তাজা ফল আমদানি কমেছে

ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমে যাওয়া ও উচ্চ আমদানি শুল্কের কারণে খরচ বেড়ে যাওয়ায় কমেছে গ্রাহক চাহিদা। তাই চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে তাজা ফল আমদানি কমেছে।
এমন পরিস্থিতিতে তাজা ফল—যেমন আপেল, কমলা, আঙুর, ডালিম ও নাশপাতির দাম কমাতে শুল্ক ও কর কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)।
দেশে ডলার ঘাটতি দেখা দেওয়ায় আমদানি খরচ কমানো ও আর্থিক সংকট মোকাবিলায় কম প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
সে হিসেবে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে দেশে ১২৮ দশমিক ৫১ মিলিয়ন ডলারের তাজা ফল আমদানি হয়েছে। গত তিন বছরের মধ্যে তা সর্বনিম্ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তাজা ফল আমদানিতে এলসি তিন দশমিক ২৯ শতাংশ কমে ১৪০ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।
বিটিটিসির ভাষ্য, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া এবং উচ্চতর শুল্ক ও কর আমদানি করা তাজা ফলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে, ফলের দামের এই বোঝা পড়েছে ক্রেতাদের ওপর।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ৮৬ টাকার ফল আমদানিতে ১২০ টাকা কর দিতে হয়। উচ্চ শুল্ক চোরাচালান বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বৈধ আমদানি কমিয়ে দেবে।
আরও বলা হয়—আমদানি কমলে শুধু ক্রেতারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, সরকারের রাজস্বও কমবে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানকে এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, আমদানির পর তাজা ফল প্রক্রিয়াজাত বা মূল্য সংযোজন হয়।
তাই স্থানীয় পর্যায়ে পাঁচ শতাংশ অগ্রিম ভ্যাটসহ অগ্রিম কর আরোপ করা উচিত না।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তাজা ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে। ট্যারিফ কমিশন এখন তা আগের হারে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব করেছে।
এ ছাড়াও, তাজা ফল আমদানিতে অগ্রিম কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে দুই শতাংশ করা ও ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রক শুল্ক যৌক্তিক করার সুপারিশ করেছে বিটিটিসি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে আপেল আমদানি কমে ৫১ শতাংশ, কমলা আমদানি কমে ৭০ শতাংশ ও আঙুর আমদানি কমে ২৯ শতাংশ হয়েছে।
জানুয়ারিতে সম্পূরক শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমলা আমদানি কমেছে ৫১ শতাংশ, আঙুর ২১ শতাংশ, আপেল সাড়ে তিন শতাংশ, নাশপাতি ৪৫ শতাংশ এবং ডালিম ও ড্রাগন আমদানি কমেছে ৩২ শতাংশ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদেশি ফল আমদানিতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১১৭ টাকা বিবেচনায় এর পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। জাহাজীকরণ, বিমা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মোট খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। এ আমদানিতে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে পাঁচ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।
Comments