বিধি-নিষেধ কার্যকরের আগে রাতেও গাবতলীতে ভিড়

আগামীকাল শুক্রবার সকালে থেকে ১৪ দিনের লকডাউন শুরুর আগে আজ বৃহস্পতিবার রাতেও ঢাকা ছাড়ছেন অনেকেই। এছাড়াও, গাবতলী দিয়ে ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছেন অনেকেই। সবমিলিয়ে লকডাউনের আগে আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল জুড়ে রয়েছে অসংখ্য মানুষ।
গাবতলীতে সন্ধ্যার পর থেকে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যেতে ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

আগামীকাল শুক্রবার সকালে থেকে ১৪ দিনের লকডাউন শুরুর আগে আজ বৃহস্পতিবার রাতেও ঢাকা ছাড়ছেন অনেকেই। এছাড়াও, গাবতলী দিয়ে ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছেন অনেকেই। সবমিলিয়ে লকডাউনের আগে আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল জুড়ে রয়েছে অসংখ্য মানুষ।

গাবতলীতে সন্ধ্যার পর থেকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যেতে সেখানে ভিড় করেছে হাজার হাজার মানুষ। তাদের বেশিরভাগই শ্রমজীবী মানুষ।

টার্মিনালের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন পরিবহনের টিকেটের দাম দ্বিগুণ। অনেক যাত্রী আবার টিকিট পাচ্ছেন না।

রঞ্জিত চন্দ্র, নিমাই চন্দ্র সহ পাঁচ জনকে পাওয়া গেল যারা কুড়িগ্রাম যাবেন। কেরানীগঞ্জ এলাকায় রিকশা চালান তারা।

রাত সাড়ে নয়টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা হলে তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এক ঘণ্টা ধরে তারা টিকেটের জন্য ঘুরছেন। আগে যে ভাড়া ৬০০ টাকা ছিল, কাউন্টারে সে ভাড়া এখন ১২০০ টাকা।

সেখানে নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধি। ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কথা থাকলেও, সব সিটেই যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।

রঞ্জিত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘লকডাউনের কারণে ঢাকা ছাড়ছি। এ সময় গ্রামের বাড়ি গিয়ে থাকব।’

বাসের ভাড়া দ্বিগুণ চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

কামরাঙ্গীরচরের আলমগীর তার স্ত্রীসহ বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন রংপুরের বদরগঞ্জ যাওয়ার জন্য।

তিনি জানান, কামরাঙ্গীরচরে একটি  বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি একটি মেসে খাওয়ান। লকডাউনে মেসের বাসিন্দারা থাকছে না। তাই বাধ্য হয়ে তিনিও চলে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে।

রাতের দিকে বাস কমে যাওয়ায় বিকল্পভাবে ঢাকা ছাড়তে গাবতলী ব্রিজের উপর অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

ঈদের পরের রাতে কত মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন জানতে চাইলে শ্যামলী পরিবহনের গাবতলী ব্রাঞ্চের ম্যানেজার রঞ্জন ঘোষ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান,  লকডাউনের আগে ঢাকায় যেমন ফিরছেন অনেক, তেমন ঢাকা থেকে চলে যাচ্ছেন অনেকেই।

যারা যাচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই শ্রমজীবী ও দিনমজুর বলে জানান তিনি।

ভোর ছয়টা থেকে লকডাউনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, যে সব এলাকায় গাড়ি ভোরের মধ্যে পৌঁছাতে পারবে না বলে মনে হয়েছে, সেসব এলাকার গাড়ি রাতে ছাড়া হয়নি।

তবে, ভোর পর্যন্ত অন্যান্য কোম্পানির গাড়ি গাবতলী ছাড়বে।

এর মধ্যে, দিগন্ত পরিবহণ, সৌহার্দ্য পরিবহণ, শাহ মোকাম পরিবহনকে যাত্রী ওঠাতে দেখা যায়।

বাসের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিকল্প পদ্ধতিতে ঢাকা ছাড়তে গাবতলী ব্রিজের উপরও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় অনেককে।

এদিকে, গাবতলী বাস টার্মিনালের বিপরীত পাশে পর্বত সিনেমা হলের সামনে দেখা হয় রবিউল ইসলাম ও তার ভাই মোহাম্মদ কবিরের সঙ্গে। তারা বাড়িতে ঈদ করে ঢাকায় এসেছেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে তারা জানান, তারা রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালের কর্মচারী। ঈদের ছুটিতে বগুড়ায় গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। আগামীকাল সকালে ডিউটি আছে বলে চার দিন পর আবার ঢাকায় চলে এসেছেন।

এদিকে, ঈদ শেষে ঢাকায় ফেরা মানুষদের জন্য গাবতলীতে আছে যথেষ্ট বাস ও সিএনজি। তবে, সিএনজির ভাড়া অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি চাওয়া হচ্ছে।

ঈদ শেষে এবং লকডাউনের আগে ঢাকায় অসংখ্য লোক আসছে উল্লেখ করে সিএনজি চালক জামিল হোসেন (৪৫) দ্য ডেইলিস স্টারকে বলেন, ‘এমনিতেই ঈদের সময় চলছে। আবার কাল থেকে ১৪ দিনের লকডাউন। সে সময় বউ বাচ্চা নিয়ে খেতে হবে তো। তাই, ভাড়া বেশি।’

গাবতলী থেকে যত্রাবাড়ি পর্যন্ত অন্যান্য সময় ৩০০ টাকা ভাড়া হলেও, এখন তিনি ৫০০ টাকার কমে যাবেন না বলে জানালেন।

Comments

The Daily Star  | English

Police see dead man running

Amin Uddin Mollah is dead and buried for two years and 10 months.

4h ago