মালয়েশিয়ায় ‘বাংলা স্কুল’ চালুর আহ্বান

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সন্তানদের জন্য হাইকমিশনের উদ্যোগে একটি বাংলা মাধ্যমের স্কুল চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী শিক্ষাবিদ, সংগঠক ও সাংবাদিক নেতারা। 
মালয়েশিয়ার বাংলা প্রেসক্লাবের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে
মালয়েশিয়ার বাংলা প্রেসক্লাবের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ ও সংগঠকরা। ছবি:সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সন্তানদের জন্য হাইকমিশনের উদ্যোগে একটি বাংলা মাধ্যমের স্কুল চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী শিক্ষাবিদ, সংগঠক ও সাংবাদিক নেতারা। 

তারা বলেন, 'মালয়েশিয়ায় ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি পেশাদার প্রবাসী পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন এবং এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।'

'আন্তর্জাতিক স্কুলে পড়াশোনা করা ব্যয়বহুল এবং স্কুলে শিশুদের বাংলা শেখার সৌভাগ্য হয় না। মালয়েশিয়ান স্কুলগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মালায়, চাইনিজ ও ইংরেজি পড়ানো হয়। তাই বাংলাদেশি পাঠ্যক্রমে স্কুলের প্রয়োজনটা জরুরি', যোগ করেন তারা।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুরের একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলা প্রেসক্লাব আয়োজিত আলোচনা সভা ও গুণী প্রবাসী সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলা হয়।

বাংলা প্রেসক্লাব মালশিয়ার সভাপতি আহমাদুল কবির ও ইয়ুথ হাবের সভাপতি পাভেল সারওয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয় এবং ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।  

বক্তারা আরও বলেন, 'বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বাংলা ভাষার যথাযথ চর্চা, ব্যবহার এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে হবে। প্রবাসী প্রজন্মকে মাতৃভাষায় গড়ে তুলতে হবে।'

প্রধান অতিথি বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) এ এস এম জাহিদুর রহমান বলেন, 'বিশ্বের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশিরা মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। সেই হিসেবে আমরা বাঙালি হিসেবে গর্বিত জাতি।'

তিনি বাংলা স্কুলের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা ছাড়াও শিক্ষা-গবেষণায় যে কোনো সহায়তার প্রয়োজনে হাইকমিশন পাশে থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

এ সময় বক্তব্য দেন সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ছাইদুর রহমান, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক ড. আহসানুল হক, ইউনিভার্সিটি তেনেগার অধ্যাপক এম এ হান্নান, ডাচ-বাংলা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক লায়ন হারুন ওর রশিদ, ইউনিভার্সিটি কেলান্তানের সিনিয়র লেকচারার ড. লায়লা নাহার, বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতা মো. রাশেদ বাদল, ইয়ুথ হাবের সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া জাফরন চৌধুরী, ইউনিভার্সিটি উতারার গবেষক হুমায়ন কবির, বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বশির আহমদ ফারুক, ওহেদুল ইসলাম সোহান, মোহাম্মদ আলী।

উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার ভাষা ও সাহিত্য ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধি সিতি নুরসুহাইলা বিনতি সামসুদ্দিন, মাহাশা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. নাজমুল হাসান মাজিজ, ইউনিসেল ইউনিভার্সিটি সহযোগী অধ্যাপক ড. আবুল বাশার, অগ্রণী রেমিটেন্স হাউসের পরিচালক সুলতান আহমদ, মো. মুস্তাফিজুর রহমান, রেড লাইভের সম্পাদক তাহমিনা বারি রিনি, ফারজানা সুলতানা, প্রবাসী সংগঠক ইমরান হোসাইন, এমদাদুল হক সবুজ, সুনাহর খান রশিদ, আমজাদ খান।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবদান রেখে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার স্বীকৃতিস্বরূপ কৃতি প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

সম্মাননা পেয়েছেন ব্যবসায় ও কমিউনিটি সেবায় দাতুশ্রী কামারুজ্জামান কামাল, মিন্টু মাহফুজ ও মো. কাউসার হোসাইন, শিক্ষা ও গবেষণায় ড. লায়লা নাহার, ড. আহসানুল হক, ড. ছাইদুর রহমান সিএইপি, ড. এম এ হান্নান ও ড. তারিকুল ইসলাম, কৃতি শিক্ষার্থী হিসেবে বৃষ্টি খাতুন, মিশায়ার রায়হান চৌধুরী, মোহাম্মাদ ফয়জাল ও ফাইরিজ, নারী উন্নয়নে সুমাইয়া জাফরিন চৌধুরী এবং ক্রীড়ায় ইংল্যান্ডের কেন্ট কাউন্টি ক্লাবের বোলিং কোচ ক্রিকেটার শেখ জাহিদ আহমেদ।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলা প্রেসক্লাব মালয়েশিয়ার প্রকাশনা প্রবাসের মাতৃভাষা সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

লেখক: মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক

Comments