‘বিত্তবান-সরকারি কর্মকর্তারা ঠিকই নিজেদেরকে লোডশেডিংমুক্ত রাখবেন’

দেশের জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় সরকার ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের ঘোষণা দিলেও ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া বন্ধ থাকছে না। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, ৬টি বেসরকারি ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বছরে ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়।

চলমান সংকট মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো কতটা কার্যকর? দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলমের সঙ্গে। তার মতে, জ্বালানি সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তে কোনো সুফল আসবে না।

অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, 'ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের কারণ হচ্ছে ব্যয় কমানো। এখন এর ফলে লোডশেডিং হলে জেনারেটরের ব্যবহার বাড়বে। এতে জ্বালানির ব্যবহারও বাড়বে। সেটা সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না বা করবে না। বিত্তবান ও সরকারি কর্মকর্তারা ঠিকই জেনারেটর বা আইপিএস ব্যবহার করে নিজেদেরকে লোডশেডিংমুক্ত রাখবেন। আলটিমেটলি লোডশেডিংটা বহন করবেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এই চাপ তাদের ওপর পড়বে। অর্থাৎ দেশের ৭০ বা ৮০ ভাগ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে।'

'এখন লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে সমতা নিশ্চিত করার যে কথাটা জ্বালানি উপদেষ্টা বলেছেন, সেটা আদর্শিক কথা। জ্বালানি নেই, এক ধরনের সংকট আছে, সুতরা বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হবে, ভোক্তারাও কম পাবে। কিন্তু, সেই কম পাওয়ার পরিণতির শিকার বেশি হবে নিম্ন আয়ের মানুষ, তাদেরকে বেশি খেসারত দিতে হবে। এটাতো অন্যায়। ফলে সরকারের এই সিদ্ধান্তে কোনো সুফল আসবে বলে আমি মনে করি না', বলেন তিনি।

পেট্রল পাম্প সপ্তাহে একদিন বন্ধ রেখে কোনোভাবেই জ্বালানি সাশ্রয় হবে না উল্লেখ করে অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, 'পেট্রল পাম্প বন্ধ রেখে জ্বালানি সাশ্রয় করা যাবে না। তা করতে গেলে ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। ব্যক্তিগত পরিবহনের ক্ষেত্রে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে হবে। এই কঠোরতা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের জন্য কঠিন কিছু না। জ্বালানি উপদেষ্টাসহ সচিব-মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তা, তারা যদি সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেন যে, তারা গণপরিবহনে চলবেন, তাহলেই তো জ্বালানি খরচ অর্ধেক কমে যাবে। কিন্তু, তারা সবকিছুই ভোগ করবে। লোডশেডিংয়ের প্রতিক্রিয়াও তাদের ওপর পড়বে না। আর তারা যা বলবে, সেটাই বাস্তবায়িত হয়ে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, সেটা তো আশা করা যায় না।'

'আজকে যদি জ্বালানি উপদেষ্টা বা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতেন যে, ২ ঘণ্টা করে তারা নিজেরা নিজেদের বাসায় ফোর্স লোডশেডিংয়ে থাকবেন। তাহলে তো সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও স্বপ্রণোদিত হয়ে একাত্মতা পোষণ করত। কিন্তু, তারা সেটা করেননি। সে ধরনের দেশপ্রেম, সাধারণ মানুষের প্রতি সহানুভূতি কখনোই পাওয়া যায়নি', যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

6h ago