শুটিং ও শিকার ছাড়া কানাডিয়ানদের বন্দুকের প্রয়োজন নেই: ট্রুডো

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ছবি: রয়টার্স

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মতে, দেশটির উচিৎ হাতে বহনযোগ্য সব ধরনের বন্দুক কেনাবেচার ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।

আজ মঙ্গলবার বিবিসি জানায়, ট্রুডোর সরকার একটি নতুন আইন করতে যাচ্ছে, যার ফলে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কোনো ছোট আকারের ব্যারেলযুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র কেনা যাবে না।

এই আইনে যাদের কাছে ইতোমধ্যে লাইসেন্সযুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র আছে, তাদের ক্ষেত্রে রাতারাতি কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে দেশটিতে নতুন করে আগ্নেয়াস্ত্র কেনা অবৈধ বলে গণ্য হবে।

প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনায় ১৯ শিক্ষার্থী ও ২ শিক্ষক নিহতের কয়েকদিন পর ট্রুডোর কাছ থেকে এ ধরনের প্রস্তাব এলো।

গত সোমবার কানাডার পার্লামেন্টে এই বিলটি উত্থাপন করা হয়। পাস হলে দেশটিতে হাতে বহনযোগ্য অস্ত্র কেনাবেচা, স্থানান্তর ও আমদানি অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

ট্রুডো সাংবাদিকদের বলেন, 'শুটিংয়ের মতো খেলা ও শিকারের জন্য গুলি ছোড়া ছাড়া কানাডায় বসবাসকারী কারও দৈনন্দিন জীবনে বন্দুকের কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।'

'আমরা দেখছি বন্দুক সংশ্লিষ্ট সহিংসতা বেড়ে যাচ্ছে, তাই আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে থাকা', যোগ করেন তিনি।

এই আইন আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কানাডা সরকারের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হতে যাচ্ছে।

এই বিলে আরও প্রস্তাব রাখা হয়েছে, রাইফেলের কার্তুজকে এমনভাবে তৈরি করতে যাতে একবারে ৫ রাউন্ডের বেশি গুলি না থাকে।

যাদের কাছে বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স আছে, তারা যদি কখনো গৃহ-নির্যাতন বা কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হন, তাহলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো কানাডায় অস্ত্রের মালিকানাকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তবে দেশটিতে আগ্নেয়াস্ত্র বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে পল্লী অঞ্চলে।

কানাডায় ইতোমধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কঠোর নিয়ম রয়েছে এবং দেশটিতে এ ধরনের অঘটনের সংখ্যাও অনেক কম।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কানাডায় কেউ বন্দুক কিনতে চাইলে কর্তৃপক্ষ তার জীবনবৃত্তান্ত পরীক্ষা করে দেখে, তারপর ছাড়পত্র দেয়। এ ছাড়াও, আইন অনুযায়ী, বন্দুক সবসময় লক করা অবস্থায় রাখতে হবে এবং এতে গুলি ভরে রাখা যাবে না।

তবে কয়েকটি সহিংসতার ঘটনার পর সাম্প্রতিক সময়ে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর আইন প্রণয়নের আহ্বান এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

২০২০ সালের এপ্রিলে পুলিশের ছদ্মবেশে এক বন্দুকধারী নোভা স্কটিয়া অঞ্চলে ২২ ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেন।

এ ঘটনার অল্প কিছুদিন পর প্রেসিডেন্ট ট্রুডো ১ হাজার ৫০০ সামরিক গ্রেড ও অ্যাসল্ট অস্ত্র নিষিদ্ধ করেন।

নতুন বিলটি পাস হলে কানাডায় আর নতুন করে কেউ বৈধভাবে হাতে বহনযোগ্য আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে পারবেন না।

Comments

The Daily Star  | English
Rizvi criticizes PR system in elections

PR system a threat to democracy: Rizvi

Under the PR system, the party, not the people, will choose MPs, he says

2h ago