৬ মাসেই ভেঙে যাচ্ছে সাড়ে ৩ কোটি টাকার সড়ক

পটুয়াখালীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কার্পেটিং সড়কটি ৬ মাসের মধ্যে ভাঙনের কবলে পড়েছে। দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পুকুরজানা বাজার পর্যন্ত ৫.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির নির্মাণ কাজ চলতি বছরের মার্চে শেষ হয়।
তবে, ৬ মাসের মধ্যে সড়কটির প্রায় ১০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দু'টি স্থানে বড় গর্ত হওয়ায় এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এলজিইডি সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ওপর 'বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (পটুয়াখালী-বরগুনা জেলা)' আওতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২১ সালের মার্চে করোনার কারণে লকডাউন থাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যেনতেনভাবে কাজ শেষ করে। নদীর তীরে পাইলিংয়ের দাবি জানানো হলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।
তবে, এ বিষয়ে ঠিকাদার মাহফুজুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তেতুলবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা সেকান্দার বয়াতী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সড়কটি নির্মাণকালে আমরা নদীর তীরে পাইলিংয়ের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা শোনেনি। বর্ষাকালে নদী ভাঙন তীব্র হলে সড়কটিও ভাঙতে শুরু হয়। এতে আমাদের বাড়িঘর হুমকিতে পড়েছে। এখনো পাইলিং করা হলে সড়কটি রক্ষা করা সম্ভব।'
এ প্রসঙ্গে এলজিইডি'র দুমকী উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান বলেন, 'নদীর তীরে পাইলিংসহ সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজ শুরু হলে এটি ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে।'

সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন নির্মিত সড়কটির প্রায় ১০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়াও, সড়কটির দুটি স্থানে নদীর পানিতে গর্ত হয়ে বিচ্ছন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় অটোরিকশা চালকরা গর্ত দুটিতে মাটি দিয়ে ভরাট করে সড়কটি রক্ষার চেষ্টা করছেন।
পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গাজী নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি এলজিইডিকে জানিয়েছি। সড়কটি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি।'
দুমকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ আবদুল্লাহ শাদীদ বলেন, 'ভাঙন কবলিত রাস্তাটি আমি পরিদর্শন করেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে এলজিইডিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাস্তার প্রাক্কালনে পাইলিং ধরা না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।'
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments