রাজনৈতিক উপন্যাসের ফর্মবিন্যাস প্রসঙ্গে

সাহিত্যে উপন্যাসের আবির্ভাব আধুনিক সময়ে। উপন্যাস এসেছে পাশ্চাত্য থেকে। উপন্যাসের জগৎ নিরঙ্কুশ স্বাধীনতার জগৎ। মার্ক শোরারের ভাষায়- an immediate transcript of life, a journalistic form of অর্থাৎ চারপাশের জগতের- তথা পাঠকের জগতের অনুকরণই উপন্যাস। বোধকরি উপন্যাসের জনপ্রিয়তার কারণও এটাই। 'কোন শিল্পবস্তুর ফর্ম বুঝতে গেলে সেই সৃষ্টির জগতে আত্মবিস্মৃত না হয়ে, শিল্পবস্তুটিকে নিজের কাছে থেকে দূরে রেখে তাকে নির্লিপ্ত দৃষ্টি দিয়ে নিরীক্ষণ করতে হয়। কিন্তু উপন্যাসের পাঠক বিষয়ের দ্বারা এতো সহজেই  "আক্রান্ত" হয়ে পড়েন যে প্রকরণ তাঁর দৃষ্টি এড়িয়ে যায়।' যে কোনো শিল্পের ক্ষেত্রেই আত্মসচেতনতা বা ফর্মভাবনা বোধকরি তাকে স্থূল করে তোলে। সে জন্য শুধু দৃষ্টি এড়ানোই নয়, বুঁদ হয়ে পাঠক যখন শিল্পের রস গ্রহণ করেন তখন প্রকরণের ব্যাপারটা ভুলেই যান। 'কোন সুস্পষ্ট নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে উপন্যাসশিল্প-রীতিকে গণ্ডিবদ্ধ করা যায় না। যায় না-যে, এর কারণ বিশৃঙ্খল জীবনের সামগ্রিক সত্যকে বিচিত্রভাবে অঙ্কন করার দায়ে পড়েই উপন্যাস শিল্পের উদ্ভব। পক্ষান্তরে কোন মহৎ ও শক্তিশালী স্রষ্টাই একটি ছক-কাটা রীতি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারেন না। নবলব্ধ দৃষ্টিকোণের অভ্যন্তর গরজেই উপন্যাসের প্যাটার্ন, পদ্ধতির রূপান্তর ঘটে।' বাংলাদেশের উপন্যাসের ফর্মের দীর্ঘ সূচিতালিকায় রাজনৈতিক চেতনাধর্মী উপন্যাসগুলো একপ্রকার গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। গ্রামের সহজাত জীবনের চিত্রার্পণ, মধ্যবিত্তের আত্মরতি, অন্তর্যন্ত্রণা, মনোবিকলন সমস্যা কিংবা মিথ বা ঐতিহ্য রাজনীতির চর্চা যেমনটাই হোক বাংলাদেশের ঔপন্যাসিকেরা শ্রেণিদ্বন্দ্ব, প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির দাপট ইত্যাদির চেতনাগত আখ্যান নিরূপণে স্বতন্ত্র এক ফর্মের জন্ম দিয়েছেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ মধ্যবিত্ত নাগরিক সমাজের ভিতকে নাড়িয়ে দেয়। এ সময় তাদের বিশ্বাস, মূল্যবোধে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। রাইফেল রোটি আওরাত, মৃগয়ায় কালক্ষেপ, যাত্রা, জাহান্নম হইতে বিদায়, মরণজয়ী মুক্তিযুদ্ধের চালচিত্র। কিন্তু বৃহত্তর কালপরিসর কিংবা ব্যাপক জীবনাগ্রহের বিশ্লেষণ এগুলোতে নেই। বিভাগ-পরবর্তী উপন্যাসগুলোর আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিকাঠামো শিল্পীদের বর্ণনায় যেভাবে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ তেমন কালপরিসরে বা প্রতিপার্শ্বিক আবহে বর্ণিত হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা লেখকদের নিকট খণ্ডিত এবং তাৎক্ষণিক। এ ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গি লেখকদের অতিমাত্রায় প্রভাবিত করেছে। এ ছাড়া বোধকরি তাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার শূন্যতাও বড় কারণ। শওকত আলীর যাত্রার নায়ক প্রেমমুগ্ধ দৃষ্টিতে একটি সূর্যোদয়ের জন্য অপেক্ষা করে— এর বাইরে দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সে আর কিছু ভাবতে পারে না: 'জখম শরীর, এক হাতে রাইফেল- জানালা দিয়ে দেখতে পায়- নদীর ওপারে, দিগন্ত রেখার কাছে তখনও তুমুল গুলি হচ্ছে- গ্রাম জ্বলছে, হাট জ্বলছে, খামার বাড়ি জ্বলে যাচ্ছে। দুজনেই দেখতে পায়- লেলিহান শিখা, ধোঁয়ার কুণ্ডলী এবং বিবর্ণ সূর্যোদয় হচ্ছে।' শওকত ওসমানের জাহান্নম হইতে বিদায়, আনোয়ার পাশার রাইফেল রোটি আওরাত উপন্যাসে দৃষ্টিকোণ, সময়ের ব্যবহার, ভাষারীতির প্রয়োগ, মুক্তিযুদ্ধ, শিল্পমাত্রায় উপস্থাপিত হয়েছে। গাজী রহমান কিংবা সুদীপ্ত শাহীন অন্তর্সংলাপের মাধ্যমে ঘটনা বয়ান করে।

বিভিন্ন প্রতীকায়ণে লেখকগণ তুলে আনেন সমাজের তৃষ্ণার্ত শোষক গোষ্ঠীর কামুক দৃষ্টিকে। হাসনাত আবদুল হাই তিমি প্রতীকায়নে, হরিপদ দত্ত অজগর, আবুবকর সিদ্দিক জলরাক্ষস প্রতীকে দ্যোতনানির্ভর বয়ান করেন সমাজের আধা-সামন্তবাদী শোষক চরিত্রকে। এ ক্ষেত্রে পাশ্চাত্য তত্ত্ব-নির্ভর শিল্পরীতি এড়িয়ে ক্ষয়িষ্ণু মানুষের সংলাপ এবং ব্যক্তিচেতনা নির্ভর ব্যক্তির সনাতন রূপের ওপর জীবনকে অর্থারোপ করার চেষ্টা করেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক চেতনাধর্মী উপন্যাসগুলোর ইতিহাস-ঐতিহ্য ও পুরাণশ্রয়ী প্রবণতা একটা ভিন্ন বৈশিষ্ট্যে নির্মিত হয়েছে। এক্ষেত্রে লক্ষণীয়, সেলিনা হোসেন বা শওকত আলী প্রাকৃতজনদের কাহিনী বলেছেন; বং আর এলার কাহিনী বলেছেন রিজিয়া রহমান। শ্যামাদাসের বা লীলাবতীর মুখের জন্য স্বতন্ত্র এক গদ্য নির্মাণ করেছেন শওকত আলী।

সচেতনভাবে শিল্পের পরিচর্যা করেছেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস। জহিরুল হকের অগ্নিসাক্ষী উপন্যাসের পটভূমির সাথে চিলেকোঠার সেপাইর মিল হলেও শিল্পগত বৈশিষ্ট্যেই দুটোর অবস্থান আলাদা। মধুরিনার মধ্যবিত্ত বৈশিষ্ট্যে আর ওসমানের বৈশিষ্ট্যে অনেক তফাৎ। দীর্ঘ উপন্যাসজুড়ে যে উত্তেজনা ও মানসিক চাপে ওসমান নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখে সেখান থেকে শেষাবধি মুক্তি তো পেতেই হয় তাকে। অসাধারণ শিল্প প্রকরণে ওসমানকে বন্দি করেন লেখক। ওসমান যখন মধ্যবিত্ত সংকট থেকে মুক্ত হয় খিজির যখন তাকে আহ্বান করে মুক্ত-পৃথিবীর, তখন ওসমান স্বাভাবিক থাকে না। প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়াগ্রস্ত হয়ে সে অসুস্থ অবস্থায় মুক্তি খুঁজে নেয়। যাবতীয় পিছুটান এবং প্রেমকে ধ্বংস করে দিয়ে সে খাঁচা থেকে বেরিয়ে আসে। প্রতিক্রিয়াশীল বুর্জোয়া সমাজ ব্যবস্থায় উপন্যাসের ফর্ম বদলে প্রচলিত রীতিতে বাস্তবতাকে ধরা সম্ভব নয়। তাইতো চিলেকোঠার সেপাইর শুরুতেই চেতনার প্রবাহে রঞ্জুর অবস্থান এবং স্মৃতিকাতর নষ্টালজিক অনুভূতিকে যখন সামনে আনেন লেখক তখনই নন্দনতত্ত্বের বীজ নিহিত হয়।

মঞ্জু সরকার যে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রতিমা উপাখ্যানের শিল্পরূপ দেন, তা কায়েস আহমেদ থেকে ভিন্ন। দিনযাপন-এ মধ্যবিত্ত চরিত্রের সমাবেশ থাকলেও তাদের সংকট বৃহত্তর আর্থ-সমাজের দিকেই ইঙ্গিত করে। শিল্পী হিসেবে কায়েস আহমেদ শ্রেণিভেদে তার প্রকরণকে ধরতে চান। এক্ষেত্রে তুলে আনেন বাইরের জগতকে শুধু নয়; ভেতরের কঙ্কালসার, অস্তিত্ত্বসংকটাচ্ছন্ন ক্ষয়িষ্ণু জীবন বাস্তবতাকেও। এক্ষেত্রে সমাজ তার প্রধান অন্বিষ্ট। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে এখানে কায়েস আহমেদের সমগোত্রীয় মনে হয়। এক্ষেত্রে শাহরিয়ার কবিরের ওদের জানিয়ে দাও উপন্যাসটি পুরোপুরি একটি রাজনৈতিক উপন্যাস বললে ভুল হয় না। মুক্তিযুদ্ধোত্তর রাজনৈতিক বাস্তবতাই উপন্যাসে প্রকরণনির্ভর হয়েছে কিন্তু চরিত্রের অন্তর্নিহিত সত্যের চেয়ে বাইরের ঘটনাই কাহিনীকে গতি দেয়। বামপন্থিদের রাজনৈতিক তত্ত্ব, ভুল বোঝাবুঝি এবং এক্ষেত্রে মধ্যবিত্তের ফর্মকে একটি বিশেষ অবস্থানে দাঁড় করায়। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাস্তবতার অনেক বিষয়ের মধ্যে একটি অনালোকিত বিষয়কে উপন্যাসে স্বতন্ত্র আঙ্গিকের প্রতিষ্ঠা দেয়।

একটি চরিত্রের ভেতরে-বাহিরে এবং সর্বোপরি সমাজ-মনস্তত্বের সূত্র কিভাবে রাজনীতি বা রাজনৈতিক পরিমণ্ডলকে ঘিরে রয়েছে কিংবা অনিবার্যভাবে রাজনীতি কিভাবে তার সময়-সমাজ-মানুষকে গ্রাস করেছে তা নিরীক্ষা করার চেষ্টা থাকে। এক্ষেত্রে বারবার উপন্যাসের জন্মের সমাজ বাস্তবতা, উপন্যাস সৃষ্টির পূর্বাপর শর্তসমূহ এবং উপন্যাস কেন বৃহত্তর ও সমগ্র জীবনের চিত্রায়ণ, সে প্রশ্ন তৈরি হয়। নিশ্চয়ই এটা সত্য, সামন্তবাদের ভাঙন ও পুঁজিবাদের বিকাশের লগ্নে ব্যক্তির অস্তিত্বের জয় ঘোষণার সূত্রে উপন্যাসের জন্ম। এবং আধুনিক গণতন্ত্রের ফসল হিসেবে উপন্যাসের যে জয় ঘোষণা সেখানে নিশ্চয়ই ব্যক্তি-চরিত্রের সাথে রাজনীতি বা রাজনীতি চেতনার কালবৃত্ত জড়িয়ে আছে। সুতরাং এমনটা নিশ্চিত করেই বলা যায় রাজনৈতিক চেতনা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যেমনটাই হোক উপন্যাস জন্মলগ্ন থেকেই তাকে ধারণ করেছে। সময়ের সাথে সাথে জীবন জটিলতার ক্ষেত্র থেকে তার যে বিকাশ ও পরিমণ্ডল তৈরি হয়েছে তা গোচরে বা অগোচরে ব্যাপক অর্থে একটি রাজনৈতিক চেতনারই বিশ্লেষণ বা ফলশ্রুত রূপ। 'সমাজের জন্য শিল্প' আজকাল নন্দনতত্ত্বে আর বির্তক তোলে না। বিংশ শতাব্দীর যে যুগবাস্তবতা, বিজ্ঞানের বা চিকিৎসা জগতের উন্নতি, অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং রাজনীতির প্রতাপ, সমাজ ও সাহিত্যকে এমন এক পর্বে উন্মোচন করেছে যেখানে শিল্প অনিবার্যরূপে সেকেলে তত্ত্বের খোলস থেকে বেরিয়ে এসেছে।  প্রদোষ অন্ধকারে নিমজ্জিত বাঙালির যুদ্ধ; স্বাধীন আবাসভূমিতে বাঁচার জন্য যুদ্ধ উল্লেখ হয়েছে প্রদোষে প্রাকৃতজন উপন্যাসটিতে। নীল অত্যাচারের কাহিনী, ঔপনিবেশিক শাসনের জোয়াল কীভাবে চেপেছিল পদ্মা মেঘনা যমুনার কোলে, কীভাবে অভিশপ্ত নগরীতে পাপের সন্তান (?)রা তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে, কৈবর্তরা, প্রাকৃতজনরা দিবানিশি বিনিদ্র কাল কাটায়, যুদ্ধ করে- রাজনৈতিক চেতনায় লেখকেরা তার পূর্বাপর ইতিহাস বয়ান করেছেন বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে। অস্তিত্ব অনুসন্ধান বা জাতির শেকড় সন্ধান- যেটাই হোক বাঙালিত্ব তার অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান বাঙালির সময়কে নির্মাণ করেছে। বাঙালির রাজনৈতিক চেতনার স্বরূপ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এ পর্বের উপন্যাসগুলো বিষয় ও আঙ্গিক নির্বাচনে অনেকাংশে সফল। কিন্তু রাজনীতি চেতনার দীর্ঘ উত্তরণের পর্বে যে মুক্তিযুদ্ধ, তা পরবর্তী সময়ে বিতর্কিত হয়েছে, বিতর্কের জন্ম দিয়েছে চেতনায়।

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী ঔপন্যাসিকরা আবার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞাকে প্রতিষ্ঠিত করায় সচেষ্ট হয়েছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে লক্ষ্যগোচর হচ্ছে রাষ্ট্রের শ্রেণিচরিত্রের উত্থান। মধ্যবিত্ত শ্রেণি মুক্তিযুদ্ধ করেছে যে স্বার্থগত প্রবণতা থেকে তা স্বল্পসময়েই নস্যাৎ হয়েছে। শ্রেণিস্তরে মৌলবাদ বা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির দাপট বেড়েছে। শহর ছাড়িয়ে গ্রমীণ সমাজস্তরের আধা-সামন্তবাদী শাসন বিবিধ মাত্রায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। রাজনীতি সমাজের নেতিবাচক অংশগুলোকে নানা উপায়ে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে একনায়কের শাসন,  উর্দি শাসন, মৌলবাদী বা প্রতিক্রিয়াশীল ব্যক্তির শাসনের উদ্ভব হয়েছে। উপন্যাসের ব্যক্তি-চরিত্র প্রচণ্ড বিপন্নতায় ভুগছে। বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় মুক্তিযুদ্ধোত্তর যে জীবনাগ্রহ সেখানে বৈশ্বিক বাস্তবতার আগ্রাসী রূপ, তথাকথিত মুক্তবাজার অর্থনীতির দাপট, রাজনীতির নেতিবাচক ব্যবহার- কিছু ভূমিহীন, উম্মূল চরিত্রের জন্ম দিয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিপন্ন অস্তিত্ত্বে, ক্ষয়িষ্ণু এবং মূল্যবোধহীন বিনষ্টির সময়-দর্পণে আরূঢ় ভনিতায় অধিষ্ঠিত। জীবন বাস্তবতার এ চরিত্র লেখকগণ পূর্ণমাত্রায় রূপ দিতে পারেননি। শিল্পগত বিশ্লেষণের পর্বে প্রমাণ করা গেছে এ ক্ষেত্রে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ কিংবা আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কিছুটা ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের রাজনৈতিক চেতনাধর্মী উপন্যাসগুলো মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আঙ্গিক বিচারের পর্বে ভাষা সাফল্য ও সময় চেতনায় আধুনিক নন্দনতত্ত্বের যে চর্চা হয়েছে, তার সাফল্য লক্ষণীয়। সময়ের সাথে উপন্যাস আঙ্গিক বদলায়। ব্যক্তি চরিত্র নির্ধারণে হরিপদ দত্ত, মঞ্জু সরকার- অনেকাংশে নতুন দৃষ্টির পরিচয় দিতে সফল হয়েছেন।

তুলনামূলক আলোচনা করে বিষয় অনুষঙ্গি প্রকরণ ব্যবহারে লেখকদের সাফল্য এবং উত্তরসূরিদের পথ নির্মাণে তাদের প্রেরণার ক্ষেত্রগুলো অনেকাংশে আকর্ষণ সৃষ্টি করে। তবে রাজনীতি চেতনার সূত্র অনুসন্ধানে অনেক লেখকের রচনা সরলীকরণ বা পুনরাবৃত্তির দোষে দুষ্ট। সেক্ষেত্রে নিছক প্রতিনিধিত্বশীল উপন্যাসগুলিই আলোচনায় এসেছে। এ শতকের ঔপন্যাসিকরা উপন্যাস নিয়ে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। সে সাফল্য বাংলাদেশের উপন্যাসে যুক্ত করবে নতুন মাত্রা।

লেখক: অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Comments