মালয়েশিয়ায় পাওয়া গেল অপহৃত সোহেলের মরদেহ

অপহরণের ১১ দিন পর মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি সোহেল মিয়ার (৩৯) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
অপহৃত সোহেল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

অপহরণের ১১ দিন পর মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি সোহেল মিয়ার (৩৯) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী কুয়াললামপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সেলাঙ্গর রাজ্যের সেরিকাম বাগানের তামিং জায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১০ নম্বর রোডের একটি কারখানার পেছনের জঙ্গল থেকে সোহেলের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় কাজাং থানা পুলিশ।

মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন ও সোহেলের প্রবাসী স্বজনরা তার মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

কাজাং ওসিপিডির সহকারী কমিশনার মোহম্মদ জাইদ হাসান বলেন, 'মরদেহে পচন শুরু হয়েছিল এবং হাত ও মুখ টেপ দিয়ে বাঁধা ছিল।'

তিনি জানান, অপহরণের ঘটনায় আটক ৪ প্রবাসী বাংলাদেশির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে সোহেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোহেলের মামা মিজানের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে কাজাং থানা পুলিশ অভিযান শুরু করেছিল।

আজ সকালে সারডাং হাসপাতালে মরদেহ নিয়ে আসার পর সোহেলের মামা মিজান তার মরদেহ শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে কুয়ালালামপুরের তামিলজায়া এলাকায় নিজ বাসার কাছ থেকে সোহেল মিয়াকে অপহরণ করা হয়। তাকে 'মেরে ফেলারও হুমকি' দেওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বরিশালের একটি ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে অপহরণকারীদের দাবি করা ৫ লাখ টাকার মুক্তিপণও পাঠায় তার পরিবার। কিন্তু এরপরও মুক্তি না পাওয়ায় মালয়েশিয়ায় ২টি ও দেশে ১টি মামলা করে সোহেলের পরিবার। এ ছাড়াও, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনেও সহায়তা চেয়ে আবেদন করা হয়।

সোহেল টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দক্ষিণ ধলাপাড়া গ্রামের মরহুম আহমেদ মিয়ার ছেলে। ১৫ বছর ধরে তিনি মালয়েশিয়াপ্রবাসী। সেখানে তিনি একটি কারখানায় কাজ করতেন।

কাজং পুলিশ জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৫ অক্টোবর বিকেলে বেরানং এলাকা থেকে ২ বাংলাদেশি এবং পরদিন সেমেনিহে এলাকা থেকে আরও ২ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মামুন শিকদার ও আলমগীরের নাম প্রকাশ হলেও তদন্তের স্বার্থে বাকি ২ জনের নাম এখনো জানায়নি পুলিশ।

একই ঘটনায় গত ৪ অক্টোবর বরগুনা থেকে মুক্তিপণের টাকাসহ নাসির উদ্দিন (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানায় সোহেলের বোনজামাই বিল্লাল হোসেনের দায়ের করা অপহরণ মামলার সূত্রে নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার ঘাটাইল থানা পুলিশের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে নাসিরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর কনসুলার জিএম রাসেল রানা বলেন, ৪ অপহরণকারী গ্রেপ্তার এবং তাদের জবানবন্দির ভিত্তিতে সোহেল মিয়ার মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি মালয়েশিয়া পুলিশ প্রশাসন আমাদের নিশ্চিত করেছে। কী কারণে, কীভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। অপহরণের ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারে মালয়েশিয়া পুলিশ কাজ করছে।'

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, 'সোহেল মিয়া অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত চক্রের সবাইকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে। প্রবাসে যারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।'

'সোহেল রানা অপহরণের পর থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হাইকমিশন মালয়েশিয়ার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ বাংলাদেশের পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে  সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে', যোগ করেন তিনি।

লেখক: মালয়েশিয়াপ্রবাসী সাংবাদিক

 

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago