মালয়েশিয়ায় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স সম্মাননা পদক পেলেন ৯ বাংলাদেশি

মালয়েশিয়া থেকে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ প্রবাসী বাংলাদেশি পেলেন সম্মাননা পদক।
সম্মাননাপ্রাপ্ত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়া থেকে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ প্রবাসী বাংলাদেশি পেলেন সম্মাননা পদক।

বৈধ চ্যানেলে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করতে তাদেরকে এই সম্মাননা দিয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।

সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন— মো. মকবুল হোসাইন মুকুল, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. ফয়সাল আহমেদ, আহমেদ সাদী ইয়ামিন, মো. হাবিব, জামান মোহাম্মদ বাহাদুর খাঁন, মো. আমিনুর রহমান, আলি আহমেদ এবং মো. আব্দুছ ছাবুর।

গত রোববার মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের ক্লাং-এ একটি হোটেলে আয়োজিত আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে তাদের হাতে সম্মাননা পদক ও সনদ তুলে দেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার।

অনুষ্ঠানে হাইকমিশন কর্মকর্তা, মালয়েশিয়া সরকারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও অভিবাসী কর্মী নিয়োগ কর্তা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতাসহ ৩ শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্য হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, 'মেধা, শ্রম ও দক্ষতার জন্য মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের বেশ সুনাম রয়েছে। পাশাপাশি তারা রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। গত বছর প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়ে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেন মালয়েশিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।'

তিনি জানান, রিহিয়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় বৈধতাপ্রাপ্তদের জন্য ৬ নং ভিসা দ্রুত দেওয়ার জন্য কূটনৈতিক যোগাযোগে মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ বছর মালয়েশিয়াতে ৭২৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬০ জনের মরদেহ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশে পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বাকি ৬৪ জনকে মালয়েশিয়াতে সমাধিস্থ করা হয়েছে।

আরও জানানো হয়, বাংলাদেশি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে দেশটির সোশ্যাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে ৬ হাজার ৪০৮ জন কর্মী ও তাদের পরিবারকে ২ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ এবং অন্য সুবিধাদি দেওয়া হয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রম অধিদপ্তর থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ৬০ লাখ রিঙ্গিত বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, মালয়েশিয়া থেকে দ্রুত দেশে পাঠাতে অনিয়মিত ৩ হাজার ৫০ জন এবং জেল ও  ক্যাম্পে থাকা ১ হাজার ৩০৬ জন বাংলাদেশিকে হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল পারমিট প্রদান করা হয়েছে।

হাইকমিশনের মিনিস্টার (শ্রম) মো. নাজমুছ সাদাত সেলিম বলেন, 'সরকারের দেওয়া সব সুযোগ-সুবিধা পেতে বাংলাদেশি কর্মীদের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হওয়া জরুরি। হাইকমিশনে এসে সহজে সদস্য হওয়ার সুযোগ রয়েছে।'

প্রবাসী শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও র‌্যাফেল ড্রয়ের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

লেখক: মালয়েশিয়াপ্রবাসী সাংবাদিক

Comments