আমিরাতে ১০ বাংলাদেশি শিক্ষককে সম্মাননা

এই শিক্ষকরা আমিরাতে সর্বনিম্ন ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড ও সিবিএসই বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা বিষয়ে পাঠদান করে আসছেন।
রোববার রাতে শারজায় এক অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের সম্মাননা দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

ভাষার মাস উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় আঞ্চলিক ভাষা তুলে ধরা ও বহির্বিশ্বে ভিনদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা পাঠদানকারী বাংলাদেশি শিক্ষকদের সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। 

রোববার রাতে শারজায় 'মায়ের ভাষায় কথা বলি' শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। 

এ আয়োজনে ১০ জন বাংলাদেশি শিক্ষককে সম্মানিত করা হয়, যারা সে দেশে সর্বনিম্ন ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড ও সিবিএসই বোর্ডের অধীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা বিষয়ে পাঠদান করে আসছেন।

সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন-অধ্যাপক নুরুন নাহার হুদা, রহিমা ইসলাম, সুমনা দাস, অধ্যাপক এস এম আবু তাহের, আবু তাহের মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, নাসরীন সুলতানা, শেখ কানিজ-এ-ফেরদৌস, রহিমা সেলিনা সিদ্দিকী, স্নিগ্ধা সরকার তিথী ও জুইঁয়েনা আক্তার।

আমিরাতে ৩০ বছর বাংলা বিষয়ে শিক্ষকতা শেষে অবসরে যাওয়া অধ্যাপক নুরুন নাহার হুদা সম্মাননা পেয়ে বলেন, 'সংযুক্ত আরব আমিরাতে নতুন এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হলো। এই প্রথম শিক্ষকদের একই মঞ্চে দাঁড়ানোর সুযোগ হলো। এর আগে কোনো সামাজিক, রাজনৈতিক বা সেবামূলক সংগঠন বাংলাদেশি শিক্ষকদের আলাদাভাবে সম্মান জানায়নি। এই ভালোবাসা আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান।' 

এই শিক্ষকরা আমিরাতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা বিষয়ে পাঠদান করছেন। ছবি: সংগৃহীত

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন বলেন, 'মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করা জাতির কাছে ভাষা গুরুত্বপূর্ণ হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এই ভাষা দূর পরবাসে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের কাছে যারা পৌঁছে দিচ্ছেন তাদের সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব একটি মহৎ কাজ করেছে। তাছাড়া আঞ্চলিক ভাষায় যে বৈচিত্রতা তারা তুলে ধরেছেন এটিও প্রশংসনীয় কাজ।' 

এ সময় তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের দুবাই ও উত্তর আমিরাতে আন্তর্জাতিক মানের একটি বাংলাদেশি স্কুল প্রতিষ্ঠা ও শিশু-কিশোরদের জন্য বাংলা ভাষা চর্চা কেন্দ্র চালু করতে বাস্তবমুখী ও সাহসী উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষা চর্চায় উৎসাহিত করতে ও আঞ্চলিক ভাষার মর্যাদা রক্ষায় একটি বিশেষ পর্ব হয়। এতে দেশের আটটি বিভাগের আঞ্চলিক ভাষাসহ প্রায় বিলুপ্ত উপভাষায় নিজ অঞ্চলের ভাষার বৈচিত্র্য ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন প্রবাসীরা। এতে ঢাকার কুট্টি ভাষায় রেজা খান, চাটগাঁইয়া ভাষায় মোস্তফা মাহমুদ, সিলেটি ভাষায় হাজী শফিকুল ইসলাম, রংপুরের ভাষায় স্নিগ্ধা সরকার তিথী, ময়মনসিংহের ভাষায় উত্তম কুমার সরকার, বরিশালের ভাষায় সাথী আক্তার প্রিয়া, খুলনার ভাষায় শাহীদ ইসলাম, বরেন্দ্র এলাকার উপভাষায় সানজিদা আঞ্জুম শিমুল ও নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কামাল হোসাইন সুমন নিজের অঞ্চলকে তুলে ধরেন। 

এছাড়া অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন জামাল হোসেন, আবিদা হোসেন, শিবলী আল সাদিক, এস এম শাফায়েত, রাহবার আবদুল্লাহ শিবলী, রুহিন হোসেন ও সাকিয়া সিদ্দিকা জেরিন। 

শিবলী আল সাদিকের সভাপতিত্বে ও কামরুল হাসান জনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পরিবেশ বিজ্ঞানী রেজা খান, বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (প্রেস) আরিফুর রহমান, শারজাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আহমেদ হোসাইন ও বাংলাদেশ সমিতি দুবাইয়ের সিনিয়র সহ সভাপতি ইয়াকুব সুনিক, বাংলাদেশ সমিতি শারজার সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে শারজাহ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড ও সিবিএসই বোর্ডের অধীনে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

22h ago