জাহাজমারা যুদ্ধ: একটি ওয়্যারলেস বার্তা ও দুর্ধর্ষ অপারেশন
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বড় ধরনের যে কয়েকটি সফল অপারেশন হয়েছিল তার মধ্যে একটি ঐতিহাসিক জাহাজমারা যুদ্ধ। তখনো মুক্তিযুদ্ধে নিয়মিত বাহিনীর অভিযান পূর্ণ মাত্রায় শুরু হয়নি। দেশের বিভিন্ন স্থানে তখনো বিচ্ছিন্নভাবে গেরিলা হামলা করে যাচ্ছিলো মুক্তিবাহিনী।
সীমান্ত সংলগ্ন বিওপি বা বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট গুলোতে ইপিআর কিংবা ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধীনে বেশ কয়েকটি কোম্পানি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই বিওপিগুলোতে নিয়মিত বাহিনীর তীব্র আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পাকিস্তানি বাহিনী নিরবিচ্ছিন্নভাবে সড়ক ও নৌপথে অস্ত্র সরবরাহ করছিল সীমান্তবর্তী বিওপিগুলোতে। যেন অস্ত্র বা সামরিক সরঞ্জামাদির অভাবে সঙ্কটে না পড়তে হয়।
এমনই এক সরবরাহ ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর আগস্টের প্রথম সপ্তাহে নৌ-পথে উত্তরাঞ্চলে সামরিক সরবরাহ। যে সামরিক সরঞ্জামাদি বহনকারী জাহাজের উপর মুক্তিবাহিনীর সহযোগিতায় টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া বাহিনী এক দুর্ধর্ষ অপারেশনের মাধ্যমে হামলা চালিয়ে উদ্ধার করেছিল বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র।
যেভাবে পরিকল্পনা হয়েছিল জাহাজমারা যুদ্ধের
৫ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনীর একটি ওয়্যারলেস বার্তা ধরে ফেলেন মুক্তিবাহিনীর ইপিআরের সৈনিক মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত করিম। জানা যায়, সদরঘাটে কয়েকটি বড় বড় জাহাজে অস্ত্র বোঝাই করা হচ্ছে। এই জাহাজগুলো যাবে বগুড়ার ফুলতলি, তারপর রংপুর। এই তারবার্তায় মুক্তিবাহিনী ফের গুপ্তচর লাগায়। গুপ্তচর মারফত মুক্তিবাহিনী নিশ্চিত হয় জাহাজগুলো যাবে ধলেশ্বরী ও যমুনা নদী হয়ে। নারায়ণগঞ্জে অবস্থানরত এনায়েত করিম তার পূর্ব পরিচিত এক সারেংয়ের মাধ্যমে খবর পাওয়ার পর তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নবী নেওয়াজের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের মুক্তিবাহিনীর কাছে পৌঁছান। এরপর মুক্তিবাহিনীর গুপ্তচর মমতাজ খান ঢাকায় চলে যান সত্যতা যাচাইয়ের জন্য। ঘটনা সত্য হয়। জানা যায়, কাদেরিয়া বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকার ভেতর দিয়েই যাবে জাহাজগুলো। ইউএসএ ইঞ্জিনিয়ারিং এলসি-৩ এবং এসটি রাজনসহ মোট ৭টি জাহাজ রওয়ানা হবে তিন-চার দিনের মধ্যেই।
তখন কাদেরিয়া বাহিনীর কর্তৃত্ব ছিল বেশ বড় এলাকা জুড়ে। জাহাজগুলো যে এলাকা দিয়ে যাবে কাদেরিয়া বাহিনীর সে অংশের কমান্ডার হাবিবুর রহমান। এর বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে সিরাজগঞ্জ ঘাট। সেটি আবার পাকিস্তানি বাহিনীর দখলে।
জাহাজ ভিড়লো অবশেষে
৯ আগস্ট রাতে সিরাজকান্দি ঘাটে ভেড়ে সামরিক সরঞ্জামাদি ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ পূর্ণ ৭টি জাহাজ। এদিকে কাদেরিয়া বাহিনীর কমান্ডার হাবিবুর রহমান তখনও সব তথ্য জানতে চাচ্ছেন। তিনি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়েই আক্রমণ করবেন। আর তাই এদিকে কাদেরিয়া বাহিনীর কমান্ডার হাবিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন, মোতাহার ও জামশেদসহ মোট ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে রওয়ানা হন সিরাজকান্দি ঘাটের দিকে।
রেকি ও তথ্য সংগ্রহে ছদ্মবেশ
১০ আগস্ট সকালে কমান্ডার হাবিবুর রহমান, মোতাহার, জিয়া এবং জামশেদ জেলেদের ছদ্মবেশ ধরে মাছ ধরেন নদীতে। এদিকে তাদের সাধারণ জেলে মনে করে পাকিস্তানি বাহিনী। তারা নিজেদের রাজাকারের সহযোগী হিসেবে পরিচয় দিয়ে পাকিস্তান ও সেনাবাহিনীর পক্ষে নিজেদের সমর্থন প্রকাশ করে আড্ডা জমিয়ে দেন। সঙ্গে ক্ষুধার্ত সৈন্যদের জানিয়ে দেন খাবারের খোঁজ। সবকিছু মিলিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি সেনারাও সরলমনে তাদের আপন মনে করে বহু তথ্য ফাঁস করেন। খাবার সবরাহের ছলে কমান্ডার হাবিবুর রহমানরা জানতে পারেন এখানে মোট ১ ব্যাটালিয়ন সৈন্য আছে। মাত্র এই কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে যদি আক্রমণ করেন কমান্ডার হাবিবুর রহমান তবে মাটির সঙ্গে তাদের মিশিয়ে দেবে পাকিস্তানি বাহিনী। তখন কমান্ডার হাবিবুর রহমান বার্তা পাঠালেন কাদেরিয়া বাহিনীর ক্যাম্পে। তার আরো বহু যোদ্ধা দরকার।
এক অদ্ভুত বার্তা
কমান্ডার হাবিবুর রহমান বার্তা পাঠানোর এক ঘণ্টা পরে আসে অদ্ভুত এক ফিরতি বার্তা। সেখানে এক রহস্যময় সংকট। বার্তাটির রহস্য মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কেউই উদ্ধার করতে পারলেন না। তবে তারা বুঝতে পারলেন কাদের সিদ্দিকী হয়তো নতুন কোনো পরিকল্পনা এঁটেছেন। এরই মধ্যে পুরাখাসিয়া সাব-সেক্টরের কমান্ডার মাস্টার শামছুল আলম ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা ৩ ইঞ্চি মর্টার নিয়ে আগের দিন রাতেই মাটিকাটা বাজারে অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে মাটিকাটা গ্রামে ৩ ইঞ্চি মর্টারসহ আরেকটি দল নিয়ে অবস্থান করছেন কমান্ডার রেজাউল করিমের আরেকটি দল। এছাড়া আরো ক্ষুদ্র বেশ কয়েকটি দল ও উপদল ছিল বেশ কয়েকটি অবস্থানে।
শেষ পর্যবেক্ষণ
১১ আগস্ট দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কমান্ডার হাবিবুর রহমান নদীর ধারে দেখেন পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থান। গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। এদিকে তখন কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা পারলে এখনই আক্রমণ শুরু করেন এই অবস্থা। কিন্তু হাবিবুর রহমান বললেন, তার গুলির আগে একজনও গুলি চালানো তো দূরের কোথা, এক পাও যেন অবস্থান থেকে না সরে।
নদীতে এসে হাবিবুর রহমান জানতে পারেন জাহাজগুলো আসছে তাদের দিকেই অর্থাৎ উত্তর দিকে। আর তাতে কাদেরিয়া বাহিনীর অবস্থান খানিকটা সরে গেল। এক অবস্থানে থেকে বাকি রাত কাটিয়ে দিলো মুক্তিবাহিনী।
আক্রমণ শুরু
নদীর বহু জায়গায় চর থাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর জাহাজ একবার থামছে আবার চলছে। এদিক সকাল নয়টার দিকে ফের জাহাজ থেমে গেল। সম্মুখে একটি ছোট জাহাজ ডুবোচরের আশংকায় আগ বাড়িয়ে যাচ্ছিলো যেন ডুবোচর থাকলে তা ধরা পড়ে। একসময় সেই ছোট জাহাজটি কাদেরিয়া বাহিনীর অবস্থান বরাবর নদী দিয়ে চলে যায়। কিন্তু কমান্ডার হাবিবুর রহমান তখনো অপেক্ষা করছেন বড় জাহাজের। ঠিক এমন সময় আরেকটি ছোট জাহাজ পার হয় একই অবস্থান দিয়ে। এরপরই আসে কাঙ্ক্ষিত সময়। টানা তিন দিনের প্রতীক্ষা শেষে অবশেষে আসে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। বিশাল দুটো জাহাজ আসা মাত্রই কমান্ডার হাবিবুর রহমানের মেশিনগান গর্জে উঠে, আর সঙ্গে সঙ্গে বজ্রপাতের মতো একই সঙ্গে গর্জে উঠে কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র। এমন সময় কাদেরিয়া বাহিনীর আরেকটি দলের কমান্ডার রেজাউল করিম নিক্ষেপ করলেন মর্টার শেল। পরপর ১২টি মর্টার শেল আঘাত হানলো দুই জাহাজের ব্রিজের মধ্যে। সঙ্গে সঙ্গে তার দেখাদেখি আরেক মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরের দিক থেকে বারুদের মতো ধেয়ে যায় ২০টির মতো মর্টার শেল। মর্টার শেলে কোনো ক্ষতিই হতো না জাহাজের, কিন্তু বৃষ্টির মতো মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি, মর্টার শেলে দিশেহারা হয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর জাহাজ দুটো দিকভ্রান্ত হয়ে ডুবোচরে আটকা পড়ে। বৃষ্টির মতো গোলাগুলি চলছে তখনো। এসময় জাহাজ থেকে ছোড়া গোলা ও গুলিতে শহীদ হন ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখী আক্রমণে প্রায় ২৫ জনের মতো পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। বাকি পাঁচটি জাহাজ পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় জাহাজ দুটোর সৈন্যরা। মুক্তিযোদ্ধারা দখল নেন দুটো জাহাজের।
এসটি রাজন জাহাজ থেকে কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা আটক করে জাহাজের সারেং মোহর আলী ও ইউএসএ ইঞ্জিনিয়ারিং এলসি-৩ জাহাজের সারেং মোহাম্মদ মোস্তফাকে।
যা পাওয়া গিয়েছিল দুই জাহাজে
পাকিস্তানি বাহিনীর সেই দুই জাহাজ থেকে কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা ছাড়াও স্থানীয় বহু মানুষ যোগ দিয়েছিল সেই অস্ত্রের খালাসে। জাহাজে সারি সারি ১ লাখ ২০ হাজার বাক্সে কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা উদ্ধার করেছিলেন ১ লাখ ২০ হাজার চাইনিজ ৩ ইঞ্চি মর্টার শেল, ১০ হাজার চাইনিজ আড়াই ইঞ্চি মর্টার শেল, ৪০ হাজার ব্রিটিশ ২ ইঞ্চি মর্টার শেল, ৬০ হাজার ৮২ ব্লান্ডার সাইট শেল, বারো হাজার ৭২ আরআর শেল, ৭ হাজার ৬ পাউন্ড শেল, ৫ হাজার বাক্স ১২০ এমএম শেল, ৫০০টি চাইনিজ রাইফেল, ১০০টি ৩০৩ রাইফেলস ৭০ হাজার ৩৬ হ্যান্ড গ্রেনেড, ১০ হাজার স্মোক গ্রেনেড, ২টি চাইনিজ এমজি, ১০ লাখ চাইনিজ ৭.৬২ গুলি, ২ লাখ চাইনিজ ৭.৬৫ গুলি, এক লাখ ৩০৩ গুলি, পাঁচ হাজার চাইনিজ এমজি গুলি, ১ লাখ ৮০ হাজার গ্যালন ডিজেল, বিপুল পরিমাণ খাদ্য রসদ সামগ্রী। কেবল সমরাস্ত্রেরই তৎকালীন সময়ে আনুমানিক বাজার মূল্য ছিল ২১ কোটি টাকা। যা এক গুপ্তধনের মতো সন্ধান দিয়েছিল কাদেরিয়া বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীকে। এটিই ছিলো মুক্তিযুদ্ধে কোনো বাহিনীর একক আটককৃত সর্ববৃহৎ সামরিক চালান।
একটি রহস্যের উৎঘাটন
এদিকে দুই জাহাজের সারেং মোহর আলী ও ইউএসএ ইঞ্জিনিয়ারিং এলসি-৩ জাহাজের সারেং মোস্তফার কাছে ক্রমান্বয়ে সাহায্য চেয়ে ওয়্যারলেস বার্তা আসছিল পাকিস্তানি বাহিনীর তরফ থেকে। তারা আক্রমণের খবর জানতে পেরে ফের আঘাত হানবে এই এলাকায় তা বুঝতে পেরেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। আর তাই সেদিন রাত ১০টার দিকে কমান্ডার হাবিবুর রহমানের নির্দেশে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা দখলে নিয়ে জাহাজ ছেড়ে যায়। কিন্তু তখনো জাহাজে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র আছে। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হয় জাহাজে থাকা বাকি অস্ত্র ধ্বংস করা হবে। শেষমেশ সেই ডিজেলসমেত বিপুল সমরাস্ত্রসহ জাহাজ দুটি ধ্বংস করে কাদেরিয়া বাহিনী। এই জাহাজে থাকা ডিজেলের ট্যাংকার ছিল পাবনার রাজাকার আবদুল মতিনের।
সে রাতে নিরাপদেই অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পে পৌঁছেছিলেন কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা। পরদিন সকালে কাদেরিয়া বাহিনীর আঞ্চলিক ক্যাম্পে হাজির হয়েছিলেন স্বয়ং কাদের সিদ্দিকী। সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি সারেং মোস্তফাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। মূলত সারেং মোস্তফাই আগে ইপিআর সদস্য এনায়েত করিমকে এই সমরাস্ত্র চালানের সংবাদ দিয়েছিলেন। আর চরে আটকে পড়ে জাহাজটি থামিয়ে দেয়া ছিল তার একটি অন্যতম অজুহাত।
জানা যায় চট্টগ্রাম নিবাসী সারেং মোস্তফাকে সারেংয়ের কাজ করতে বাধ্য করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল হানাদারেরা। মোস্তফার এক ভাই মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার অপরাধে তাকে টানা চার মাস আটকে রেখেছিল পাকিস্তানি বাহিনী। পরে সৈয়দপুর সেনানিবাসে এ যুদ্ধাস্ত্র ভর্তি জাহাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। অন্যদিকে আরেকটি কারণ ছিল তখন বাংলার নদীপথ চিনে এমন বাঙালি সারেং হাতে গোনা খুবই স্বল্পসংখ্যক ছিল পাকিস্তানি বাহিনীতে।
পাকিস্তানিদের আক্রমণ
জাহাজে আক্রমণের খবর শুনে ১২ থেকে ১৪ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি ও ব্রিগেডিয়ার কাদের খানের নির্দেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৪৭ ব্রিগেড, ৫১ কমান্ডো ব্রিগেড ও দুটি এফ-৮৬ স্যাবর জেট দিয়ে কাদেরিয়া বাহিনীর উপর চতুর্মুখী হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু এই হামলা কাদেরিয়া বাহিনী জব্দকৃত সমরাস্ত্র দিয়েই প্রতিহত করেছিল।
সূত্র –
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম/ কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী
আহমাদ ইশতিয়াক [email protected]
Comments