পদ্মার ভাঙন: ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন গ্রামবাসী

ছবি: স্টার/সাজ্জাদ হোসেন

ভাঙন শুরু হওয়ায় ঝুঁকিতে থাকা ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের দক্ষিণ মূলচর গ্রামের পদ্মাপাড়ের মানুষ। প্রতিবছর বর্ষায় পদ্মা তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ভাঙন দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত আট থেকে দশটি টিনশেড ঘর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও বেশকিছু ঘর সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।

সরেজমিনে মূলচর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি বাড়ির গা ঘেঁষে রয়েছে ভাঙনের চিহ্ন। ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে ঘরবাড়ি। খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে আসবাবপত্র।

স্থানীয় বাসিন্দা নিতাই চন্দ্র মণ্ডলের বাড়ি সরানোর কাজ করছিলেন দুলাল বিশ্বাস। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত তিন দিন ধরে বাড়ি-ঘর ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছি। এখন পর্যন্ত পাঁচটি ঘর সরিয়েছি।'

ছবি: স্টার/সাজ্জাদ হোসেন

রচনা মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পরিবারের নয় জন সদস্য নিয়ে তিনটি টিনশেড বাড়িতে বসবাস করতাম। গত মে মাসে ভাঙনের কারণে দুটি বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। এ বছর আগস্ট মাসে থেমে থেমে ভাঙন শুরু হয়েছে। গতকাল রাতে ভাঙন শুরু হওয়ার পর একটি টিনশেড বাড়ি ছিল, সেটি ভেঙে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শত বছরের বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছেড়ে এখন অন্য জায়গায় চলে যেতে কষ্ট হচ্ছে।'

অনীতা ঘোষ নামে এক বাসিন্দা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মে মাসে ভাঙন শুরু হয়। তারপর থেমে থেমে বিভিন্ন সময় নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করে। গতকাল রাতে ভাঙতে ভাঙতে বাড়ির কাছে এসে পড়ে। তখনি বাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে সড়কের ওপর রাখি।'

এখন অন্য কোনো চরে গিয়ে বাসা বাঁধতে হবে বলে জানান তিনি।

মো. মোকতার হোসেন বলেন, 'নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে ঘরের কাছে এসে পড়েছে। নতুন করে আবারও ভাঙন শুরু হলে বাড়িটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এজন্য অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার জায়গা খুঁজছি।'

টংগিবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান জগলুল হালদার ভুতু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল রাতে বেশকিছু গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। মূলচর গ্রামের শতাধিক বাড়ি এখনো ঝুঁকির মধ্যে আছে।'

মুন্সিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, 'মূলচর গ্রামে এর আগেও একবার ভাঙন শুরু হলে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে বেশকিছু টিনশেড ঘর ঝুঁকিতে আছে। শুকনো মৌসুম শুরু হলে এখানে এক কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।'

মুন্সিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম বলেন, 'বাড়িঘর বিলীন হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে, গ্রামবাসী তাদের টিনশেড ঘরগুলো সরিয়ে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যাচ্ছেন। ভাঙন কবলিত গ্রামটি বেশ নিচু এলাকা। তাছাড়া কয়েকদিন ধরে নদী তীরের গ্রামগুলোতে বেড়েছে স্রোতের তীব্রতা। যার ফলে ভাঙতে শুরু করেছে নদীর পাড়। এখানে জিও ব্যাগ ফেলেও রক্ষা করা সম্ভব হবে না।'

Comments

The Daily Star  | English

How Dhaka’s rickshaw pullers bear a hidden health toll

At dawn, when Dhaka is just beginning to stir, thousands of rickshaw pullers set off on their daily grind.

19h ago