অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমে ড. ইউনুসের কারাদণ্ডের রায়

অস্ট্রেলিয়ার সাইট নিউজ ডট কম ও দ্য ক্যানবেরা টাইমের প্রতিবেদনে ড. ইউনূসের সাজার রায়ের সংবাদ। ছবি: সংগৃহীত

শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার শ্রম আদালত। 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে ড. ইউনূসের কারাদণ্ডের রায়ের খবর। 

অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক সংবাদ সাইট নিউজ ডট কমের পাঠক সংখ্যা ১ কোটির বেশি। ড. ইউনুসের কারাদণ্ডের রায়ের পর সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, 'নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে সোমবার বাংলাদেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই রায়কে তার সমর্থকরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।'

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, 'শেখ হাসিনার প্রশাসনের রাজনৈতিক ভিন্নমতের বিরুদ্ধে আক্রমণ ক্রমশ বেড়ে চলেছে এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে ইউনূসের জনপ্রিয়তা তাকে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।'

এতে আরও লেখা হয়, 'ইউনূস ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংকের মাধ্যমে লাখো মানুষকে দারিদ্র্যতা থেকে বের করে আনার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শত্রুজ্ঞান করায়, তাকে তিনি দরিদ্রদের "রক্তচোষা" হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন।'

নিউজ ডট কমের বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে, 'বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর বিরুদ্ধে জঘন্য মৌখিক আক্রমণ করেছেন, যাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখা হয়।'

প্রতিবেদনের শেষে বলা হয়েছে, 'বিরোধীরা বয়কট করলেও আগামী সপ্তাহের নির্বাচনে আরও একটি মেয়াদে হাসিনার জয় নিশ্চিত। বাংলাদেশের আদালতকে হাসিনা সরকার নির্বাচনে জয়ী হতে ব্যবহার করছে বলে সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন।'

দ্য ক্যানবেরা টাইম লিখেছে, 'বাংলাদেশের রাজধানীর একটি আদালত দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।'

এতে আরও লেখা হয়েছে, 'ইউনূস যেহেতু পশ্চিমা রাজনৈতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের জন্য পরিচিত, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, অনেকে মনে করেন এই রায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।'

তবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সোমবার বলেছেন, কোনো ব্যক্তির ইস্যু বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে না।

ইউনূসের সমর্থকরা মনে করেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।'

এক্সামিনারের প্রতিবেদনে ড. ইউনূসের সাজার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, 'আগস্টে ১৭০ জনের বেশি বিশ্বনেতা এবং নোবেল বিজয়ীরা একটি খোলা চিঠিতে ইউনূসের বিরুদ্ধে সব আইনি প্রক্রিয়া স্থগিত করার জন্য হাসিনাকে অনুরোধ করেছিলেন।'

'সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ নেতৃবৃন্দ চিঠিতে বলেছেন যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি সাম্প্রতিক হুমকির কারণে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।'

দ্য নর্থ ওয়েস্ট স্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে শিরোনাম করে লিখেছে, 'নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথিত দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। সোমবারের রায়টি যখন এসেছে, তখন বাংলাদেশ ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ওই নির্বাচন বয়কট করেছে।' 

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Hasnat calls for mass rally after Juma prayers demanding AL ban

The announcement came during an ongoing protest programme that began last night in front of Jamuna.

4h ago