বৈরী আবহাওয়ায় চামড়ার মান নষ্টের আশঙ্কায় বরিশালের ব্যবসায়ীরা

কোরবানি, কোরবানির চামড়া, ঈদ, কাঁচা চামড়া,
ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এবার বৃষ্টি থাকায় চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ বাধাগ্রস্ত হবে। ছবি: টিটু দাস

বৈরী আবহাওয়ার কারণে কোরবানির চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন বরিশালের ব্যবসায়ীরা।

বরিশাল বিভাগীয় কাচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা জানান, এবার প্রতি পিস চামড়া ৫০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গতবার স্থানীয় পর্যায়ে ৩৫০ টাকা দামে চামড়া কিনলেও তারা এবার ৪৫০ টাকা হারে কিনেছেন। কোনো কোনো চামড়া আরও বেশি দামে কিনেছেন। তবে, এবার বৃষ্টি থাকায় চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ বাধাগ্রস্ত হবে। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে আসায় চামড়ার মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

বরিশালের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে। তবে, আগের বছরের চেয়ে এবার অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধিতে চামড়া বিক্রেতারা খুশি।

বরিশালের পাইকারি চামড়ার হাট পদ্মাবতী ও পোর্ট রোড এলাকায় দেখা গেছে, ব্যাটারিচালিত গাড়ি ও রিকশায় ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে যাচ্ছেন। অন্য বছর দুপুর ২টা থেকে চামড়া এলেও এবার বৃষ্টির কারণে ৩ ঘণ্টা পর বাজারে চামড়া আসতে শুরু করে।

বৈরী আবহাওয়ায় চামড়ার মান নষ্টের আশঙ্কায় বরিশালের ব্যবসায়ীরা
দূর-দূরান্ত থেকে আসায় চামড়ার মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ছবি: টিটু দাস

পোর্ট রোড এলাকার পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ী নাসির হাওলাদার বলেন, তারা ছোট বড় মিলিয়ে প্রতি পিস চামড়া ৫৫০ টাকা করে কিনছিলেন। কিন্তু, চামড়ার মান খারাপ থাকায় ৪৫০ টাকা করে কিনেছি।

তিনি বলেন, 'অনেক দূর-দূরান্ত থেকে চামড়া আসায় মান অনেকটা খারাপ হয়ে গেছে। তাই এগুলো থেকে ভালো দাম পাওয়া যাবে না। চামড়ায় লবণ দিতে ১০০ শ্রমিক নিয়েছি।'

চামড়ার হাট ঘুরে দেখা গেছে, বর্গফুটে নয় চামড়া বড়, মাঝারি ও ছোট এভাবে কেনাবেচা হচ্ছে। সবচেয়ে বড়ো চামড়া (২৫-৩০ বর্গফুট) ৫৫০-৬৫০ টাকা, মাঝারি (২০-২৫ বর্গ ফুট) ৪০০-৫০০ টাকা ও ছোট (২০ বর্গফুটের নীচে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর বিভাগীয় কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাচ্চু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ৫ হাজার পিস চামড়া কিনেছি। বড় চামড়া প্রতি পিস ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে কিনেছি। কাঁচা চামড়ায় লবণ দিয়ে বড় সাইজের চামড়া ৮৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে যায়। সে হিসাবে দাম ঠিক আছে।'

দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন চামড়া বিক্রেতারা। তাদের দাবি, প্রতি বর্গফুটে দাম ৩ টাকা বাড়লেও সরকার নির্ধারিত দাম পাননি তারা। তবে, তারা স্বীকার করেছেন, গতবারের চেয়ে প্রতি পিস চামড়া ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত বেশি পেয়েছেন।

বৈরী আবহাওয়ায় চামড়ার মান নষ্টের আশঙ্কায় বরিশালের ব্যবসায়ীরা
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে। ছবিটি বরিশাল থেকে তুলেছেন টিটু দাস।

সদর উপজেলার সাহেবের হাটের মাদ্রাসা থেকে ৩০০ পিস গরুর চামড়া আনা ওয়াক্কাস ভালো দাম না পেয়ে ট্রাক নিয়ে ফেরত যান।

তিনি বলেন, 'দেড় লাখ টাকার গরুর চামড়া কেউ ৪৫০ টাকার বেশি দাম বলছে না। এরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। আমরা কাঁচা চামড়া নিয়ে বিপদে পড়েছি। ফলে, পাইকার ব্যবসায়ীরা যা বলে তা দিতে বাধ্য হই।'

আরেক মৌসুমি ব্যবসায়ী নিমাই জানান, তিনি ৫টা বড় চামড়া ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছেন।

প্রাণীসম্পদ বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. আবদুস সবুর বলেন, 'বরিশাল বিভাগে এবার ২.১২ লাখের বেশি গরু ও ১.৯০ লাখের বেশি ছাগল, ২০ হাজার ভেড়া ও ৩ হাজার মহিষ কোরবানি হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Cops get whole set of new uniforms

The rules were published through a gazette yesterday, repealing the previous dress code of 2004

2h ago