সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতির বিধান কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

সরকারি চাকরি আইন ২০১৮'র একটি ধারার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। এই ধারা অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারণে গ্রেপ্তারের আগে পুলিশকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়।

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮'র ৪১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, 'কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেফতার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।'

হাইকোর্ট সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে 'কেন এই আইনের ৪১ নম্বর ধারা বাতিল করা হবে না' জানতে চেয়ে রুল জারি করে ৪ সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন।

সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রেগানের দায়ের করা একটি রিট পিটিশনের শুনানিতে হাইকোর্ট 'কেন সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা ও নাজিম উদ্দিনকে পদায়ন না করতে যথাযথ নির্দেশ দেওয়া হবে না', তা বিবাদীপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছে। বিবাদীদের বিরুদ্ধে গত বছর কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রেগানকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। 

সাংবাদিক নির্যাতনের ওই ঘটনায় আরেকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাহাতুল ইসলামকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সম্প্রতি তাকে বরিশালে পদায়ন করা হয়েছে।

গতকালের রুলে এস এম রাহাতুল ইসলামকে বরিশালে পদায়ন করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

আরিফুল ইসলামের আইনজীবী ইশরাত হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ২০২০ এর মার্চের ঘটনার পর সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা সবাই আইনের দৃষ্টিতে পলাতক বিবেচিত।

সুলতানা, রিন্টু, রাহাতুল এবং মন্ত্রীসভা সচিব, স্বরাষ্ট্র, আইন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।   

সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রেগান সরকারি চাকরি আইনের উল্লেখিত ধারার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে রিট পিটিশন দায়ের করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জানতে চান।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।

আরিফুলের আইনজীবী ইশরাত হাসান অভিযোগ করেন, গত বছরের ১৪ মার্চ ভোরবেলা জেলা কমিশনার সুলতানা পারভীনের নির্দেশে তিনজন সহকারী কমিশনার কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের একটি মোবাইল কোর্টের নেতৃত্ব দেন এবং তারা আরিফুলের বাসায় কথিত মাদক বিরোধী অভিযান চালান। এসময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

গত বছরের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট আরিফুলের দায়ের করা মামলা গ্রহণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন, যেখানে তিনি সুলতানা, ৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একাধিক আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগ আনেন।

ইশরাত জানান, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা আইনের দৃষ্টিতে পলাতক, কারণ তারা এখনো মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি। পুলিশ তাদেরকে সরকারি চাকরি আইনের ৪১ নং ধারার কারণে গ্রেপ্তার করতে পারছে না।

তিনি আরও জানান, আইনের এই ধারাটি বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানের পরিপন্থী।

প্রতিবেদনটি অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

1h ago