সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে বেনাপোল স্থলবন্দর

ছবি: সংগৃহীত

৪৮ বছর পর দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরো বন্দর এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে ৩৭৫টি সিসি ক্যামেরা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। একইসঙ্গে পণ্য আমদানি থেকে শুরু করে খালাস প্রক্রিয়া নজরদারিতে থাকবে।

১৯৭২ সালে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়। ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশের ৭০ শতাংশ পণ্য আমদানি হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে বেনাপোল কাস্টমস হাউস, ইমিগ্রেশনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনেক আগেই সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। তবে, বেনাপোল বন্দরকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়নি। ফলে, বন্দর থেকে পণ্য চুরি, মাদক পাচার, রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড, চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাতে নিরাপত্তা কর্মীদের হত্যাসহ নানান অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে থাকে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন, আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতি দীর্ঘদিন ধরে বন্দরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জোর দাবি করে আসছিল। বন্দরের এন্ট্রি পয়েন্ট, কার্গো শাখা, বাইপাস সড়ক, বিভিন্ন শেড, ভারতীয় ট্রাক টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক বাস ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনালসহ বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বসছে ৩৭৫টি আধুনিক মানের সিসি ক্যামেরা। গতকাল থেকে প্রথম ধাপে মাটির নিচ দিয়ে ক্যাবল সংযোগ, কনক্রিটের পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। স্মার্ট টেকনোলজি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন।

বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কাজিম উদ্দিন গাজী জানান, পণ্য বহনকারী ট্রাক চালকরা বন্দর এলাকায় চোরের উৎপাতে ট্রাক রেখে রাতে ঘুমাতে পারতেন না। ট্রাকের ব্যাটারি, চাকাসহ মালামাল চুরি হতো। এখন সিসি ক্যামেরা স্থাপনে অন্তত চোরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, বন্দর টার্মিনাল এলাকায় ভারতীয় ট্রাক থেকে ত্রিপল কেটে পণ্য চুরি হচ্ছে। আমদানি পণ্য চুরিসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে আমদানিকারকরা এ পথে পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। সিসি ক্যামেরায় নিরাপত্তা পেলে তারা আবার ফিরে আসবে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে ৪০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয় প্রতিবছর। এছাড়া, আট হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। এ বন্দর থেকে সরকারের ৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়। সিসি ক্যামেরা স্থাপিত হলে বন্দরে পণ্য চুরি কমবে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল জানান, ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বন্দরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। ৫-৬ মাসের মধ্যে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে। বন্দরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ পণ্য আমদানি থেকে শুরু করে খালাস পর্যন্ত পুরোটা বন্দরের নজরদারিতে থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

1h ago