‘প্রধানমন্ত্রী কতকিছু দেয়, কিন্তু আমরা পাই না’

সংকুইন্যা দেববর্মার বয়স ৭৩ পেরিয়েছে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ত্রিপুরা সীমান্ত এলাকা জাম্বুরাছড়ার এই বাসিন্দা এখনও পাননি বয়স্ক ভাতা।
তিনি বলেন, 'মেম্বার-চেয়ারম্যানকে বললেই তারা বলেন, আমার নাকি বয়স হয়নি। আজ পর্যন্ত করোনার কোনো ত্রাণ পাইনি। কেউ আমাদের খবর রাখে না। ত্রাণ চাইলেই বলে, ত্রাণ এখনো আসেনি। প্রধানমন্ত্রী কতকিছু দেয়, কিন্তু আমরা পাই না। সেটা প্রধানমন্ত্রীও জানেন না।'
লেবু বাগানের কর্মী ৬৭ বছর বয়সী বুধুলক্ষী দেববর্মা জানান, লেবুর দাম কমে গেলে ২০০ টাকা থেকে কমে মজুরি পান ১৫০ টাকা। বেশিরভাগ সময় কাজও থাকে না। প্রায় কর্মহীন থাকতে হয়।
একই কথা বলেন জাম্বুরাছড়া এলাকার ৬৫ বছর বয়সী পরিন্দ্র দেববর্মা, ৬৪ বছর বয়সী মারতি দেববর্মা।
তাদের মতো ১৮০টি অসহায় ও কর্মহীন পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী, ২০০ শিক্ষার্থীকে খাতা কলম এবং হতদরিদ্র চারটি পরিবারকে ছাগল কিনে দিয়েছেন আর্থিকভাবে সচ্ছল ত্রিপুরা অধিবাসীরা।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা মঙ্গলিয়া বাড়ি এলাকার ত্রিপুরা গ্রামে এসব বিতরণ হয়।
ত্রাণ বিতরণের অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে বৃহত্তর ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুমন দেববর্মা বলেন, 'সাত দিনে আমরা এক লাখ ৬০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছি।'
বৃহত্তর ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জনক দেববর্মা জানান, এই উদ্যোগের প্রধান উদ্যোক্তা ও সমন্বয়ক বৃহত্তর ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদ এবং সার্বিক সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ ঢাকা মহানগর শাখা ও 'করোনামুক্ত শ্রীমঙ্গল চাই'।
ত্রাণ পেলে স্থানীয় অধিবাসী সংকুইন্যা দেববর্মা বলেন, 'এই প্রথম আমরা ত্রাণ পেলাম।'
ত্রিপুরা অধিবাসীদের বয়স্ক ভাতা এবং সরকারি সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
Comments