অস্ট্রেলিয়ায় স্ক্যামিং অ্যাপের মাধ্যমে ২০ লাখ ডলার জালিয়াতি

ছবি: সংগৃহীত

'হাই মাম' নামের একটি মোবাইল স্ক্যামিং অ্যাপের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় মাত্র ৭ মাসে ২০ লাখ ডলারের বেশি জালিয়াতি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞরা।

অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ দেশটির নাগরিকদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

এই অ্যাপের মাধ্যমে স্ক্যামাররা একটি অজানা মোবাইল ফোন নম্বর থেকে মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনে অভিভাবকদের তাদের সন্তান দাবি করে মেসেজ পাঠায়।

ম্যাসেজে লেখা হয় যে, তারা তাদের ফোন হারিয়ে ফেলেছে। তাই নতুন একটি নম্বর থেকে যোগাযোগ করছে। অভিভাবককে পুরানো নম্বরটি মুছে ফেলতে বলা হয়।

সাইবার ক্রাইম পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে, যে সব সন্তানরা তাদের বাবা মা থেকে আলাদা বাস করেন তাদেরকেই মূলত লক্ষ্যবস্তু করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে স্ক্যামাররা। সাধারণত এইসব বাবা মায়ের বয়স হয় ৬৫ বছরের উপর এবং তারা একা থাকেন।

ভুক্তভোগী অভিভাবক ম্যাসেজের কথোপকথনে সাড়া দিলে মেসেজে টাকা পাঠানোর কথা বলা হয়।

সাধারণত বলা হয় নতুন ডিভাইসে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের অসুবিধা হচ্ছে। নতুন একটি অ্যাকাউন্টে অর্থ দিতে অনুরোধ করা হয়। 

অর্থপ্রদানের বিশদ বিবরণ দেওয়ার আগে স্ক্যামাররা সাধারণত বলে যে, টাকা তার খুব জরুরি প্রয়োজন। টাকা না পেলে বড় ধরনের অসুবিধা হবে। বৃদ্ধ বাবা মা আতঙ্কিত হয়ে অর্থ টাকা পাঠান।

অস্ট্রেলিয়ার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে করা 'হাই মাম' কেলেঙ্কারির রিপোর্টের অর্ধেকেরও বেশি নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়া রাজ্যের অভিভাবকরা করেছেন। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া এবং কুইন্সল্যান্ড রাজ্যেও জালিয়াতির কিছু খবর পাওয়া গেছে।

নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের সাইবার ক্রাইম স্কোয়াডের কমান্ডার ও গোয়েন্দা সুপারিন্টেনডেন্ট ম্যাথিউ ক্র্যাফ্ট বলেন, কেবল নিউ সাউথ ওয়েলসে নয় 'হাই মাম' কেলেঙ্কারি গত বছরের অক্টোবর থেকে পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

গোয়েন্দা বিভাগ এই স্ক্যামারদের সন্দেহজনক আচরণের দিকে নজর রাখতে অস্ট্রেলিয়ানদের পরামর্শ দিয়েছে। কেন সন্তানরা ফোনে কথা বলতে পারছে না এবং কেন শুধু ম্যাসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করছে সেটির ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে বলেছেন সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেছেন, 'আপনি যদি মোবাইলে একটি সন্দেহজনক বার্তা পান, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া বা এনক্রিপ্ট করা মেসেজিংয়ের মাধ্যমে তাহলে যোগাযোগের বিকল্প পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং নিশ্চিত হন যে ম্যাসেজটি আসলে তাদেরই।'

অস্ট্রেলিয়ান সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার তদন্ত করে জানতে পেরেছে, স্ক্যামিং দ্বারা প্রাপ্ত অর্থ সাধারণত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে দ্রুত 'ক্রিপ্টোকারেন্সিতে' স্থানান্তরিত হয় এবং ভুক্তভোগীদের অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

তবে গোয়েন্দা পুলিশ বলেছে, যারা জালিয়াতির শিকার হয়ে অর্থ হারিয়েছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগসহ বিষয়টি পুলিশে রিপোর্ট করা উচিত।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

IMF sets new loan conditions

Bangladesh must clear dues, hit steep revenue, reserve targets for next tranche

7h ago