ঐতিহাসিক ‘যশোর রোড’ নিয়ে আর্ট ক্যাম্প, চলবে ২১ দিন

ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও যশোর থেকে ৫০ জন বরেণ্য ও তরুণ চিত্রশিল্পী এতে অংশ নিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

'যশোর রোড' মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক সড়ক। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য এই সড়কটিই হয়ে উঠেছিল বেঁচে থাকার স্বপ্ন পূরণের পথ। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এই সড়ক দিয়ে তারা ভারতের পথে পাড়ি দেন। তাদের অনেকেই পথ চলার ক্লান্তি সহ্য করতে না পেরে মারা যান। যশোর রোডের প্রতিটি ধূলিকণাও যেন সেইসব শরণার্থীদের ক্লান্তি, দুর্ভোগ পোহানোর সাক্ষী।

বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে এই সড়ককে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে 'মুক্তিযুদ্ধে যশোর রোড' শীর্ষক আর্ট ক্যাম্প উদ্বোধন হয় গতকাল রোববার। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে এই আর্ট ক্যাম্প চলবে ২১ দিন।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও যশোর থেকে ৫০ জন বরেণ্য ও তরুণ চিত্রশিল্পী এতে অংশ নিয়েছেন।

জাতীয় জাদুঘরের সাবেক উপ-পরিচালক চিত্রশিল্পী তরুণ ঘোষ আর্ট ক্যাম্প উদ্বোধন করেন। যিনি যশোর রোড ধরে কলকাতায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

আর্ট ক্যাম্পে চিত্রশিল্পীরা যুদ্ধকালীন সময়ে যশোর রোডে শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধ চিত্র রং-তুলির ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলেন।

আয়োজকরা জানান, বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপনে যশোরে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে ৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ২১ দিনের সাংস্কৃতিক উৎসব। এর অংশ হিসেবে ঐতিহাসিক যশোর রোডকে উপজীব্য করে 'মুক্তিযুদ্ধে যশোর রোড' শিরোনামে আর্ট ক্যাম্পে ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসব।

আর্ট ক্যাম্পে যশোরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিল্পীরা অংশ নেন। তারা অ্যাক্রেলিক রঙে ক্যানভাসে যশোর রোডের শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধ চিত্র তুলে ধরেন।

তারা জানান, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যশোর রোড ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে এই আর্ট ক্যাম্পের আয়োজন।

বৃষ্টিস্নাত স্বল্প পরিসরের উদ্বোধনী আয়োজনে জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান ও উৎসব উদযাপন পর্ষদের সদস্য সচিব সানোয়ার আলম খান দুলু বক্তব্য রাখেন।

উৎসব পর্ষদের চেয়ারম্যান হাবিবা শেফা, ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার দাস, দীপংকর দাস রতন, হারুন অর রশীদ ও ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল এবং আর্ট ক্যাম্প উপ-পর্ষদের আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির যে ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছিল, তা থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, যে আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যশোর রোডের একটি ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে। যশোর রোড নিয়ে আর্ট ক্যাম্পটির মাধ্যমে আমরা ইতিহাসকে নতুনভাবে জানছি।'

Comments

The Daily Star  | English
Binimoy platform suspended by Bangladesh Bank

BB suspends Binimoy over irregularities

During the previous AL govt, it was developed by the IDEA under the ICT Division at a cost of Tk 65 crore.

11h ago