মুন্সিগঞ্জে প্রখ্যাত সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ স্মরণসভা

ছবি: স্টার

বরেণ্য সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফয়েজ আহমদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

আজ রোববার রাত সাড়ে ৭টায় মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ উপলক্ষে একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। 

স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, 'ফয়েজ আহমদ এখনও প্রাসঙ্গিক। অসাম্যের সমাজ তাকে পীড়া দিত। ফয়েজ আহমদের কর্ম ছিল সাধারণ মানুষের জন্য, তার সাংবাদিকতা ছিল গরীব মেহনতি মানুষের পক্ষে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফয়েজ আহমদের সংগ্রাম ছিল লুটেরা শ্রেণির বিপক্ষে।'

ফয়েজ আহমদের জীবন ও কর্ম নিয়ে সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেনের লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মু. আবু সাঈদ সোহান।

মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শহীদ-ই-হাসান তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক মামুনুর রশীদ খোকার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সফিক ইসলাম, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির মুন্সিগঞ্জ শাখার সভাপতি হামিদা খাতুন, সাবেক সভাপতি শ ম কামাল হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘ, মুন্সীগঞ্জ শাখার সভাপতি মুজিব রহমান, কবি অভিজিত রায় রঘু, কবি যাকির সাইদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মুন্সীগঞ্জ শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট সুজন হায়দার জনি, স্থানীয় দৈনিক রজতরেখা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক গোলাম আশরাফ খান উজ্জ্বল, সাংবাদিক ও শিক্ষক চাকলাদার এম তানজিল হাসান, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমানসহ আরও অনেকে।

সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ ১৯৫২ সালে অসাম্প্রদায়িক লেখক সংগঠন 'পাকিস্তান সাহিত্য সংসদ'-এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে জাতীয় সংবাদ সংস্থার প্রথম প্রধান সম্পাদক নিযুক্ত হন। তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। আশির দশকে গঠিত জাতীয় কবিতা উৎসবের প্রথম ৫ বছর আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৭৬ সালে শিশু সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন এবং ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একুশে পদক প্রদান করে।

সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধ শক্তি ও জামাতে ইসলামীর বিরুদ্ধে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। এই কমিটি বাংলাদেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে ১৯৯২ সালে গণআদালত তৈরি করে। তিনি সেই গণআদালতের ১১ জন বিচারকের মধ্যে অন্যতম একজন বিচারক ছিলেন।

ফয়েজ আহমদ ছড়াকার হিসাবেও প্রসিদ্ধি পেয়েছিলেন। মধ্যরাতের অশ্বারোহী ছাড়াও তার ''সত্যবাবু মারা গেছেন'' শীর্ষক বইটি প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রথম প্রধান সম্পাদক নিযুক্ত হন। পরে দৈনিক বঙ্গবার্তার প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগদান করেন এবং বিভিন্ন প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেন।

৮০'র দশকে ফয়েজ আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ বছর ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ বছর সিণ্ডিকেটের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। নব্বই এর দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় সে সময়কার দুই বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে একসাথে মুখোমুখি বসানোর পেছনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন ফয়েজ আহমদ।

ফয়েজ আহমদ ২ মে ১৯২৮ সালে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাসাইলভোগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ৮৪ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত রোগে বারডেম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda leaves London for Dhaka in air ambulance

Fakhrul urges BNP supporters to keep roads free, ensure SSC students can reach exam centres

9h ago