হুমায়ূন আহমেদের সংগ্রামী জীবন
হুমায়ূন আহমেদের নাম বললে প্রথমেই আমাদের মনে আসে বেশ ধনী ও আর্থিকভাবে ভীষণ সচ্ছল এক লেখকের নাম। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় লেখক তিনি; বোদ্ধাদের মতে শরৎচন্দ্রের পর বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ।
অনেকে হুমায়ূন আহমেদের জীবনযাপন, তার পারিশ্রমিক তথা বইয়ের রয়্যালিটির হিসেবনিকেশ তুলে ধরেন। হুমায়ূন আহমেদ ফর্মা-ভিত্তিতে লিখতেন এবং নির্দিষ্ট ফর্মার মধ্যেই লেখা শেষ করতেন।
হুমায়ূন আহমেদের কাছ থেকে লেখা আদায় করতে হলে ‘টাকার বস্তা’ নিয়ে প্রকাশকেরা দেখা করতেন। তাও আবার লেখার অগ্রিম পারিশ্রমিক ভিত্তিতে। হুমায়ূন আহমেদ অর্থের বিনিময় ছাড়া এক লাইনও লিখেননি। সেই অর্থ দিয়ে নুহাশপল্লীতে তিনি সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, ধানমণ্ডিতে বাড়ি কিনেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে বাড়ি কিনেছেন; দেশ-বিদেশ ঘুরে দু-হাতে টাকা উড়িয়েছেন, কোটি টাকা খরচ করে সিনেমা বানিয়েছেন— এমন অজস্র কাহিনী, কখনো সত্য, কখনো অর্ধ-সত্য, কখনো বা মিথ, কিংবা পুরাদস্তুর মিথ্যাসহ জড়িয়ে আছে এই নন্দিত লেখকের জীবনে।
কিন্তু, সমস্ত কিছুর আড়ালে কেমন করে যেন চাপা পড়ে যায় তার সংগ্রামের জীবন, ঢাকা পড়ে যায় তার প্রথম জীবনের সংগ্রাম ও আর্থিক অনটনের সঙ্গে চরম লড়াই। যে সংগ্রাম দিনের পর দিন হুমায়ূনকে গড়েছে। গড়ে তুলেছে জীবনশিল্পী রূপে।
সেই জীবনের শুরু থেকেই তার শুরু। এরপর ১৯৭২ সালে তো অকূল দরিয়াতে পড়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। মহান মুক্তিযুদ্ধে হারালেন পুলিশ কর্মকর্তা বাবা ফয়জুর রহমানকে। এতদিন না হয় বাবার রোজগার ছিল। এরপর গোটা সংসারের ভার গিয়ে পড়ে তার কাঁধে।
ঢাকায় এসে হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজ সর্বপ্রথম দেখা করেছিলেন পুলিশের আইজি আবদুল খালেকের সঙ্গে। তখন শহীদ পরিবারকে বাড়ি দেওয়া হচ্ছিল আবদুল খালেক আয়েশা ফয়েজকে বললেন, ‘আমি জানি আপনার স্বামী আপনাদের জন্য দশ টাকাও রেখে যায়নি। আপনি চিন্তা করবেন না। পেনশন, গ্রুপ ইনস্যুরেন্সের টাকা যেন তাড়াতাড়ি পেয়ে যান তার ব্যবস্থা করব। একটা বাড়িও আপনি পাবেন। শহীদ পরিবারদের বাড়ি দেওয়া হচ্ছে।’ এই বলে আয়েশা ফয়েজকে দুই হাজার টাকার একটা চেক দেয়া হলো।
শেষমেশ শহীদ পরিবার হিসেবে তাদের বাড়ির ব্যবস্থা হলো মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে। কিন্তু, বাবর রোডের বাড়িতে উঠার তিন দিন পর রক্ষীবাহিনীর এক মেজর এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই বাড়ি কিভাবে পেয়েছেন?’ আয়েশা ফয়েজ বললেন, ‘সরকার আমাকে দিয়েছে। আমার স্বামী যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, তাই।’
আয়েশা ফয়েজ আত্মকথায় লিখেছেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাকে প্রথম বার গৃহহারা করেছিল। বাংলাদেশ সরকারের রক্ষীবাহিনী আমাকে দ্বিতীয় বার গৃহহারা করল।’
তখন কোনো বিছানাপত্র ছিল না তাদের সঙ্গে। ঘরের আসবাবপত্র কেনারও সামর্থ্য ছিল না হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের। ভাই-বোনেরা মিলে কাঠ কেটে তৈরি করেছিলেন আসবাবপত্র।
হুমায়ূন আহমেদের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল তখন। এক ভক্ত পাঠিকার সঙ্গে বিয়ে। কিন্তু, ঘরে তেমন অর্থ নেই। তাদের প্রতিবেশী চিকিৎসক মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী বেগম মনোয়ারের কথা না বললেই নয়। মিসেস মনোয়ার দুটো শাড়ি কিনে দিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদের হবু স্ত্রীর জন্যে। সঙ্গে আনা ব্লাউজ-পিস কেটে ব্লাউজ তৈরি করা হলো।
আয়েশা ফয়েজ স্মৃতিকথায় লিখেছিলেন, ‘আমি চোখে আঁধার দেখছি। তার মাঝে মিসেস মনোয়ার এসে হাজির। বিয়ের কথা শুনে তার খুশি দেখে কে! নীল শাড়ি পরে তো বিয়ে হয় না। লাল একটি শাড়ি কিনতে হয়। যত কমই হোক একটু আধটু গয়না তৈরি করতে হয়। বরযাত্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করতে হয়। মিসেস মনোয়ার সব দায়িত্ব নিয়ে নিলেন। শিখুকে (হুমায়ূন আহমেদের বোন) নিয়ে গয়নার দোকানে গিয়েছেন। গয়না কেনার পর দেখলেন হাতে রিকশা ভাড়া পর্যন্ত নেই।’
কিন্তু, তখনো চাকরি জোটেনি। মায়ের হাত শূন্য। এ দিকে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ও বিক্রি হচ্ছে না। রোজগার নেই বললেই চলে। এর মধ্যে তার বইয়ের প্রকাশক মহাবিরক্ত। ‘আমি এবং দৈনিক বাংলা’ গদ্যে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন সেই সময়ের অবস্থা।
‘উনিশ শ বাহাত্তর সনের কথা। জীবনের ওপর দিয়ে বড় রকমের ঝড় বয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধে বাবা শহিদ হয়েছেন। মায়ের হাত শূন্য। আমরা তিন ভাই-বোন তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। টাকা-পয়সার অভাবে আমাদের পড়াশোনা বন্ধ হবার মতো সমস্যাও দেখা দিয়েছে। ভয়াবহ অনিশ্চয়তা। এর মধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে আমার প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে। একটি বইও বিক্রি হচ্ছে না। বইটির প্রকাশক একদিন মহাবিরক্ত হয়ে বললেন, ‘আহমদ ছফা সাহেব হেনতেন কত কিছু বলে বইটি গছিয়ে গেছেন। এখন মহামুসিবত। তিন মাসে দশ-বারোটা বিক্রি হয়েছে কি না সন্দেহ।’
আমি অপ্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
‘মানুষজন ধরাধরি করে আলোচনার ব্যবস্থা করেন। তাতে যদি কিছু বিক্রি হয়।’
‘কাকে ধরব?’
‘কবি-সাহিত্যিকদের ধরবেন। পত্রিকার লোকদের ধরবেন।’
‘কবি-সাহিত্যিক কাউকে আমি চিনি না। তাঁরাও কেউ আমাকে চেনেন না। আমার কোনো গল্প কোথাও প্রকাশিত হয়নি। একমাত্র প্রকাশিত রচনা ‘পড়বে না তাঁর পায়ের চিহ্ন’। কে আমাকে নিয়ে আলোচনা করবে? কার এত গরজ পড়েছে।’
‘আমি নিজেও খুব লাজুক স্বভাবের। নিজের লেখা নিয়ে অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করার মতো সাহস আমার কোথায়? খুব মন খারাপ করে গুটিয়ে নিলাম নিজেকে। লেখালেখি আমাকে দিয়ে হবে না। বাংলাদেশের মানুষ একজন অপরিচিত লেখকের রচনায় আগ্রহী নন।’
সেই সময়টাতে হুমায়ূন আহমেদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ফলাফল বের হবে। আবার তার স্মৃতিকথায় ফিরে যাই। ‘রেজাল্টের খোঁজে রোজ কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টে ঘোরাঘুরি করি। পয়সাওয়ালা বন্ধুবান্ধব খুঁজি যে আমাকে চা শিঙ্গাড়া খাওয়াবে। অর্থনৈতিকভাবে আমি তখন পঙ্গুরও নিচে। বাবা মারা যাবার কারণে মা ১৮৫ টাকার মাসিক পেনশন পান, এটাই ভরসা। তিনি এবং তাঁর ছোটভাই রুহুল আমিন শেখ অদ্ভুত অদ্ভুত জায়গা থেকে টাকা পয়সা ধার করে আনেন। তাতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সংসার চলে। আমি সারাক্ষণ চোখে অন্ধকার দেখি। একটা চাকরি আমার ভীষণ দরকার। আগে তো রেজাল্ট হবে তারপর চাকরি।’
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হোক মিলন হুমায়ূন স্মৃতিচারণায় বলেছিলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ লেখার পারিশ্রমিক তথা বইয়ের রয়্যালিটির জন্য বাংলাবাজারে প্রকাশকের দোকানে সকাল থেকে আরেক লেখককে নিয়ে বসে আছেন। দুজন লেখকেরই আর্থিক অবস্থা খারাপ। কারো পকেটেই দশ বিশ টাকার বেশি নেই। সেই টাকা দিয়েই দুজনে দুপুরে খাবার খেলেন। এরপর আবার অপেক্ষা। কিন্তু, দেখা নেই সেই প্রকাশকের।’
‘অবশেষে সন্ধ্যার আগে শেষ বিকেলে প্রকাশক এলেন। এসেই করুণ মুখে বললেন, ‘বই একদমই বিক্রি হয় না। আপনাদের টাকা দেব কোত্থেকে?’ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রকাশক টাকা দিলেন না। দোকান থেকে বেরিয়ে হুমায়ূন আহমেদ তার সহচর লেখক বন্ধুকে বললেন, ‘আমার কাছে এখনো দশ-পনেরো টাকা আছে। তোমার কাছে আছে কত?’ সেই লেখকের পকেট থেকে বের হলো ১২ টাকা। তাই দেখে হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘চলো, প্রকাশক সাহেবকে গোটা বিশেক টাকা দিয়ে বলি, আপনার যখন এতোই অভাব আর আমাদের বইও বিক্রি হয় না, নিন, এই টাকাটা দিয়ে কাল বাজার করে খান। অন্তত এক দিন তো চলতে পারবেন।’
কেবল বাবাকে হারানোর পর নয়, বাবা ফয়জুর রহমানের সময়েও সাংসারিক টানাপড়েন ছিল হুমায়ূন আহমেদের পরিবারে। তবে তার জন্য অনেকাংশে দায়ী তার বাবার ওলটপালট জীবন। ওলটপালট না বলে অনেকাংশে বলা যায় কাব্যিক জীবন। হুমায়ূনের চোখে তার বাবা ছিলেন ‘আজব মানুষ’। হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন ‘আমার বাবা বিচিত্র একজন মানুষ তা বলতে পারি। তাঁর মতো খেয়ালি, তাঁর মতো আবেগবান মানুষ এখন পর্যন্ত আমার চোখে পড়েনি। তিনি ছিলেন জোন স্টেইনব্যাকের উপন্যাস থেকে উঠে আসা এক চরিত্র।’
যাই হোক তখন তার বাবা ফয়জুর রহমান সিলেট সদরে গোয়েন্দা পুলিশে কাজ করতেন সাব-ইন্সপেক্টর পদে। বেতন সব মিলিয়ে পান ৯০ টাকা। সেই টাকার একটি অংশ তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠান তার বাবা। বেতনের এক অংশ ব্যয় হয় বই কেনা বাবদ। বাকি টাকা দিয়ে সংসার কোনো রকমে চালিয়ে দেন তার মা। ভয়াবহ জীবন সংগ্রাম। সেই জীবন সংগ্রামের মধ্যে একদিন তার বাবা ফয়জুল ইসলাম প্রভিডেন্ট ফান্ডের সব টাকা উঠিয়ে সেই টাকায় কিনলেন ঘোড়া।
হুমায়ূন আহমেদ লিখলেন, ‘মা ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললেন, আমরা নিজেরা খেতে পাচ্ছি না। এর মধ্যে ঘোড়া! তোমার কি মাথা খারাপ হলো।’ হুমায়ূন আহমেদকে জেগে উঠতে দেখে তার বাবা হাসিমুখে বললেন, ‘ঘরের বাইরে গিয়ে দেখে আয় ঘোড়া কিনেছি।’
আরেকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা যায়।
হুমায়ূন লিখেছেন, ‘জীবন সংগ্রামের এই অংশটি বাবার কখনো চোখে পড়ে না। কারণ দেশের বাড়িতে পাঠানো টাকা এবং বই কেনার টাকা আলাদা করে বাকি টাকাটা মার হাতে তুলে দেন। বাবার দায়িত্ব শেষ। বাকি মাস টেনে নিয়ে যাবার দায়িত্ব হচ্ছে মার। তিনি তা কিভাবে নিবেন সেটা তার ব্যাপার। বাবার কোন মাথা ব্যথা নেই।’
যাই হোক সেই ঘটনার কথাই বলি। এ রকম টানাপড়েন অবস্থার মধ্যেই কোন এক মাসের প্রথম দিনে হুমায়ূন আহমেদের বাবা ফয়জুর রহমানকে ভীষণ হাসি মুখে বাড়ি ফিরতে দেখা গেল। তিনি যেন বিশ্বজয় করে এলেন। এসেই হুমায়ূন আহমেদের মাকে বললেন, আয়েশা একটা বেহালা কিনে ফেললাম। আয়েশা ফয়েজ বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘কি কিনে ফেললে?’
‘বেহালা।’
‘বেহালা কি জন্য?’ বিস্ময়ের কণ্ঠে প্রশ্ন আয়েশা ফয়েজের।
‘বেহালা বাজানো শিখবো,’ বললেন ফয়জুর রহমান।
‘কত দাম পড়লো?’
ফয়জুর রহমান বললেন, ‘দাম সস্তা। সত্তর টাকা। সেকেন্ড হ্যান্ড বলে এই দামে পাওয়া গেল। তারপর ফয়জুর রহমান সংসার চালাবার জন্য আয়েশা ফয়েজের হাতে দশ টাকা তুলে দিলেন। আয়েশা ফয়েজ হাসবেন না কাঁদবেন ভেবে পেলেন না।
হুমায়ূন আহমেদ তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের লেকচারার। যখন ক্লাস থাকে না তখন চলে যান বিচিত্রা অফিসে। বিচিত্রার সম্পাদক শাহাদাত চৌধুরী। তিনি একদিন হুমায়ূন আহমেদকে বললেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে পূজা সংখ্যা বের হয়। আমাদের দেশে ঈদসংখ্যা বলে কিছু নেই। ঠিক করেছি এবার ঈদসংখ্যা বের করবো। আপনি একটা উপন্যাস দেবেন।
এই প্রথম ফরমাশ পেয়ে উপন্যাস লিখলেন হুমায়ূন আহমেদ। ‘অচিনপুর’ উপন্যাসের জন্য ৩৫০ টাকা পেয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। সেই দিনই খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি তাকে ‘নন্দিত নরকে’ ও ‘শঙ্খনীল কারাগার’ উপন্যাসের রয়্যালিটি বাবদ ৪০০ টাকা দিয়েছিল।
হুমায়ূন আহমেদ টাকা নিয়ে ফিরছেন। স্টুডেন্ট ওয়েজের মালিক তাকে ডেকে তার পরবর্তী উপন্যাসের জন্য ২০০ টাকা অগ্রিম দিলেন।
আর্থিক দুরবস্থা কেমন হলে শেষমেশ প্রাপ্তিটা এতো আবেগঘন হতে পারে তার প্রতিফলন দেখা যায় সেই মুহূর্তে হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতিচারণায়। সেই মুহূর্ত নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন, ‘বেতনের ডবল টাকা নিয়ে বাসায় ফিরেছি। কেমন যেন অস্থির লাগছে। মনে হচ্ছে এই টাকার ওপর আমার কোনো অধিকার নেই। এই টাকা অন্য কারোর।’
তথ্যসূত্র –
জীবন যে রকম / আয়েশা ফয়েজ
আমি এবং দৈনিক বাংলা/ হুমায়ূন আহমেদ
বল পয়েন্ট/ হুমায়ূন আহমেদ
আমার ছেলেবেলা/ হুমায়ূন আহমেদ
কেমন ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ/ ইমদাদুল হক মিলন
Comments