ফ্রান্স আজ বেছে নেবে ইইউপন্থি অথবা ইইউবিরোধী প্রেসিডেন্ট

ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় দ্বিতীয় রাউন্ড ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বহুল আলোচিত এই নির্বাচনে ২ প্রার্থীর একজন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, অন্যজন বিরোধী ন্যাশনাল র‌্যালি দলের সদস্য লে পেন।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থী লে পেন (বামে) ও ইমানুয়েল মাখোঁ। ছবি: রয়টার্স

ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় দ্বিতীয় রাউন্ড ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বহুল আলোচিত এই নির্বাচনে ২ প্রার্থীর একজন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, অন্যজন বিরোধী ন্যাশনাল র‌্যালি দলের সদস্য লে পেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যদি ইইউ বা ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থি বর্তমান প্রেসিডেন্টকে পরাজিত করে ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী ও উগ্র ডানপন্থি লে পেন নির্বাচিত হন তাহলে তা হবে 'রাজনৈতিক ভূমিকম্প'।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোটার জরিপে মাখোঁ কিছুটা এগিয়ে আছে। তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন লে পেন দলের কঠোর নীতি থেকে খানিকটা সরে এসে সুর নরম করলেও তিনি এখনো অনেক ভোটারের 'চোখের কাঁটা'।

তবে লে পেনের আচমকা বিজয়ের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কেননা, দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে তারা কাকে ভোট দেবেন সে বিষয়ে এখনো অনেক ভোটার সিদ্ধান্ত নেননি।

প্রতিবেদন মতে, কোনো প্রার্থীই এখন পর্যন্ত ভোটারদের মন জয় করতে পারেননি। তাই অনেক ভোটার বর্তমান প্রেসিডেন্টের ওপর ক্ষোভ থেকে তার বিরোধী প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।

এতে আরও বলা হয়, লে পেন যদি নির্বাচিত হন তাহলে ঘটনাটিকে ব্রিটেনের ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়া বা যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ী হওয়ার মতোই অপ্রত্যাশিত হবে।

আজ স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে তা রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।

এক ভোটার গণমাধ্যমকে বলেছেন, '২ প্রার্থীরই অনেক দুর্বলতা আছে। প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটার ইমানুয়েল মাখোঁকে খুবই অহংকারী মনে করেন। আর লে পেনকে মনে করে ভীতিকর।'

৪৪ বছর বয়সী মাখোঁ সতর্ক করে বলেছেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী লে পেন নির্বাচিত হলে দেশে 'গৃহযুদ্ধ' বেধে যাবে। কেননা, পেনের নীতির মধ্যে আছে জনসম্মুখে মুসলিম নারীদের হেডস্কার্ফ বা হিজাব নিষিদ্ধ করা। তাই তিনি এই উগ্র ডানপন্থির বিরুদ্ধে তাকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, জাতিগত বিদ্বেষের অভিযোগ অস্বীকার করে ৫৩ বছর বয়সী লে পেন বলেছেন, তার মূল লক্ষ্য দেশটির নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা। তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার এক সমাবেশে পেন বলেছেন, 'রোববার ভোটারদের সামনে সাধারণ প্রশ্ন—মাখোঁ না ফ্রান্স?'

সেই সমাবেশ থেকে এক জেলকর্মী গণমাধ্যমকে বলেন, 'পেন জনগণের খুব কাছের মানুষ। তিনি মানুষকে বেঁচে থাকার প্রেরণা দেন।'

তবে তার এমন ভাবনার বিরোধিতা করে মরক্কো-বংশোদ্ভূত এক ভোটার বলেছেন, 'পেন জাতিবিদ্বেষী মানুষ। তার সম্ভাব্য বিজয় নিয়ে চিন্তিত। আমার সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন।'

নির্বাচিত হলে পেন ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতিমালায় আমূল পরিবর্তন আনবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি নির্বাচিত হলে এর প্রভাব হবে সুদূর প্রসারী। তথন তার প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আগামী জুনে পার্লামেন্টারি নির্বাচনে দলের পর্যাপ্ত আসন নিশ্চিত করা।

Comments