ইজিপিতে বছরে সরকারের সাশ্রয় ৬০ কোটি ডলার: সিপিটিইউ

অনলাইনে দরপত্র কার্যক্রম পরিচালনার ফলে সরকারের বছরে প্রায় ৬০ কোটি ডলার সাশ্রয় হচ্ছে। পাশাপাশি এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বছরের সরকারের আয় হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটে (সিপিটিউ) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনের বরাতে এসব তথ্য জানান সিপিটিউ'র মহাপরিচালক মো. শোহেলের রহমান চৌধুরী
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ণ বিভাগের (আইএমইডি) সদ্যবিদায়ী সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান।
মোরশেদ জামান বলেন, 'ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ইজিপি)তে কাজ করার ফলে, কাজের ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিশ্বব্যাংক এটিকে পছন্দ করেছে। বিভিন্ন দেশকে তারা পরামর্শ দিচ্ছে বাংলাদেশের ইজিপি কার্যক্রম অনুসরণ করার জন্য। মোজাম্বিকের একটি দল ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণের জন্য এসেছে।'
'পুরো প্রক্রিয়াটিই এখন কাগজবিহীন হয়েছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনায় বড় অংশীদারিত্ত্ব রয়েছে সিপিটিইউর। ইতোমধ্যে আইএসও সনদ ও ডিরেক্টর অ্যাওয়ার্ড এর বড় অর্জন,' বলেন তিনি।
সিপিটিইর মহাপরিচালক শোহেলের রহমান বলেন, 'বর্তমানে ইজিপি সিস্টেমের মাধ্যমে আহবানকৃত দরপত্রের বিজ্ঞাপন ও চুক্তির শতভাগ প্রকাশিত হচ্ছে। দরপত্রের ৯৯ শতাংশ নির্ধারিত দরপত্র মেয়াদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হচ্ছে। এ সিস্টেম হতে বছরে ৪০০-৪৫০ কোটি টাকা আয় হয়। এ ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বেমোট আয় ১ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা।'
তিনি বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'ইজিপি চালুর পর ক্রয় প্রক্রিয়াকরণের গড় সময় ৮৬ দশমিক ৭ দিন থেকে ৫৮ দিন হয়েছে। ইজিপি সিস্টিম ব্যবহারের ফলে বার্ষিক ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৬০ কোটি ডলার) সাশ্রয় হচ্ছে। দরদাতাদের ৪৯৭ মিলিয়ন কিলোমিটার ভ্রমণ দূরুত্ব কমেছে, ১ হাজার ৫৩ মিলিয়ন পাতা কাগজ সাশ্রয় হয়েছে এবং ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৫৯ টন কার্বন নিসরন কম হয়েছে।'
শোহেলের রহমান আরও বলেন, '২০১১ সালের ২রা জুন উদ্বোধন হয় ইজিপি পোর্টাল। তখন থেকে চলতি ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ইজিপিতে আহ্বানকৃত দরপত্রের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। নিবন্ধিত দরদাতার সংখ্যাও ১ লাখের বেশি। ৫৯টি ব্যাংকের ৬ হাজার ৫০০ শাখার বেশি সারাদেশে দরদাতাদের পেমেন্ট সেবা দিচ্ছে। অনলাইনেও পেমেন্ট চলছে। বিশ্বব্যাপি করোনা পরিস্থিতিতেও ইজিপির একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। ইতোমধ্যে এ সিস্টেমটি আইএসও সনদ পেয়েছে।'
এসময় আরও জানানো হয়, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কাজের বাস্তবায়ন মান সম্মত হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে স্থানীয় নাগরিকদের মাধ্যমে নির্বাচিত ক্রয় কাজের পরিবীক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ৮ বিভাগের ১৬ জেলার ৪৮ উপজেলায় এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। ৪৮টি উপজেলায় ৩১৬টি চুক্তি বা কাজ পরিবীক্ষণ করা হয়েছে।
উল্লিখিত বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনের পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে ইতোমধ্যে সরকারি ক্রয়ে নাগরিক সম্পৃক্ততা সংক্রান্ত মডেল চূড়ান্ত করা হয়েছে।
Comments