সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ বৈধ নয়: রিজওয়ানা হাসান
চট্টগ্রামের সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্পটি আইনিভাবে বৈধ নয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, 'বাংলাদেশে আইনি এবং বৈধভাবে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হলে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের চেষ্টা করা হয়।'
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত এলাকাটি পরদর্শন করে চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি শিরিষতলা এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, 'রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে দেশের সংরক্ষিত এলাকা ধ্বংস করে ইতিহাস, সংস্কৃতি বিলুপ্ত করে হাসপাতাল নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে।'
তিনি বলেন, '২০০৯ সালের সিডিএর মাস্টার প্ল্যানে সিআরবিকে হেরিটেজ-জোন ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এই এলাকা ব্যবহার করা যাবে না। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী সিআরবি এলাকা সংরক্ষিত, এখানে কোনো হাসপাতাল নির্মাণের সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর এই বিষয়ে তাদের মতামত দিয়েছে।'
'সিডিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এবং প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষণ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সিআরবিতে যে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা চট্টগ্রামবাসী প্রতিরোধ করতে ইতোমধ্যে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। যা বিগত ৯ মাস ধরে চলমান আছে।'
এই আইনজীবী বলেন, 'এই আন্দোলনের শুরু থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে বেলা। ইউনাইটেড হাসপাতাল নামে যে প্রাইভেট হাসপাতাল নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে এই ধরনের হাসপাতাল চট্টগ্রামে অনেক রয়েছে। এগুলোর দ্বারা সাধারণ জনগণ উপকৃত হবে না।'
তিনি বলেন, 'জনগণের স্বার্থ জড়িত এইরকম স্থানে আইন ভঙ্গ করে এবং প্রচলিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে হাসপাতাল নির্মাণ করা যাবে না।'
হাসপাতাল নির্মাণের জন্য কোনো সেবা সংস্থা অনুমোদন দিলে বেলা এর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট মামলা করবে বলে জানান এই আইনজীবী।
আমরা আশা করছি এর আগেই চট্টগ্রামবাসী আন্দোলনের মাধ্যমে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগকে প্রতিহত করবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে যথাযথ আন্তরিকতার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন, বলেন বেলা প্রধান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেলা চট্টগ্রামের নেটওয়ার্কের সদস্য ও সাংবাদিক আলীউর রহমান, কাজী আবুল মনসুর, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হাসিনা আকতার টুনু, খেলাঘরের সংগঠক বনবিহারী চক্রবর্তী, বেলা চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কর্মকর্তা জিয়া কল্লোল ও ফারমিন ইলাহী ইরা প্রমুখ।
Comments