পাঠ্যবইয়ে একজন ব্যক্তি ছাড়া আর কারো নাম নেই: ফখরুল

আওয়ামী লীগ মওলানা ভাসানীকে স্বীকার করতে চায় না অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটা কথা বলতে অনেকে ভুলে যায় তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত মওলানা ভাসানীর লেখা ও আব্দুল হাই শিকদার সম্পাদিত মাও সে-তুং এর দেশ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, এই সরকার এখন যারা জোর করে বসে আছে আমাদের ওপর তারা মওলানা ভাসানীকে স্বীকার করতে চায় না। একবারের জন্যও কখনো স্বীকার করে না। ভাবতে অবাক লাগে এই মহান নেতা যিনি বাংলাদেশে খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তার সারা জীবন দিয়েছেন। তিনি আসামে আন্দোলন করেছেন সাধারণ মানুষের জন্য। এক সময় তিনি কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। পরবর্তীকালে মুসলিম লীগ করেছেন। একটা কথা বলতে অনেকে ভুলে যায় তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি প্রতি মুহূর্তে খোঁজ করেছেন কোন সংগঠন করলে এই জনগণের মুক্তি হবে। পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি করেছেন।
সর্বশেষ তিনি তার মৃত্যুর আগে বলেছিলেন, আমি তো চলে যাচ্ছি। এর পরে তোমরা জিয়াউর রহমানের হাত শক্ত করে ধরো। তার মাধ্যমেই তোমাদের এ দেশে মুক্তি আসতে পারে। আজ মওলানা ভাসানীকে আমরা স্মরণ করি না, বলেন ফখরুল।
এ সময় মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ফাউন্ডেশন গঠনের প্রস্তাব করেন ফখরুল।
তিনি আরও বলেন, এখন স্কুলের বাচ্চাদের জন্য যে পাঠ্যবই করেছে সেখানে একজন ব্যক্তি ছাড়া আর কারো নাম নেই। এই দেশের স্বাধীনতা, সংগ্রাম, মানুষের পরিবর্তনের যে ব্যবস্থা এর কোনোটাতেই কারো কোনো অবদান নেই। একমাত্র একজনের সব অবদান। আজকে বাংলাদেশে শোষণ ছাড়া কিছু নেই। প্রতিটা ক্ষেত্রে শোষণ, লুণ্ঠন। এসব কথা বলতে গেলে বর্গিদের কথা মনে পড়ে। এ দেশে আসতো, সব লুট করে নিয়ে চলে যেত। এখনো সেই একইভাবে লুণ্ঠন চলছে। একটা একটা প্রজেক্ট ধরলে দেখা যাবে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমরা বলতে পারছি না। বললেও সেটা প্রকাশ হচ্ছে না।
নতুন প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব-পুরুষরা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, এমনকি শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবরা পাকিস্তান করেছিলেন। পরবর্তীতের আমরা যুদ্ধ সংগ্রাম করে বাংলাদেশ করেছি। এখনকার নতুন প্রজন্মকে এই বাংলাদেশকে বাসযোগ্য করতে হবে। বাংলাদেশের এই শোষণ দূর করতে হবে। খেটা খাওয়া মানুষের অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন সমাজতন্ত্রের কথা অনেকেই বলে না। সমাজতন্ত্র কোথায় এখন? সমাজতন্ত্র খুঁজে পাওয়া যায় না। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়েছে। সব কিছুর একটা পরিবর্তন হয়ে এসেছে। আমাদের নিজেদের পথটা খুঁজে বের করতে হবে। প্রথম দরকার হচ্ছে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই অধিকার আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, সে জন্য আমরা নির্বাচনে বিশ্বাস করি। সেই নির্বাচনে যদি আমরা যেতে চাই, তাহলে একটি সুষ্ঠু-অবাদ-নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার হবে।
Comments