জুতসই ভ্রমণ পোশাক

ভ্রমণের মওসুমে জানা চাই উপযোগী পোশাক তত্ত্ব স্থান, পরিবেশ, আবহাওয়াভেদে  পরিবর্তন আসে পোশাকের। তাই কখন কোথায় কী পোশাক সঙ্গে রাখা উচিত তা জানা ও মানা  জরুরি।

রবীন্দ্রনাথ থেকে আহমদ ছফা- অনেক লেখক-সাহিত্যিকের লেখায় পাওয়া যায় পরিবেশ ও চরিত্রভেদে ভ্রমণের পোশাকি বিবরণ। অর্থাৎ ভ্রমণে পোশাকের গুরুত্ব সাহিত্যেও প্রমাণিত। প্রমাণিত ফ্যাশনেও। মাথায় রাখা জরুরি ব্যাগপ্যাকে কী নিচ্ছি আর কী নিচ্ছি না; কোন পরিবেশে কেমন পোশাক নাহলেই নয়। যারা এ মৌসুমে ঘোরাঘুরিকে দেশেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান তাদের জন্য এক হিসাব। আর যারা দেশের গন্ডি পেরোবেন তাদের হিসাব আলাদা।

গন্তব্য যদি হয় বান্দরবান, খাগড়াছড়ি এসব অঞ্চল, তাহলে অবশ্যই পাহাড় মাথায় রেখে নেয়া চাই পোশাক-পরিচ্ছদ। সেক্ষেত্রে পাহাড়ে ওঠার হাফপ্যান্ট হতে হবে মোবাইল পকেট স্টাইলের। এতে করে চলাফেরার জন্য দরকারি জিনিস বহন করার সুবিধা হয়। খুব বেশি শীত হলে কার্গো প্যান্ট একদম জুতসই হবে। বেশি শক্ত কাপড়ের অথবা ভারী প্যান্ট না পরাই উচিত এমন জায়গায়। তাতে নিজেরই চলার অসুবিধা হবে।

পায়ের নিচে অবশ্যই অধিক খাদওয়ালা জুতা থাকা জরুরি। তাই স্নিকার হতে পারে এমন ভ্রমণসঙ্গী। শীত বুঝে গায়ে জড়াতে হবে ওপরের পোশাক। আর অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, কিছুদূর হাঁটাহাঁটির পর শরীর গরম হবে। তাই খুব ভারী জ্যাকেট এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। সঙ্গের ব্যাগপ্যাকে ২-১টা দরকারি জামা নিয়ে নিতে পারেন। আবার ভর্তিব্যাগ কাঁধে নিয়ে ঘোরারও দরকার নেই। জিন্স প্যান্ট পরলে তা অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া চাই। অনেকেই গ্যাবার্ডিন কাপড়ের চিনোস পরে রওনা হন। যারা গ্যাবার্ডিনপ্রেমী তাদের জন্য খুব ঝামেলা যে তা নয়। তবে নিশ্চিত হয়ে নিন তা বহনে কোনো অসুবিধা হবে কিনা। অন্যথায় সাধের ঘোরাঘুরি পন্ড হবে।

স্বভাবগতভাবেই কিছু মানুষ পাহাড়-পর্বত থেকে সমুদ্রকেই বেশি ভালোবাসেন। তাদের জন্য তাই আলাদা পোশাক রীতি। দেশীয় সমুদ্র সৈকতে সাধারণত খুব একটা শীত অনুভব করা যায় না। তাই স্বচ্ছন্দেই পরা যায় পোশাক। কিন্তু তীরে ঘুরতে হাফপ্যান্ট বা পাতলা ট্রাউজারই বেশি মানানসই। সঙ্গে টি-শার্ট। আর সি-বিচের হাফপ্যান্ট অবশ্যই মোবাইল পকেট স্টাইলের নয়। এখানে সিনথেটিক কাপড়ের ফুটবল প্যান্টের মতো পোশাক উপযুক্ত হবে। টি-শার্টও হতে পারে সে রকম কাপড়ের। একটু শীত শীত থাকলে ফুলহাতা নিতে ভুল করা উচিত নয়। অনেকে পোলো-শার্ট পরেও এসব জায়গায় ঘোরাঘুরি করে আসেন। কিন্তু পোলো শার্টের ব্যাপার ভিন্ন। এসব জায়গায় গোল গলা মানানসই এবং ফ্যাশনেবল। রোদচশমা সঙ্গে থাকা খুব বেশি জরুরি নাহলেও একদম ফেলে দেয়ারও নয়। কারণ সমুদ্র তীর খোলা জায়গা। খোলা জায়গা মানে রোদের হানা। তাই রোদচশমার সঙ্গে ক্যাপ বা হ্যাট নিলেও মন্দ হয় না। সাগরের  পাড় সাধারণত বেলে বা কাদামাটি হয়ে থাকে। তাই ভুলে পুরো ঢাকা জুতা পরে যাওয়া ঠিক হবে না। স্লিপারই জুতসই হবে এক্ষেত্রে।

এ দেশ রূপের বৈচিত্র্যে ভরা। পাহাড়-সমুদ্র বাদেও শীতের গ্রাম দেখার মজাই আলাদা। ওখানে পাওয়া যায় শিশির ভেজা মেঠো পথ, হলুদ সরষে ক্ষেত, ভোরের খেজুর রস। তাই এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে গ্রাম অঞ্চলে যাবেন অনেকেই। তাদের জন্য সোজা হিসাব-শীতের গরম কাপড়। সঙ্গে স্কার্ফ, মাফলার, কান টুপি। যারা একদমই শহরে থেকে অভ্যস্ত তাদের ক্ষেত্রে একটু বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে জামাকাপড়ের বেলায়। কেননা, গ্রাামের ভিন্ন আবহাওয়ায় হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন তারা। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যত্নটা দ্বিগুণ নিতে হবে। আবার হাওর-বাঁওড় দেখতে যাবেন কেউ কেউ। অনেকে আবার যাবেন সুন্দরবনের মতো জায়গায়। এসব জায়গায় গ্রামের মতো একই হিসাব।

দেশের বাইরে যারা যেতে চান তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। কারণ একেক দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ একেক রকম। যেমন- পশ্চিমা দেশগুলোতে একটু শীত বেশিই থাকে। আবার একই দেশে দু’তিন রকমের আবহাওয়াও থাকে। এই যেমন ভারতের কথাই ধরুন। উত্তরে এক তো দক্ষিণে বা পশ্চিমে আরেক। তাই যে দেশের যে অঞ্চলে যাচ্ছেন, যাওয়ার আগে ইন্টারনেটে সেখানের আবহাওয়া ও পোশাক সম্পর্কে খোঁজ নিতে পারেন সহজেই। আর ওখানে কোনো স্বজন থাকলে তো কথাই নেই। আর সবার ওপরে রয়েছে গুগলমামা। সুতরাং সব মুশকিল আসান তিনিই করবেন। তাই আর দেরি কেন, বেরিয়ে পড়ুন সুবিধামতো।

ছবি : ওহি ও ফ্রেন্ডস

 

Comments

The Daily Star  | English

‘Use firearms in self-defence’

After a police officer was attacked during a raid in the port city, Chattogram police chief Hasib Aziz told officers to be ready to use arms for self-defence.

22m ago