৫৭ লাখ টাকার ৪০ মিটার সেতু!

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার কলাবাগান এলাকায় গাজীখালী নদীর উপর নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন সেতুটি গত বছর বর্ষায় পানির স্রোতে ভেঙে যায়। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সিংগাইর উপজেলা এবং ঢাকার ধামরাই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। ভোগান্তিতে পড়ে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় গাজীখালী নদীর উপর নির্মিত সেতুটি গত বছর বর্ষায় পানির স্রোতে ভেঙে যায়। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার কলাবাগান এলাকায় গাজীখালী নদীর উপর নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন সেতুটি গত বছর বর্ষায় পানির স্রোতে ভেঙে যায়। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সিংগাইর উপজেলা এবং ঢাকার ধামরাই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। ভোগান্তিতে পড়ে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সিংগাইর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে গাজীখালী নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়। ৫৬ লাখ ৫৮ হাজার ১০৬ টাকা ব্যয়ে ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নামকরণ করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেনের নামে।

উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের কলাবাগান মাজার সংলগ্ন এলাকার এই সেতুটি ২০১৭ সালের ১২ মে উদ্বোধন করেন মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির অল্প কিছু অংশ পানিতে হেলানো অবস্থায় পড়ে আছে। বাকি অংশ পানিতে ডুবে আছে বলে জানান স্থানীয়রা।

কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, গত বছর বন্যার পানির স্রোতে সেতুটির পূর্ব পাশের মাটি ধসে যায়। এর কিছুদিন পর সেতুটি নদীতে ভেঙে পড়ে।

স্থানীয় মানুয়ার হোসেন বলেন, 'সিংগাইর এলাকাটি সবজি উৎপাদনে জন্য প্রসিদ্ধ। এই এলাকায় উৎপাদিত সবজি রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়। কৃষকের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই তিন বছর আগে এখানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু, এক বছরের বেশি সময় ধরে সেতুটি ভেঙে গেলেও, এর সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।'

তালেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রমজান আলী জানান, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এবারের বর্ষা মৌসুমে সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর, ইরতা, নতুন ইরতা, কাংশা, ধামরাই উপজেলার খরারচর, বহতকূল, আটিমাঠাইনসহ ১৫টি গ্রামের জনসাধারণকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতেও সমস্যা হচ্ছে। কৃষকদের সাত থেকে আট কিলোমিটার ঘুরে সিংগাইর উপজেলা সদর হয়ে রাজধানীতে যেতে হচ্ছে। এতে, পরিবহন খরচ গুণতে হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ।

জানতে চাইলে সিংগাইর উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ রুবাইয়াত জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় কর্তৃক নির্মিত সেতুটির ফাউন্ডেশন ছিল না। পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এ কারণেই পানির স্রোতে সেতুটি ভেঙে গেছে। ওখান থেকে ভাঙা সেতুটি অপসারণ করে, সেখানে একটি নতুন সেতু করতে হবে।'

'ইতোমধ্যেই পৌনে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৭ মিটার দীর্ঘ সেতুর অনুমোদন হয়েছে। আগামী শুষ্ক মৌসুমে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Default loans

High bad loans a 'big threat' to financial sector: BB

The central bank said in quarterly review on money and exchange rate

1h ago