‘নোনা জলের কাব্য’ দেশে সবার আগে দেখলেন কুয়াকাটার জেলেরা

আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয়ে আগামী ২৬ নভেম্বর বাংলাদেশে মুক্তি পেতে যাচ্ছে 'নোনাজলের কাব্য'। তবে, সর্ব সাধারণের আগে এই সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনী হয়েছে তাদের জন্য যাদের জীবনের গল্প নিয়ে এই সিনেমা।
গতকাল সোমবার রাতে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার জেলে পল্লীতে এই সিনেমাটি উপভোগ করেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনসহ প্রায় ৬০০ দর্শক।
রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের চিত্রনাট্য ও নির্দেশনায় সিনেমায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া ও তাসনোভা তামান্না। এর সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন শায়ান চৌধুরী অর্ণব।
আজ রাতে জেলার পিকনিক স্পট ও চর গঙ্গামতীতে আরও ২টি প্রদর্শনী হবে।

রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত সিনেমাটির বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী প্রান্তিক জেলেদের দৈনন্দিন জীবন, আবহাওয়ার প্রতিকূলতার মুখে টিকে থাকার লড়াই উঠে এসেছে চলচ্চিত্রটিতে। জেলেদের সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কারও এই সিনেমার উপজীব্য।'
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় মানুষের জীবন ও জীবিকার গল্পে আবর্তিত সিনেমাটির শুটিং হয়েছে পটুয়াখালীতে। ছবিটি ইতোমধ্যেই লন্ডন, বুসান ও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
এ ছাড়াও, চলচ্চিত্র উৎসবের গণ্ডি পেরিয়ে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬ চলাকালে ৮ নভেম্বর স্কটল্যান্ডে আইম্যাক্স থিয়েটারে দেখানো হয় বাংলাদেশের এই চলচ্চিত্র।
পরিচালক বলেন, '৩ বছর আগে ছবিটি নির্মাণ করতে আমি গিয়েছিলাম পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় জেলেপাড়ায়। কিন্তু সাগরের প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে সেই জেলেপল্লী এখন অস্তিত্ববিহীন।'
'সিনেমায় যে জেলে ভাই-বোনেরা অভিনয় করেছিলেন, তাদের অনেকের সঙ্গে এবার দেখা হয়েছে। তাদের মুখে শুনেছি, ইলিশ মাছও নাকি এখন অপ্রতুল। শুনে বুঝলাম, তাদের জীবনের এই কঠিন বাস্তবতা আমার সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়েছে,' যোগ করেন তিনি।
অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু বলেন, 'সিনেমায় চেয়ারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। এই সিনেমাটি আমাদের দেশের চলচ্চিত্র আঙ্গিনায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।'
'নোনাজলের কাব্য' প্রযোজনা করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও ফরাসি প্রযোজক ঈলান জিরার্দ। বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরীর হাফ স্টপ ডাউন। সিনেমাটি সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খ।
Comments