সিহাব উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আজ সকাল থেকে যানবাহনের চাপ তীব্র আকার ধারণ করেছে। গতকাল থেকে মোট ২১টি ফেরিতে যানবাহন পার করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে মানুষের ভোগান্তি কম হয়।
Comments