বিয়ে করলেন র্যাবের গুলিতে পা হারানো সেই লিমন
বিয়ে করেছেন র্যাবের গুলিতে পা হারানো সেই লিমন হোসেন। কনে যশোরের অভয়নগর উপজেলার সরখোলা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম টিটোর বড় মেয়ে রাবেয়া বসরী (১৯)।
আজ শুক্রবার দুপুরে কনের বাড়িতে দুই লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে লিমন হোসেনের বাবা-মা ও নিকট আত্মীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
লিমন হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাবা-মায়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করেছি। আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে হবে।' আজ জুমার নামাজের আগে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
লিমন বলেন, 'আমার এ পর্যন্ত আসার পেছনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্যারসহ বাংলাদেশের সব গণমাধ্যমকর্মী ও মানধবাধিকারকর্মীদের অবদান রয়েছে। ঝালকাঠির সাংবাদিকদের কথাও স্মরণীয়। আমার বিয়েতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্যার আসতে চাইলেও অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি। তার কাছে দোয়া চেয়েছি। আমার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কথা জেনেও রাবেয়া বসরী আমাকে মনে-প্রাণে মেনে নিয়েছে।'
কনে নওয়াপাড়া কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রাবেয়া বসরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'লিমন জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। সংগ্রাম করে নিজের ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আশা করি, দাম্পত্য জীবনে তিনি আরও দায়িত্বশীল হবেন। আমি সবকিছু বুঝেই বিয়ে করেছি, দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।'
রাবেয়া বসরীর চাচা আহসান হাবিব ডেইলি স্টারকে বলেন, 'লিমনের একটি পা নেই জেনেও তার যোগ্যতার বিচারে আমাদের মেয়ের বিয়ে দিয়েছি।'
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হোসেন এই বিয়ের মধ্যস্থতা করেন।
ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে লিমন হোসেন। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বাড়ির কাছের মাঠে গরু আনতে গিয়ে র্যাবের গুলিতে আহত হন কলেজছাত্র লিমন হোসেন। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে তার বাম পা হাঁটু থেকে কেটে ফেলা হয়। এতে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান লিমন।
এরপর ২০১৩ সালে পিরোজপুরের কাউখালী কাঁঠালিয়া পিজিএস বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন লিমন। ২০১৮ সালে ঢাকা সাভারে গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে শিক্ষা সহকারী পদে যোগদান করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আইন বিভাগের সহকারী প্রভাষক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন লিমন হোসেন।
Comments