ওভারটাইম করেও খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন পোশাক শ্রমিক: সানেম

স্টার ফাইল ছবি

জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ফলে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের নির্ধারিত কাজের বাইরেও অতিরিক্ত কাজ (ওভারটাইম) করতে হচ্ছে। এতে তাদের আয় কিছুটা বাড়ছে। তারপরও মাসের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোফাইন্যান্স অপরচুনিটিজের (এমএফও) যৌথ গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে 'করোনকালীন সময় গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবন' শীর্ষক এক ওয়েবিনারে সানেমের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বজলুল হক খন্দকার এই তথ্য উপস্থাপন করেন।

সংস্থা ২টি 'গার্মেন্ট ওয়ার্কার ডায়েরিজ' শীর্ষক এই গবেষণার আওতায় ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ৩০০ জন নির্বাচিত পোশাক শ্রমিকের তথ্য সংগ্রহ করছে।

জরিপের আওতাধীন শ্রমিকরা বাংলাদেশের ৫টি গার্মেন্টস শিল্পঘন এলাকা—ঢাকা, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে কাজ করেন। জরিপের অন্তর্ভুক্ত শ্রমিকদের ৭৬ শতাংশই নারী।

ওয়েবিনারে অধ্যাপক বজলুল হক খন্দকার বলেন, 'পোশাক শ্রমিকরা প্রতিদিন গড়ে ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করছেন। খাদ্য এবং অতিরিক্ত ভাড়া বহন করতেই তাদের মজুরির বড় অংশ চলে যাচ্ছে।'

২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের সাধারণ মাসিক ভাড়া পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫০০ টাকা, যা ২ বছরের মধ্যে ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'অন্যদিকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে সাড়ে ১২ শতাংশ।'

তিনি জানান, পোশাক শ্রমিকদের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। বেতন ও ওভারটাইম মিলিয়ে তাদের মোট আয় বাড়লেও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি এবং বাসা ও যাতায়াত ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় খরচ আরও বেশি বেড়েছে।

তিনি জানান, গার্মেন্টস শিল্প দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে, দেশে প্রচুর অর্ডার আসছে। এ খাতে আরও বেশি শ্রমিক প্রয়োজন। তবে বর্তমানে সেই সংখ্যক শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

'অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য সরবরাহ ক্ষমতা বাড়ানোর ফলে বিদ্যমান শ্রমিকদের আরও বেশি সময় ধরে কাজ করতে হবে। এতে টেকসই কিছু হবে না,' যোগ করেন তিনি।

জরিপের ফলাফলে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় ৮০ শতাংশ শ্রমিক করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন, যেখানে নারী শ্রমিক ৭৭ শতাংশ।

ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় পরিচালিত বেশ কয়েকটি গবেষণার জের টেনে অধ্যাপক বজলুল বলেন, 'ওই দেশগুলো সামাজিক সুরক্ষা প্রোগ্রামের অর্থ বৃদ্ধি করার ফলে শ্রমের উত্পাদনশীলতা এবং প্রতিষ্ঠানের মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে।'

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের প্রজেক্ট ফিল্ড ম্যানেজার ফারাহ মারজান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এ সময় সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান এবং মাইক্রোফাইন্যান্স অপরচুনিটিসের পক্ষ থেকে প্রকল্পের ডিরেক্টর অব অপারেশনস, ড্যানিয়েলা ওর্তেগা সাম্বো বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English
Curfew in Gopalganj after clash

Curfew in Gopalganj after 4 die in clash

The curfew will be in effect until 6:00pm tomorrow

5h ago