নানা দেশে দুর্গাপূজা

Durga puja in London
লন্ডনে দুর্গাপূজা। ছবি: সংগৃহীত

পূজা মানেই আনন্দ, পূজা মানেই উসব। ধর্ম আলাদা হলেও উসব আর আনন্দ সবার। ঈদের সময় ধর্মভেদে সবাই যেমন আনন্দ উপভোগ করে, ঠিক তেমনি পূজার ক্ষেত্রেও নিজ নিজ ধর্মকে পাশে রেখে একসঙ্গে সময় কাটায়, আনন্দের পসরা সাজায় মানুষ। আর এটি যেমন বাংলাদেশের জন্য সত্য, তেমনি সত্য পৃথিবীর অন্য সব দেশের ক্ষেত্রেও। এখন চলছে দুর্গাপূজা। চলুন এক পলকে দেখে আসি বিভিন্ন দেশে দুর্গাপূজার আয়োজন কেমন হয়।

 

নেপাল

হিন্দু প্রধান নেপালে হিন্দুধর্মকে জাতীয় ধর্ম হিসেবে গণ্য করা হয়। ফলে দেশটিতে দুর্গাপূজা বা দশহারা উদযাপন করা হয় বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে। পূজার আয়োজনগুলোতে, বিশেষ করে সপ্তমীতে রাজা বেশ বড় ভূমিকা পালন করেন।

ওমান

ওমানের মাস্কাটে বাস করা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দুর্গাপূজা ঠিক ততটাই উপভোগ করার চেষ্টা করেন যতটা কী না তাঁদের নিজেদের দেশে থাকাকালে করতেন। আর তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তো রয়েছেনই। নিয়ম মেনে অষ্টমী আর নবমীতে ভোগ হয় সেখানে। সেই সঙ্গে অঞ্জলি দেওয়া হয় শিব মন্দিরে। দশমীর দিন বিজয়া সম্মিলনী আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় উৎসবের কার্যক্রম।

যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুর্গাপূজায় আনন্দ করা থেকে বিরত থাকেন না হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। প্রবাসী হিন্দু ও বাঙালি পরিবারগুলো ধর্মকে পাশে রেখে একে অন্যের সঙ্গে খুব ভালো কিছু সময় কাটায় এ সময়। সিনেমা দেখা, ঘোরাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, ঐতিহ্যবাহী কাপড় পরা হয় এ উপলক্ষে। এছাড়াও, দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী হিন্দু ধর্মাম্বলীরা পূজা চলাকালে যে কোনো ছুটির দিনকে বেছে নিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা সারেন। সেখানে জড়ো হন কাছে-পিঠের সবাই। তাদের অংশগ্রহণে বেশ জমে ওঠে উসব।

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ায় দুর্গাপূজা মূলত অনুষ্ঠিত হয় সিডনি, মেলবোর্ন ও পার্থে। প্রবাসী বাঙালিরাই এ উৎসবের মূল উদ্যোক্তা। তবে ছুটি থাকে না বলে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয় শনি ও রবিবারে। ভেদাভেদ ভুলে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন সবাই।

যুক্তরাজ্য

প্রতি বছর যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের ইয়েলিং টাউন হলে পূজার আয়োজন করে লন্ডন শারদ উসব কমিটি। শুধু তা-ই নয়, ২০০৬ সাল থেকে লন্ডনের টেমস নদীতে দুর্গামূর্তি নিমজ্জনের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। তাই কেবল মুখে মুখে নয়, বাস্তবেই আসল পূজার আমেজ পাওয়া যায় লন্ডনের দুর্গাপূজাতে।

মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর

মালয়েশিয়ান বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন এবং বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অব সিঙ্গাপুর - এ দুটি সংগঠনের কর্মতপরতার ফলাফল হিসেবে প্রতি বছর এ দুই দেশেই আয়োজিত হয় দুর্গাপূজা। ভোগ ও অঞ্জলি দেওয়া হয়। পালন করা হয় নানা ধর্মীয় আচার।

ভারত

পৃথিবীর আর যে কোনো দেশের চেয়ে ভারতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বেশি। তাই খুব ধুমধামের সঙ্গে দুর্গাপূজা পালিত হবে দেশটিতে। তবে সেটি মূলত বাংলাভাষী অঞ্চলে। কারণ হিন্দি বলয়ে কালীপূজা বা দেওয়ালি এবং মারাঠি বলয়ে গণেশ পূজা হয় মহাসমারোহে। ভারতের অন্যান্য প্রদেশে প্রবাসী বাঙালিরা দুর্গাপূজা করে থাকেন। তবে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এই পূজার জাঁকজমক বেশি। কলকাতার পূজা তো রীতিমতো ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। আয়োজনের তোড়জোড় শুরু হয় বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই। রাষ্ট্রীয় ছুটি তো থাকেই, সে সঙ্গে প্রথম দিন থেকে দশম দিনের দুর্গামূর্তি বিসর্জন পর্যন্ত সবটাই পালন করা হয় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে। এরপরও কয়েক দিন থেকে যায় উসবের আমেজ।

Comments