সহজেই জানা যাবে বৈধ অস্ত্রের মালিকানা তথ্য

দেশে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার রোধে অস্ত্র বিক্রয় ও লাইসেন্সিং পদ্ধতি একটি অটোমেশন সিস্টেমের অধীনে নিয়ে এসেছে সরকার।

পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) গত ২২ মার্চ ফায়ারআর্মস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নামে একটি সফটওয়্যার চালু করেছে। যার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ কয়েক সেকেন্ডেই অনলাইনে আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধতা যাচাই করতে পারে।

স্পেশাল ব্রাঞ্চ ২০১৮ সালের নভেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে এই সফটওয়্যারটি ডিজাইন করে। এর আগে একই বছর ডিসি পর্যায়ের সম্মেলনে এক উপ-কমিশনার (ডিসি) অটোমেশন সিস্টেম চালু করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান।

এসবির বিশেষ সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুস সালাম জানান, পুলিশ প্রশাসন আগে ম্যানুয়ালি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ও তদারকির রেকর্ড রাখতেন।

তিনি বলেন, 'কিন্তু, এই সফটওয়্যারটি প্রতিটি বৈধ গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্র ট্র্যাক করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রকে বৈধ বলে দাবি করার চেষ্টা করে, তখন আমরা তার সিরিয়াল নম্বর ইনপুট দিয়ে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে এটি যাচাই করতে পারি।

এটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার কমাবে, বলেন তিনি।

বর্তমানে, রাইফেল বা শটগান বহনকারী ব্যক্তিদের ডিসিতে ম্যানুয়ালি আবেদন করার জন্য এসবিতে আবেদন পাঠাতে হয়। এসবি থেকে ইতিবাচক রিপোর্টের পর, ডিসি লাইসেন্স দেন।

পিস্তল বা রিভলবারের লাইসেন্স দেওয়ার জন্য অবশ্য এসবি ও ডিসি থেকে অনুমোদনের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।

এসবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যেই বৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। শিগগিরই তাদের এ বিষয়ে নির্দেষিকার ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।'

এর আগে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবসায়ী ও অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান সিন্ডিকেটের মধ্যে সংযোগ খুঁজে পায়। তারা ২০১৮-২০১৯ সালে দেশে কমপক্ষে ২০০ অবৈধ অস্ত্র পাচারের তথ্য পেয়েছিল।

কর্মকর্তা জানান, এই অস্ত্র ব্যবসায়ীরা বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র আমদানি করে। তারপর বারকোড সরিয়ে তা কালোবাজারে অপরাধীদের কাছে বিক্রি করে দেয়।

একই সময়ে, সিটিটিসি ইউনিট অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির জন্য ৯ জন অনুমোদিত অস্ত্র বিক্রেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।

এই সিস্টেম মোট বৈধ আমদানি ও আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির হিসাব রাখতে পারে। কর্মকর্তারা বলেন, এটি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রেতার মাধ্যমে আমদানি বা বিক্রি করা প্রতিটি অস্ত্র ও গুলির রেকর্ড রাখবে।

দেশে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৪ হাজার বৈধ অস্ত্রধারী ছিল।

এসবির এক কর্মকর্তা জানান, আইন অনুযায়ী, বৈধ অস্ত্রধারীরা আগ্নেয়াস্ত্র কেনার পর তাদের অবস্থান পরিবর্তন করলে অবশ্যই স্থানীয় পুলিশকে জানাতে হবে। কিন্তু, প্রায়ই তারা তা করে না। ফলে তাদের ম্যানুয়ালি ট্র্যাক করা কঠিন হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, 'কিন্তু এখন স্থানীয় পুলিশ এটি পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে।'

সফটওয়্যারটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের রেকর্ডও রাখতে পারে।

আর্মস ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাসির আহমেদ জানান, তারা সিস্টেম সম্পর্কে শুনেছেন এবং এসবি থেকে ব্রিফিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন।

গত বছরের ১২ অক্টোবর, এসবি পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ডিসি কার্যালয়গুলোকে এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করার অনুরোধ জানায়।

একবার ডিসি জড়িত হয়ে গেলে, আগ্নেয়াস্ত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়া যেতে পারে।

অনুরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তারা এ বিষয়ে কাজ করছেন।

অনুবাদ করেছেন সুমন আলী

Comments

The Daily Star  | English
rising gas prices impact in Bangladesh 2025

Rising gas prices threaten our investment prospects

The previous government not only turned the country into a net importer of energy, but also initiated a process to make it an import-dependent.

8h ago