নিজের ভোটও পেলেন না ৬ সদস্য প্রার্থী!

একটি ভোটকেন্দ্রে ইউপি সদস্য পদের নির্বাচনে এক প্রার্থী একাই পেয়েছেন কাস্ট হওয়া বৈধ ১ হাজার ১৫৫ ভোটের সবগুলোই। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বাকি ৬ জন একটি ভোটও পাননি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মায়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ফলাফল এটি।

শূন্য ভোটের ঘটনায় হতভম্ব এলাকার মানুষ। ৬ প্রার্থীর নিজেদের ভোট গেল কোথায়?—এই নিয়ে ওই এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

গত রোববার তৃতীয় ধাপে এই ইউনিয়নে শুধুমাত্র ইউপি সদস্য পদেই নির্বাচন হয়। সেখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।

শূন্য ভোট পাওয়া ৬ সদস্য প্রার্থী হলেন—ভ্যানগাড়ি প্রতীকের কাউসার মিয়া, ঘুড়ি প্রতীকের মোতালিব মিয়া, আপেল প্রতীকের মো. আলমগীর, তালা প্রতীকের মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ফুটবল প্রতীকের মো. মিস্টার আলী ও মোরগ প্রতীকের সফিকুল ইসলাম।

প্রার্থীদের প্রশ্ন—তাদের স্ত্রী, পরিবারের অন্যান্য সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী, কর্মী-সমর্থক ও এজেন্ট কেউই কি তাদেরকে ভোট দেননি? এমনকি তাদের নিজের দেওয়া ভোট গেল কোথায়?

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া ফলাফলের তালিকায় দেখা গেছে, মায়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ১৬৩ জন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ১৬১ জন ভোট দিয়েছেন।

কাস্ট হওয়া ভোটের মধ্যে ৬টি বাতিল বলে গণ্য করে ১ হাজার ১৫৫ ভোটকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। বৈধ ঘোষিত সবগুলো ভোটই বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকের প্রার্থী হাসান মিয়া পেয়েছেন বলে ফলাফলে উল্লেখ করা হয়। একই ওয়ার্ড থেকে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বাকি ৬ জনের ঘরে কোনো ভোট দেখানো হয়নি।

মোরগ প্রতীকের প্রার্থী সফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কেন্দ্রে গিয়ে নিজের প্রতীকে ভোট দিয়েছি। অন্যদের ভোটের হিসাব বাদ দিলাম, আমার ভোটটি গেল কোথায় তা বুঝে উঠতে পারছি না।'

তিনি আরও বলেন, 'এ ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত। এমনটা কি আদৌ সম্ভব? ধরে নিলাম কর্মী-সমর্থকরা কেউ আমাকে ভোট দেননি। কিন্তু আমি, আমার মা ও স্ত্রীসহ আত্মীয়-স্বজনদের ভোট গেল কোথায়? শূন্য ভোট হয় কিভাবে? আমি এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।'

সফিকুল ইসলাম ছাড়া শূন্য ভোট পাওয়া বাকি ৫ প্রার্থীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।

ওই কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী স্থানীয় এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হুসাইন মোহাম্মদ বেলাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ভোটারদের লাইনে দাঁড় করিয়ে বৈধ পন্থায় ভোট নিয়েছি এবং ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। ভোটের ফলাফল কিভাবে এমন হলো সেটা আমরা কিভাবে বলবো?'

প্রার্থীর নিজের ভোট কোথায়?—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'প্রার্থী নিজেকে নিজে ভোট না দিলে আমরা কী করবো? কে ভোট দিয়েছেন, কে দেননি তা তো আমরা দেখিনি।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrants workers rights in Malaysia

Migrants in Malaysia: Worker faces deportation after speaking up

Nearly 200 workers then began a strike on Friday, he said, requesting not to be named for fear of backlash.

7h ago