ঈদে পর্যটক কম হওয়ার আশঙ্কা

‘২৯ জুন ঈদের পর প্রায় ৫০ হাজার পর্যটক কক্সবাজারে আসতে পারেন।’
কক্সবাজার সাগর সৈকত। ছবি: মোকাম্মেল শুভ/স্টার

চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের পর্যটনসেবা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এবার পর্যটকদের আসার বিষয়ে তেমন আশাবাদী নন।

কক্সবাজার হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ মালিক সমিতির সম্পাদক সেলিম নওয়াজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তবে আশা করা যায়, আগামী দিনগুলোয় বৃষ্টি কম হলে অনেক পর্যটক আসবেন।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সমিতির সঙ্গে প্রায় ৪৫০টি হোটেলে জড়িত। একসঙ্গে প্রায় ৮৫ হাজার অতিথিকে সেবা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। তবে এখনো পর্যন্ত মাত্র ৩০ শতাংশ বুকিং পেয়েছি।'

তবে এ বিষয়ে সঠিক হিসাব না থাকলেও এ কথা অনেকটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে, গত বছরের ঈদুল আজহার ছুটির তুলনায় এবারের ছুটিতে পর্যটকের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হবে।

তার মতে, ২৯ জুন ঈদের পর প্রায় ৫০ হাজার পর্যটক কক্সবাজারে আসতে পারেন।

কক্সবাজার রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঝাউবন রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ আলী ডেইলি স্টারকে জানান, এবারের ঈদুল আজহায় পর্যটক কম হবে বলে মনে করছেন তারা।

তিনি আরও জানান, কোরবানির পশু কেনায় ব্যস্ত থাকার কারণে তিনি নিজেই গত রোববার তার রেস্টুরেন্ট বন্ধ রেখেছিলেন।

তার মতে, পর্যটকদের সংখ্যা কম হবে কারণ তারাও কোরবানি নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন।

গতকাল সোমবার কলাতলী সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সেখান পর্যটকের সংখ্যা কম।

অর্থনৈতিক সংকট ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঈদুল আজহার বন্ধে কক্সবাজারে পর্যটকের সংখ্যা কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ছবি: মোকাম্মেল শুভ/স্টার

সৈকতে ঘোরাঘুরির জন্য ঘোড়া ভাড়া দেওয়া মোহাম্মদ আরিফ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পর্যটকের অভাবে প্রতিদিন ৬০০ টাকাও আয় করতে পারছি না।'

'পর্যটকের সংখ্যা কম হওয়ায় ঘোড়ার খাওয়ানোর মতো টাকাও আয় করতে পারিনি,' যোগ করেন তিনি।

তবে তার আশা, ঈদুল আজহার একদিন পর থেকে পর্যটক আসতে শুরু করবে। যখন তার আয় দৈনিক ৩ হাজার টাকায় পৌঁছাবে।

পর্যটকদের জন্য জেট স্কি ভাড়া দেওয়া ইমন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আশা করছি, ঈদের পরের সপ্তাহে দৈনিক আয় ২৫ হাজার টাকার মতো হবে।'

সাগর সৈকতে পর্যটকদের ছবি তোলেন সুরত আলম। তিনিও একই আশা করে বলেন, 'ঈদের পর অফ-পিক মৌসুমে পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে।'

কক্সবাজার বাস কাউন্টার মালিক-ব্যবস্থাপক সমিতির সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানান, কক্সবাজারগামী বাসের অর্ধেকের বেশি টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। পর্যটকদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য ঈদের পর ট্রিপের সংখ্যা বাড়াবে বাস কোম্পানিগুলো।

কক্সবাজারে প্রায় ৫০টি বাস কোম্পানি আছে। প্রতিদিন প্রত্যেক কোম্পানির গড়ে ১০টি করে বাস এই অঞ্চলে চলাচল করে।

একই অবস্থা দেশের অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতেও।

রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালির সুইলুই রিসোর্ট ও রাঙ্গামাটিতে হাউসবোট 'আরক দ কাপ্তাই'র ম্যানেজিং পার্টনার মির্জা মুসফিকুর সালাহিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ঈদুল আজহার ছুটির তুলনায় এ বছর বুকিং কমেছে। সামগ্রিক বুকিং আগের বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম।'

তিনি আরও বলেন, 'সাধারণত ঈদের ছুটির পর পুরো সপ্তাহ আমাদের রুমগুলো বুকড হয়ে থাকে। এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। অর্থনৈতিক সংকট এর প্রধান কারণ বলে মনে হচ্ছে।'

মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে বলে মনে করেন সালাহিন।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকে। ফলে ঈদের এই ছুটিতে দ্বীপটিতে যেতে পারবেন না পর্যটকরা।

Comments

The Daily Star  | English

Further uncertainty over Rooppur plant launch

The construction work for the transmission line through the Padma and Jamuna rivers for the Rooppur nuclear power plant has come to a grinding halt with the ouster of the Awami League government as the Indian contractor has left the site.

7h ago