মাধ্যমিক শিক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম বাংলাদেশ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। প্রতিকী ছবি
বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। প্রতিকী ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের (সেকেন্ডারি এডুকেশন লেভেল) শিক্ষার সমতুল্য দক্ষতাহীন ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীর সংখ্যা সবচেয়ে কম।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও দ্য এডুকেশন কমিশনের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মাধ্যমিক পর্যায়ের দক্ষতা বলতে বোঝায় প্রথাগত পড়তে জানা ও অংক জানার দক্ষতা, যেগুলো স্কুলে শেখানো হয়।

ওয়ার্ল্ড স্কিলস ক্লকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ৫৮ শতাংশ বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীর এ ধরনের দক্ষতা নেই।

দ্য ওয়ার্ল্ড স্কিলস ক্লক হচ্ছে ইউনিসেফ, দ্য এডুকেশন কমিশন, জেনইউ এবং ওয়ার্ল্ড ডাটা ল্যাবের একটি সমন্বিত উদ্যোগ। এটি একটি ইন্টারেকটিভ ওয়েব টুল, যার মাধ্যমে বৈশ্বিক শিক্ষা ও দক্ষতা সংকটের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পূর্বাভাষের ভিজ্যুয়াল রূপ পাওয়া যায়।

আজ শুক্রবার বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসের প্রাক্কালে ইউনিসেফ ও দ্য এডুকেশন কমিশন এই ক্লক ও একটি নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ওই প্রতিবেদন অনুসারে, আফগানিস্তানের ৯৩ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ-তরুণীর মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার সমতুল্য দক্ষতা নেই। তালিকার পরবর্তী অবস্থানে ভুটান (৮৯ শতাংশ), পাকিস্তান (৮৪ দশমিক ৫ শতাংশ), নেপাল (৮১ দশমিক ৭ শতাংশ), ভারত (৭৩ শতাংশ) ও শ্রীলঙ্কা (৬১ দশমিক ৫ শতাংশ)।

তবে এক দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীরা ডিজিটাল দক্ষতার দিক থেকে ভুটান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার থেকে পিছিয়ে আছে।

ডিজিটাল দক্ষতা বলতে বোঝানো হয়, প্রযুক্তি বুঝতে পারা ও এর ব্যবহার জানা। এটি পরিমাপ করার জন্য তরুণ-তরুণীরা কম্পিউটারের কিছু প্রাথমিক কাজ জানেন কি না, সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। এসব কাজের মধ্যে আছে ফাইল ও ফোল্ডার কপি এবং মুভ করা, একটি ডকুমেন্টের মধ্যে কপি ও পেস্ট টুল ব্যবহার করা, অ্যাটাচমেন্টসহ ইমেল পাঠানো এবং একটি কম্পিউটার থেকে অন্যান্য ডিভাইসে ফাইল আদান-প্রদান করা।

প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ তরুণ-তরুণীর ডিজিটাল দক্ষতা নেই।

দক্ষিণ এশিয়ায় এ দিক দিয়ে কেবল আফগানিস্তান (৯৯ শতাংশ), নেপাল (৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ) ও পাকিস্তান (৯০ দশমিক ২ শতাং) বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে আছে।

'রিকভারিং লার্নিং: আর চিলড্রেন অ্যান্ড ইউথ অন ট্র্যাক ইন স্কিলস ডেভেলপমেন্ট?' শীর্ষক প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশসহ ৯২টি দেশের ৭৫ শতাংশ তরুণ-তরুণীর চাকরি পাওয়ার উপযোগী দক্ষতা নেই। 

প্রতিবেদন মতে, স্কুলে যায় না এরকম তরুণ-তরুণীর আধিক্য ও মাধ্যমিক পর্যায়ের দক্ষতা অর্জনের নিম্নহার এর জন্য দায়ী। ফলে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দক্ষতার সংকট প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে।

ইউনিসেফের শিক্ষা বিষয়ক পরিচালক রবার্ট জেনকিন্স বলেন, 'সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি প্রগতি ও সাফল্যের জন্য শিশু এবং তরুণ-তরুণীদের একটি অনুপ্রাণিত ও দক্ষ প্রজন্ম অত্যন্ত জরুরী। তা সত্ত্বেও, বিশ্বজুড়ে শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতার কারণে বেশিরভাগ শিশু ও তরুণ-তরুণী অশিক্ষিত, অনুপ্রেরণাহীন ও অদক্ষ অবস্থায় রয়েছে, যেটি অনুৎপাদনশীলতার মূল কারণ।'

দ্য এডুকেশন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক লিসবেট স্টিয়ার জানান, এই ক্লকটি সারা বিশ্বের তরুণ-তরুণীদের দক্ষতা অর্জনের হারের ওপর নজর রাখার ক্ষেত্রে এবং এই প্রজন্মকে ভবিষ্যৎ জীবনে উন্নতি করার জন্য যেকোনো জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন হলে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Finance adviser sees no impact on tax collection from NBR dissolution

His remarks came a day after the interim government issued an ordinance abolishing the NBR and creating two separate divisions under the finance ministry

32m ago