দেশে ২ কোটি ৭৮ লাখ ডোজ কোভিড ভ্যাকসিন মজুদ আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দেশে ৫ প্রকারের ২ কোটি ৭৮ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক। ফাইল ছবি

দেশে ৫ প্রকারের ২ কোটি ৭৮ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

আজ সোমবার মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ভ্যাকসিন কার্যক্রম বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, 'কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে ইতোমধ্যেই দেশের মোট জনসংখ্যার ৭৬ দশমিক ০৫ শতাংশকে প্রথম ডোজ, ৭০ দশমিক ৩ শতাংশকে দ্বিতীয় ও ১৭ দশমিক ৯ শতাংশকে বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিনের বৈশ্বিক অপ্রতুলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার দেশের আপামর জনসাধারণকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানে বদ্ধ পরিকর। আপনাদের সবার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, বর্তমানে দেশে ৫ প্রকারের (অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, সিনোভ্যাক এবং জনসন ও জনসন) মোট প্রায় ২ কোটি ৭৮ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে।'

'কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন' বিষয়ে তিনি বলেন, 'দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ও তুলনামূলক কম বুস্টার ডোজ কাভারেজ বিবেচনা করে সরকার আগামী ১৯ জুলাই দেশব্যাপী এই ক্যাম্পেইন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক দিনব্যাপী অনুষ্ঠেয় এই ক্যাম্পেইনে প্রায় ৭৫ লাখ মানুষকে বুস্টার ও দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ক্যাম্পেইন চলাকালে দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলাগুলোর ওয়ার্ড পর্যায়েও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।'

'একদিনে প্রায় ৭৫ লাখ মানুষকে সুষ্ঠুভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যে সারাদেশে প্রায় ১৬ হাজার ১৮১টি টিকাকেন্দ্রের (৬২৩টি স্থায়ী ও ১৫ হাজার ৫৫৮টি অস্থায়ী) ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্যাম্পেইনে প্রায় ৩৩ হাজার ২৪৬ জন টিকাদান কর্মী ও ৪৯ হাজার ৮৬৯ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। ক্যাম্পেইনে দ্বিতীয় ডোজ প্রাপ্তির ৪ মাস অতিবাহিত হয়েছে, এমন ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠী বুস্টার ডোজ এবং প্রথম ডোজ প্রাপ্তির নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও যারা দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেননি, এমন ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠী দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন', যোগ করেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'সরকার দেশের দুর্গম অঞ্চলগুলোতে বসবাসরত পিছিয়ে পড়া, ভাসমান ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী, পরিবহন ও কল-কারখানাসহ সব স্তরের শ্রমিক, অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারী, স্কুল-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ সব বিশেষ জনগোষ্ঠীকে কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের টিকা নিশ্চিত করে সার্বিক সংক্রমণ হার কমানোর মাধ্যমে জনজীবন ও দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে স্থিতিশীল করতে আমরা সফল হয়েছি। এরই ফলশ্রুতিতে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও দীর্ঘদিন পর খুলে দেওয়া হয়েছে। চলমান মহামারি নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের এই প্রয়াস বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, অচিরেই দেশের ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদেরকেও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনা হবে। সরকার এ বিষয়ে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।'

'ইতোমধ্যেই প্রাথমিক পরিকল্পনা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্যান্য বয়সসীমার জনগোষ্ঠীর মতো ৫-১১ বছর শিশুদেরকেও সুরক্ষা ওয়েবপোর্টাল বা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সুরক্ষা রেজিস্ট্রেশনের জন্য শিশুদের ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নম্বরের প্রয়োজন হবে। তাই আমি আজকের সেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের অভিভাবকদের দ্রুত শিশুর ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করার আহ্বান জানাচ্ছি', বলেন তিনি।

কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন একটি কার্যকর সমাধান উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, 'ভ্যাকসিন কোভিডজনিত মৃত্যুঝুঁকি কমায়। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যারা অন্তত ২ ডোজ ভ্যাকসিনের পাশাপাশি বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন, তাদের অধিকাংশেরই আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয়নি। তাই আগামী ১৯ জুলাই নিকটস্থ কেন্দ্র থেকে আপনার প্রাপ্য বুস্টার ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন এবং অন্যকেও টিকা নিতে উৎসাহিত করুন।'

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

7h ago